ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১১ মে ২০২৫, ২৮ বৈশাখ ১৪৩২

গ্রীষ্মের সবজি সীতালাউ 

নিজস্ব সংবাদদাতা, ভালুকা ময়মনসিংহ

প্রকাশিত: ২২:১৭, ২১ জুন ২০২৩

গ্রীষ্মের সবজি সীতালাউ 

সবজি খেতে সীতালাউয়ের ফুল

বাংলাদেশের স্বল্প পরিচিত ফসলের মধ্যে অন্যতম। সিলেট, চট্টগ্রামসহ এ দেশের দক্ষিণ-পূর্ব পার্বত্য এলাকায় স্বল্প পরিসরে এর চাষ হয়ে থাকে। লতানো গাছ হয় এবং বেগুনের মতো ব্যবহার করা হয় বলে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় এটিকে লতা বেগুন বলা হয়। পুষ্টিকর এ সবজিটির চাষাবাদ সমপ্রসারিত হলে গ্রীষ্মকালে সবজির চাহিদা ও পুষ্টির অভাব কমানো সম্ভব।
সীতালাউয়ের ইংরেজি নাম Giant grandilla এবং বৈজ্ঞানিক নাম Passiflora quadrangularis এটি প্যাসন ফলের সমগোত্রীয় অর্থাৎ Passifloraceae পরিবারের অন্তর্গত উদ্ভিদ।
সীতালাউ একটি দীর্ঘজীবী লতানো উদ্ভিদ। এটির ফুল সাদা বা বেগুনী বর্ণের। ফলত্বক হালকা সবুজ ও মসৃণ। ফলত্বক ২-৩ সেমি. পুরু, শাঁস সাদাটে, ফলের ফাঁপা অভ্যন্তর ভাগ অনেক সাদাটে ও রসালো সূক্ষ্ম আঁশযুক্ত খোসায় আবৃত বীজ দ্বারা পরিপূর্ণ থাকে। পাকা ফলের রস সুঘ্রাণযুক্ত এবং শরবতে ব্যবহার করা যায়। শক্তিশালী আকর্ষী থাকায় এ উদ্ভিদটি অনেক উঁচু গাছে আরোহণ করতে পারে এবং টিকে থাকতে পারে।
চারা লাগানোর ৪-৬ মাসের মধ্যে গাছে ফুল আসে এবং ফুল ফোটার ২৫-৩৫ দিনের মধ্যে ফলের ওজন ৪০০-৮০০ গ্রাম হয়ে যায় এবং এ অবস্থায় এটা সবজি হিসেবে ব্যবহার উপযোগী হয়। পাকা ফল সংগ্রহের জন্য আরও ২ মাস অপেক্ষা করতে হয়। সারা বছর সীতালাউয়ের ফল ধরে এবং ২-৩ বছরের একটি গাছ থেকে বছরে ১৬-৫০টি পর্যন্ত ফল পাওয়া যেতে পারে। কচি অবস্থায় ফলাত্বকসহ পুরো ফলটিই সবজি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এর স্বাদ অনেকটা চালকুমড়ার কাছাকাছি তবে একটু মিষ্টি ভাব থাকে। কচি সীতালাউ কুচি করে কেটে ভাজি হিসেবে বা মিশ্র সবজিতে এবং তরকারিতে ব্যবহার করা যায়।

পাকা ফলের রসপূর্ণ থলে বা লোম থাকে। এগুলো দিয়ে তৈরি শরবত অতি চমৎকার। পাকা ফলের খোসা ছাড়িয়ে টুকরা করে কেটে তা পেঁপে, আনারস বা কলার সাথে চমৎকার মিশ্র ফল ও ডেজার্ট হিসেবে খাওয়া যায়। এ ফলের গন্ধ কম থাকায় ক্যান এবং সিরাপ হিসেবে চিনি সহযোগে খাওয়া হয়। গরম পানি এবং ব্রান্ডি সহযোগে প্রস্তুতকৃত এর সিরাপ ৯-১২ মাস পর্যন্ত সংরক্ষণ করে ব্যবহার করা যায়।

×