ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৬ জুন ২০২৫, ১২ আষাঢ় ১৪৩২

রাজশাহীতে জমজমাট পশুর হাট

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী

প্রকাশিত: ২২:২৮, ২৬ জুন ২০২৩

রাজশাহীতে জমজমাট পশুর হাট

সাগরিকায় পশুর হাটে প্রচুর গর

কোরবানির পশুতে ভরপুর এখন সব হাট। বিশেষ করে উত্তরের সবচেয়ে বড় রাজশাহী সিটি হাট ভরেছে কোরবানির পশুতে। বিক্রিও হচ্ছে জমজমাট। তবে দাম চড়া।  শেষ মুহূর্ত হওয়ায় কোরবানিদাতারা বাধ্য হয়েই বেশি দামে পছন্দের গরু-ছাগল কিনছেন। সোমবার সকালে রাজশাহীর পশুরহাটে মানুষের স্রোত নামে। উত্তরাঞ্চলের সর্ববৃহৎ সিটি হাটে এদিন তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। শুধু সিটি হাট নয়, জেলায় সব হাটেই পর্যাপ্ত গরু-ছাগলে ভরে উঠেছে। কেনাবেচাও ভালো হচ্ছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
ক্রেতারা বলছেন, সময় খুবই কম। তাই কোরবানির জন্য পছন্দের পশুটি কিনতে এখন বেশিরভাগ মানুষই হাটে ছুটছেন। তবে যাদের কোরবানির পশু রাখার জায়গা নেই তারা এখনো রয়েছেন শেষদিনের অপেক্ষায়।  
রাজশাহী সিটি হাটে গিয়ে দেখা যায়, একদিকে যেমন দর-দাম চলছে অন্যদিকে তেমন পশু কেনাবেচাও চলছে। তবে বাজারে মাংসের দাম আকাশচুম্বী হওয়ায় কোরবানির পশুর দামও প্রায় দ্বিগুণ। খামারি ও ব্যবসায়ীরা মাংসের দামের কেজি হিসেবে পশুর দাম নির্ধারণ করছেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তার চেয়েও বেশি দাম হাঁকছেন। আর দাম বেশি হওয়ায় কম বাজেটে কোরবানির পশু কিনতে গিয়ে সাধারণ মানুষ হিমশিম খাচ্ছেন। অনেকেই সাধ ও সাধ্যের সমন্বয় ঘটাতে ব্যর্থ হয়ে খালি হাতেই ফিরছেন বাড়ি।
রাজশাহী সিটি হাটের ইজারাদার ফারুক হোসেন ডাবলু বলেন, এবার নানা কারণেই কোরবানির পশুর দাম বেশি। সীমান্তও বন্ধ। হাটে ভারতীয় গরু নেই। তাদের হাটে দেশী জাতের গরুতেই ভরপুর।
 
নারায়ণগঞ্জে জমে উঠেছে কেনাবেচা
স্টাফ রিপোর্টার নারায়ণগঞ্জ থেকে জানান, ঈদুল আজহা উপলক্ষে অস্থায়ী হাটগুলোতে কোরবানির পশু বিক্রি বেশ জমে উঠেছে। দিনরাত চলছে কোরবানি পশু কেনাবেচা। ইতোমধ্যে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনসহ জেলার বিভিন্ন হাটে এবার নাটোর, সিরাজগঞ্জ, ফরিদপুর, বগুড়া, রাজশাহী, রংপুরসহ বিভিন্ন জেলা থেকে প্রচুর  পশু ওঠানো হয়েছে। হাটগুলোতে নিরাপত্তায় রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। সোমবার দুপুরে সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন হাটে সরেজমিন পশু কেনাবেচা করতে দেখা গেছে। জানা যায়, এবার সিটি কর্পোরেশনের ১৭টি, সদর উপজেলায় ১১টি, বন্দর উপজেলায় ৪টি ও সোনারগাঁ উপজেলায় ১৭টিসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় অস্থায়ী কোরবানি পশুর হাট বসেছে। 

