ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

ফেনীতে বহুরূপী তিন নদী, বিপাকে কৃষক

নিজস্ব সংবাদদাতা, ফেনী

প্রকাশিত: ২১:১৩, ১০ মে ২০২৩

ফেনীতে বহুরূপী তিন নদী, বিপাকে কৃষক

ফেনী নদীর পানি শুকিয়ে বোরো আবাদ ব্যাহত

বর্ষায় উজানের পানিতে বন্যা আর গ্রীষ্মে ধানের মৌসুমে মাঠ ফেটে একাকার। এমন করুণ দশা  মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর। চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে এ নদীগুলোর ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া পানি শুকিয়ে নদী যেন কাঠ। ফলে ব্যাহত হচ্ছে অন্তত ১২ হাজার হেক্টর জমির বোরোর আবাদ। এ পানি শূন্যতার কারণে প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষক ও সাধারণ মানুষের মধ্যে বিরাজ করছে হতাশা। পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতিকে দুষছেন কৃষকরা।
ফেনীর পরশুরাম ও ফুলগাজী উপজেলার মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর পানি শুকিয়ে গেছে। ফুলগাজী উপজেলার গোসাইপুর দক্ষিণপাড় এলাকার ওপর দিয়ে বয়ে গেছে সিলোনিয়া নদী।

অপরদিকে একই উপজেলার দেড়পাড়া গ্রাম থেকে পরশুরাম পর্যন্ত বয়ে গেছে মুহুরী নদী। পানি শুকিয়ে এসব এলাকা এখন চৌচির। শুষ্ক মৌসুমে নদীর পানি দিয়ে দুই উপজেলার ১২ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ। যার উৎপাদিত ফসল সারা বছর জোগান দেয় তাদের খাদ্যের। সে সব জমির সেচ সংকটে দিশেহারা দুই উপজেলার ৩০ হাজার কৃষক। বর্ষাকালে সামান্য বৃষ্টিতেই নদীর পানি উপচিয়ে আশপাশের এলাকায় বন্যা হয়ে ভাসিয়ে নিয়ে যায় মাছের ঘের, ফসলি জমি, আর বাসস্থান। স্থানীয়দের অভিযোগ সংকট সমাধানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নেই কোনো প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ।

স্থানীয় কৃষক সুলতান, মোস্তফা, কামাল, বসির ও মোজাম্মেলের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ নদীর পানিতে শত শত কৃষক ফসল ফলিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে, তেমনি বর্ষা মৌসুমে ক্ষতিরও মুখোমুখি হতে হয়। ডিসেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত শুষ্ক মৌসুমে বিভিন্ন স্থানে এই নদীর তলদেশ উঁচু-নিচু থাকার ফলে পানি বণ্টনও সমভাবে হয় না। তাই অনেক এলাকায় কৃষি উৎপাদন হয়নি। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর অতিরিক্ত উপ-পরিচালক পুষপেন্দু বড়ুয়া বলেন, এদিকে নদীর প্রশস্ততা ও নাব্য বাড়ানো গেলে পানির ধারণ ক্ষমতা বাড়বে ফলে শুষ্ক মৌসুমে পানি শূন্যতায় রোধ হওয়ার পাশাপাশি বর্ষা মৌসুমে উজানের পাহাড়ি ঢলে আকস্মিক বন্যা হতে রক্ষা পাবে এলাকাবাসী।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী আরফিুর রহমান ভূঁইয়া জানান, নদীগুলো মরা খালের মতো হয়ে যাওয়ায় দু’পাশের প্রশস্ততা ও গভীরতা কমে গিছে। দীর্ঘদিন নদী গুলি খনন না হওয়ায় পানি শূন্যতা দেখা দিয়েছে। তবে ৭৩১ কোটি টাকার একটি মেঘা প্রকল্প পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে জমা আছে। একনেকে পাশ হলেই এসব সমস্যার সমাধান হবে।

×