ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

ময়মনসিংহ-১০

আওয়ামী লীগের শক্ত অবস্থান কোন্দলে জর্জরিত বিএনপি

বাবুল হোসেন, ময়মনসিংহ / শেখ আব্দুল আওয়াল গফরগাঁও

প্রকাশিত: ০০:২৪, ১৬ মার্চ ২০২৩

আওয়ামী লীগের শক্ত অবস্থান কোন্দলে জর্জরিত বিএনপি

ময়মনসিংহ জেলার আওয়ামী লীগের শক্তিশালী এক দুর্গের নাম গফরগাঁও

ময়মনসিংহ জেলার আওয়ামী লীগের শক্তিশালী এক দুর্গের নাম গফরগাঁও। ময়মনসিংহ-১০ গফরগাঁও আসনটি বরাবরই আওয়ামী লীগের শক্ত ঘাঁটি। আওয়ামী লীগের নিশ্চিত আসন হিসেবেই গফরগাঁও পরিচিত। বিগত ২০০১ সালের নির্বাচনে সারাদেশে যখন বিএনপি-জামায়াত জোটের জয়-জয়কার, তখন ময়মনসিংহের যে ক’টি আসনে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয় তার অন্যতম এই গফরগাঁও আসন। স্বাধীনতার পর এই আসনে বিএনপির প্রার্থী একবার ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী দুইবার এবং আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাতবার বিজয়ী হন। 
গত ১৯৯১ সালের পর থেকে টানা ছয়বার এই আসনটি আওয়ামী লীগ নিজেদের দখলে রাখতে সক্ষম হয়। এর মধ্যে প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা আলতাফ হোসেন গোলন্দাজ টানা তিনবার ও তার পুত্র ফাহমি গোলন্দাজ বাবেল টানা দুইবার এই আসনে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। ফলে টানা দুই দশক ধরে এই আসনে আওয়ামী লীগের একটি শক্তিশালী ও মজবুত ভিত তৈরি হয়েছে। গোলন্দাজ পরিবারের একক নেতৃত্বে গফরগাঁও আওয়ামী লীগ এ সময় ঐক্যবদ্ধ ও সংগঠিত হয়ে নৌকার বিজয় ধরে রাখতে সক্ষম হয়। আগামী নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের তাদের বিজয়ের ধারা ধরে রাখতে চায়। অন্যদিকে কোন্দল ও বিভক্তিতে জর্জড়িত বিএনপি চাইছে আগামী নির্বাচনে ঘুরে দাঁড়াতে এবং আসনটি পুনরুদ্ধার করতে।
আসনটির উপজেলা থেকে শুরু করে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড প্রতিটি পর্যায়ে আওয়ামী লীগ এখন ঐক্যবদ্ধ ও শক্ত অবস্থানে রয়েছে। আগামী নির্বাচনে এই আসনে একাধিক প্রার্থীর নাম শোনা গেলেও প্রয়াত আলতাফ হোসেন গোলন্দাজের পুত্র বর্তমান সংসদ সদস্য ফাহমি গোলন্দাজ বাবেলই চূড়ান্ত বলে মনে করছেন দলের নেতাকর্মীরা। টানা দুই মেয়াদে ফাহমি গোলন্দাজ বাবেল গফরগাঁওকে উন্নয়নের মহাসড়কের সঙ্গে যুক্ত করে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন।

তার মেয়াদে এলাকার সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা, ব্রিজ ও কালভার্ট, বিদ্যুতের উন্নয়নসহ স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার ভৌত অবকাঠামোর ব্যাপক উন্নয়ন দৃশ্যমান। দলের স্থানীয় নেতা কর্মীদের মতে, উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছে এককালের সন্ত্রাসের জনপদ বলে খ্যাত গফরগাঁও। তাদের মতে, আগামী নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত এই আসনে। 
নানা কান্ডে সারাদেশের মানুষ গফরগাঁওকে চেনে এক নামে। ১টি পৌরসভা, ১৫টি ইউনিয়ন ও ২টি আলাদা থানা এলাকা নিয়ে গঠিত ময়মনসিংহ-১০ গফরগাঁও আসন। এই আসনে মোট ভোটারের সংখ্যা ৪ লাখ ১৩ হাজার ১৭৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ১৩ হাজার ৪৪ জন এবং নারী ভোটার ২ লাখ ১২৮ জন।
বিগত ১৯৭০ সালের নির্বাচনে এই আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবুল হাসেম। ১৯৭৩ সালের নির্বাচনেও তিনি এমপি নির্বাচিত হয়ে এই আসন ধরে রাখেন। পরবর্তীতে ১৯৭৯ সালের নির্বাচনে আসনটি হাতছাড়া হয় এবং এমপি নির্বাচিত হন বিএনপির প্রার্থী ফজলুর রহমান সুলতান। বিগত ১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালের নির্বাচনে এই আসনে এমপি নির্বাচিত হন জাতীয় পার্টির প্রার্থী এনামুল হক জজ মিয়া। নব্বইয়ের গণআন্দোলন ও রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর ১৯৯১ সালের নির্বাচনে ফের আসনটি আওয়ামী লীগের দখলে আসে এবং এই আসনে এমপি নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আলতাফ হোসেন গোলন্দাজ।