পিরোজপুরে এখনো জমেনি
নিজস্ব সংবাদদাতা পিরোজপুর থেকে জানান, এখনো সেভাবে জমে ওঠেনি কোরবানির পশুর হাট। প্রতিবছর কোরবানি এলেই বলেশ^র নদ সংলগ্ন সি আই পাড়া বালুর মাঠে বসে গরুর হাট। হাট ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বড় ও মাঝারি ধরনের গরু এসেছে। তবে ক্রেতার সংখ্যা ছিল খুবই কম। বেশিরভাগ ছিল দর্শনার্থী ও কিশোর বয়সের ছেলেদের আনাগোনা। হাটে ছোট, বড় ও মাঝারি আকার ভেদে প্রতিটি গরুর মূল্য সর্বনিম্ন ৩০ হাজার থেকে ৩ লাখ টাকা। তবে গত বছরের তুলনায় এবার গরুর দাম অনেক বেশি বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। আর বিক্রেতারা বলছেন, গোখাদ্যের দাম বাড়ায় এবং পশু স্বল্পতার কারণে দাম বেশি। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. তরুন কুমার সিকদার বলেন, এ বছর জেলায় ৩৩ হাজার ৫০০টি পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত আছে। 

বাগেরহাটে দাম নাগালের মধ্যে
স্টাফ রিপোর্টার বাগেরহাট থেকে জানান, জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট। এ জেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় অর্ধশত পশুর হাট বসেছে।  পদ্মা সেতুর কারণে সহজ যাতায়াতের ফলে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ক্রেতা-বিক্রেতা এখানে আসছেন। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রোদ-বৃষ্টির মধ্যেই অধিকাংশ হাটে পশু বেচাকেনা চলছে। এবার জেলায় দেশীয় পদ্ধতিতে ১ লাখ ২ হাজার  কোরবানির পশু প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন। সরেজমিনে জেলার সর্ববৃহৎ বেতাগা পশুরহাটে বিপুল পরিমাণে দেশী জাতের পশুতে বিশাল হাট পরিপূর্ণ দেখা গেছে। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, এ বছর জেলায় ৮ হাজার খামারে এক লাখ দুই হাজার পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে, যা চাহিদার তুলনায় বেশি।

সিলেটে দাম বেশি
স্টাফ রিপোর্টার সিলেট অফিস থেকে জানান, ঈদের মাত্র দুদিন বাকি। সিলেট  নগরীর পশুর হাটগুলোতে গরুর আমদানি কম।  পাশপাশি দাম অনেক বেশি।  বড় গরুর চেয়ে ছোট ও মাঝারি গরুর চাহিদা  বেশি।  ছোটবড়  সব ধরনের গরুর দাম অনেক চড়া। তাই কোরবানির গরু ক্রয় করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ক্রেতাকে। গরুর দাম বেশি হওয়ায় বাজারে কেনাবেচাও অনেকটা কম হচ্ছে। ক্রেতা জানান, গত বছর যে কোরবানির গরুর দাম ছিল ৫০ থেকে ৫৫ হাজার এ বছর এই গরুর দাম ৭০ থেকে ৭৫ হাজার টাকা। ৭০ হাজার টাকার গরু এবার একলাখ টাকা।

