
চলছে তিস্তা সেচ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ। ছবি: জনকণ্ঠ
নীলফামারীর সৈয়দপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় তিস্তা সেচ প্রকল্প কমান্ড এলাকার সম্প্রসারণ ও পুনর্বাসনের কাজ শেষের পথে। এটি বাস্তবান হলে অর্থনৈতিক উন্নয়নে বদলে যাবে এ অঞ্চলের মানুষের জীবনমান। সেচ ক্যানেলের আওতায় প্রায় ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ ব্যবস্থায় প্রতি বছর উৎপাদন বাড়বে ৪ লাখ টন খাদ্যশস্য।
জানা যায়, তিস্তা নদীর ব্যারাজ এলাকা থেকে সেচের খাল নীলফামারী, দিনাজপুর, রংপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলা দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এর মধ্যে সৈয়দপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় ৩৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৬০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের খাল পূনর্বাসন, ৭২ কিলোমিটারে সেচ পাইপ, ১০.৮ কিলোমিটারে পাড় রক্ষায় কংক্রিটের ব্লক ও ৭.১৩ কিলোমিটার বাইপাস সেচখাল নির্মাণ, টেকসই উন্নয়ন ৩টি সেতু, গ্রামীণ রাস্তাসমূহে প্রয়োজনীয় কালভার্ট, পরিদর্শন সড়ক, ছোট নদী বা খালে সুইচগেট নির্মাণের মাধ্যমে তিস্তা নদীর পানি সংরক্ষণের পর শুস্ক মৌসুমে সেচ পানির সরবরাহ করা যাবে।
পাশাপাশি সেচ খালগুলোর ধারে প্রয়োজনীয় বৃক্ষরোপণে সুসজ্জিত ও শক্তিশালী হবে এর পাড়। যা ২০২১ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ ডিসেম্বরে এ প্রকল্প শেষ হবে। ইতিমধ্যে প্রায় ৭০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বরাদ্দ সময়ের মধ্যে বাকি কাজ শেষ হবে বলে জানান সৈয়দপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা।
এতে সেচ ক্যানেলের আওতায় প্রায় ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ ব্যবস্থায় প্রতি বছর উৎপাদন বাড়বে ৪ লাখ টন খাদ্যশস্য। জমির উর্বরতা, ভূগর্ভস্থ পানির লেয়ার বৃদ্ধিসহ রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমে আসা এবং ক্যানেলের সেচ পানি ব্যবহারে কৃষকদের সাশ্রয় হবে প্রায় ৪১ কোটি ৪০ লাখ টাকা। ফলে সামগ্রিকভাবে জলজ ইকোসিস্টেমের প্রভূত উন্নতি ঘটায় পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষাসহ ক্যানেল সংলগ্ন এলাকাবাসীর আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নতি হবে।
সরেজমিন দেখা যায়, প্রধান খাল, এর ধার রক্ষায় কংক্রিটের ব্লক, বাইপাস সেচখাল, টেকসই উন্নয়ন সেতু, গ্রামীন রাস্তাসমূহে কালভার্ট, পরিদর্শন সড়ক ও সুইচগেট নির্মাণের কাজ পাউবোর নিবিড় পর্যবেক্ষণে শেষের পথে।
তিস্তা কমান্ড এলাকার কৃষকরা জানান, বিএনপি সরকার আমলে তিস্তা সেচ প্রকল্প চালু হলেও কৃষকরা কোন উপকার পায়নি। বর্তমান সরকার কৃষকদের স্বার্থে পুনরায় খালগুলো নির্মাণ করায় এখন সেচ পানি পাওয়া যাবে। অথচ এ সেচ পানির জন্য কষ্টের সিমা থাকত না। টাকাও ব্যায় হত। পানির জন্য থাকত র্দীঘ লাইন।
বগুড়া খাল সংলগ্ন আ: আউয়াল (৬৪) নামে এক কৃষক জানান, ভাতার মারি পাথারের দোলাতে দেড়শত একর জমি। নলকুপের পানিতে চাষাবাদ হয়। এর সাথে তিস্তা খাল থাকলেও অগভীর হওয়ায় সেচ সেচ পাওয়া যেত না। এখন খালটি ১০ ফুট গভীর করায় পানি প্রবাহ আছে। তাই শুকনা মৌসুমে কোন সমস্যা হবে না।
সৈয়দপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: মেহেদী হাসান বলেন, নিবিড় পরিদর্শনের মাধ্যমে বরাদ্দ সময়ের মধ্যে প্রকল্পটি দৃশ্যমান হতে চলেছে। এতে মাটির উর্বতা শক্তি বৃদ্ধি ও কৃষি বেষ্টিত জনমানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটবে।
এসআর