ঠাকুরগাঁওয়ে দালালের দৌরাত্ম্য
নিজস্ব সংবাদদাতা ঠাকুরগাঁও থেকে জানান, কোরবানির পশুরহাটগুলো জমে উঠেছে। প্রতিটি হাট- বাজারে প্রচুর পরিমাণে গরু আমদানি হচ্ছে এবং বিক্রিও বেশ জমে উঠেছে। তবে এখন পর্যন্ত হাট-বাজারে ভারতীয় গরু দেখা না গেলেও গরু কেনাবেচায় দালাল বা ফড়িয়াদের দৌরাত্ম্যের কারণে ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়েই ঠকছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ক্রেতাদের অভিযোগ দাম বেশি আর বিক্রেতাদের অভিযোগ তেমন দাম মিলছে না। আশানুরূপ দাম না পেয়ে নাখোশ বড় আকারের গরুর মালিকরা। কোরবানির ঈদ উপলেক্ষে ঠাকুরগাঁওয়ের পাঁচটি উপজেলায় নিয়মিত ও মৌসুমিসহ  প্রায় ৩০ টি হাটে প্রচুর পরিমাণে দেশী-বিদেশী, ছোট-বড় গরু আমদানি ও বেচাকেনা হচ্ছে। বালিয়াডাঙ্গী থানার সাব-ইনস্পেক্টর আশরাফুল আলম বলেন, দুর্বৃত্তরা যাতে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করতে না পারে সেজন্য প্রতিহাটে পুলিশ তৎপর রয়েছে।

ফেনীতে ১২৮ পশুর হাট 
নিজস্ব সংবাদদাতা ফেনী থেকে জানান,  ফেনীতে জমে উঠেছে কোরবানি পশুরহাট। জেলার ৬ উপজেলায় স্থায়ী-অস্থায়ী মিলিয়ে ১২৮টি পশুরহাটে প্রতিদিন পশু কেনাবেচা চলছে। হাটে ক্রেতা-বিক্রেতার নিরাপত্তা নিশ্চিতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে পুলিশ প্রশাসন। জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ফেনীতে কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে ৯০ হাজার। এর বিপরীতে জেলার বিভিন্ন খামারি ও প্রান্তিক পশু পালনকারীদের কাছে ১ লাখের বেশি পশুর যোগান রয়েছে। 

বান্দরবানে আকাশছোঁয়া দাম
সংবাদদাতা বান্দরবান থেকে জানান, কোরবানির পশুরহাটগুলো জমে উঠেছে। তবে দাম বেশি হওয়ায় বেচাকেনা কম হচ্ছে। সামনের বাজারগুলোতে দাম কমতে পারে বলে ধারণা ক্রেতাদের। ক্রেতাদের সঙ্গে আলাপে জানা যায়, সকাল থেকে গরুর বাজার ঘুরেও গরু কিনতে পারছেন না। দাম শুনেই অনেক সরে যাচ্ছেন গরুর সামনে থেকে। কিছু কিছু গরু বিক্রিহলেও তা চড়া দমে কিছেন স্থানীয় বিত্তশালীরা। সাধারণ ক্রেতা গরু কিনতে পারছেন না বাজেট স্বল্পতার কারণে। বান্দরবান শহরের গরুর বাজারগুলো ঘুরে দেখা গেছে, গরুর দাম তুলনামূলক গত বছরের চেয়ে দ্বিগুণের কাছাকাছি। তাই আশানুরূপ বেচাকেনা হচ্ছে না। বিক্রেতারা ক্রেতার জন্য অপেক্ষা করছেন। অপরদিকে, ক্রেতারা দাম শুনেই সরে যাচ্ছেন।

চট্টগ্রামে হাটে সিসি ক্যামেরা ও ড্রোন
স্টাফ রিপোর্টার চট্টগ্রাম অফিস থেকে জানান, ক্রেতা-বিক্রেতাদের নিরাপত্তা বিধান এবং পশুরহাটকেন্দ্রিক অপরাধ ঠেকাতে বন্দরনগরীর সকল গরুর বাজারে সিসি ক্যামেরা ও ড্রোন দ্বারা সর্বক্ষণিক তদারকি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়। সোমবার চান্দগাঁও থানাধীন নূর নগর হাউজিং ও কর্ণফুলী থানাধীন মইজ্জারটেক গরুরহাট পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন। সিএমপির গৃহীত নিরাপত্তা ব্যবস্থার বিভিন্ন দিক তুলে ধরে নগর পুলিশ প্রধান বলেন, জাল টাকা শনাক্তে গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে।

×