এরপর ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের নির্বাচনেও এই আসনে এমপি নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আলতাফ হোসেন গোলন্দাজ। তিনি মারা গেলে ২০০৮ সালের নির্বাচনে এই আসনে এমপি নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন গিয়াস উদ্দিন। গত ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে এই আসনে এমপি নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের প্রয়াত সাবেক এমপি আলতাফ হোসেন গোলন্দাজের পুত্র ফাহমি গোলন্দাজ বাবেল।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গফরগাঁও আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হচ্ছেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বর্তমান সংসদ সদস্য ফাহমি গোলন্দাজ বাবেল, ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল, জিয়া হত্যা মামলার আসামী অবসরপ্রাপ্ত মেজর  রেজাউল করিম রেজা, ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি ওবায়দুল্লাহ আনোয়ার বুলবুল ও গফরগাঁও পৌরসভার সাবেক মেয়র অ্যাডভোকেট কায়সার আহমেদ। 
মনোনয়ন প্রত্যাশী ফাহমি গোলন্দাজ বাবেল এমপি প্রয়াত বাবা জননেতা আলতাফ হোসেন গোলন্দাজের পথ ধরেই গত দুই মেয়াদ দলের নেতা কর্মী ও সমর্থকদের সময় দিচ্ছেন। এলাকায় থেকে তাদের ভালমন্দ খোঁজখবর রাখছেন। আপদে বিপদে সুখে দুঃখে কর্মীসহ এলাকার মানুষের পাশে থাকছেন। করোনাকালীন সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে সাধ্যমতো সহায়তা দিয়েছেন। এলাকার উন্নয়নে দিনরাত কাজ করেছেন। এলাকার মানুষ এখন উন্নয়নের সুফল ভোগ করছেন। পুরো গফরগাঁওজুড়ে উন্নয়নের চিহ্ন দৃশ্যমান।

আগামী নির্বাচনে এর প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী। একই সময়ে ফাহমি গোলন্দাজ বাবেল এমপি দলকে ঐক্যবদ্ধ করে শক্তিশালী করেছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগ, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ এখন এক সুতোয় গাঁথা। মতভেদ ও বিরোধ থাকলেও সেটি প্রকাশ্য নয়। ফাহমি গোলন্দাজ বাবেল এমপির একক নেতৃত্বে গফরগাঁও আওয়ামী লীগ অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে এখন অনেকবেশি শক্তিশালী। সবাই বলছেন, আগামী নির্বাচনেও এই আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিজয় সুনিশ্চিত।
গফরগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফাহমি গোলন্দাজ বাবেল এমপি জনকন্ঠকে জানান, কেবল নির্বাচন এলেই নয়, আমি সারা বছর এলাকায় থাকি। দলের নেতা কর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে প্রতিটি কর্মসূচি সফলভাবে বাস্তবায়ন করে থাকি। গত দুই টার্মে গফরগাঁওয়ে দলকে শৃঙ্খলার সঙ্গে গুছিয়ে এনেছি। মাঠকে আওয়ামী লীগের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত করে রেখেছি।

করোনাকালীন আমি দলের নেতা কর্মী ও সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে এলাকাবাসীকে সাধ্যমতো সহায়তা দিয়েছি। গফরগাঁওকে সড়ক যোগাযোগ নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ময়মনসিংহ, ভালুকা, কিশোরগঞ্জ, টোক, বর্মী ও গাজীপুরের সঙ্গে সংযুক্ত করতে সক্ষম হয়েছি। ময়মনসিংহ-খানবাহাদুর ইসমাইল-গফরগাঁও সড়ক, গফরগাঁও-টোক সড়ক, ময়মনসিংহ-বর্মী সড়ক, ময়মনসিংহ-ভালুকা সড়ক, ময়মনসিংহ-হোসেনপুর সড়কসহ আঞ্চলিক প্রতিটি সড়কের উন্নয়ন দৃশ্যমান। 
গফরগাঁও এখন উন্নয়নের মহাসড়কে উল্লেখ করে এই নেতা আরও জানান, গফরগাঁওয়ের অভ্যন্তরীণ প্রতিটি সড়কের ব্রিজ কালভার্টের উন্নয়ন কাজ হয়েছে। জরাজীর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের ভৌত অবকাঠামোর ব্যাপক উন্নয়ন করা হয়েছে। মডেল মসজিদ ও মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। এসব উন্নয়নের সুফল এলাকাবাসী এখন ভোগ করছে। এলাকার মানুষ সব সময় আমাকে কাছে পায়।

এছাড়া প্রয়াত সাবেক এমপি জননেতা গোলন্দাজ পরিবারের সদস্য হিসেবে এলাকার মানুষ আমাকে পছন্দ করো ও ভালোবাস। আমার নেতৃত্বকে এলাকাবাসী সমর্থন করছে। আগামী নির্বাচনে মনোনয়নের ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দলের সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনা আমার কর্মকা-ের মূল্যায়ন করবেন বলে আমি আশা করছি। 
মনোনয়নপ্রত্যাশী ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রনেতা ময়মনসিংহ জেলা বারের সভাপতি নব অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল জনকন্ঠকে জানান, ছাত্রজীবন থেকেই আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত আছি। আওয়ামী লীগের দুর্দিনে রাজপথে থেকে দলের প্রতিটি আন্দোলন কর্মসূচি সফলভাবে বাস্তবায়ন করেছি। জেল, জুলুম ও পুলিশী নির্যাতনের শিকার হয়েছে।

দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে সব সময় সক্রিয় থেকে কাজ করছি। আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়ার ব্যাপারে  প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। আমার কর্মকা- বিবেচনা করে আওয়ামী লীগ আমাকে মূল্যায়ন করবে বলে আমার বিশ্বাস।
মনোনয়ন প্রত্যাশী জিয়া হত্যা মামলার আসামী মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদের কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) রেজাউল করিম  রেজা  গত ২০০৯ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে পরে প্রত্যাহার করেন।  রেজাউল করিম বলেন, জিয়া হত্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে জেল খেটেছি। ছাত্র অবস্থায় মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে জীবন বাজি রেখে দেশ স্বাধীন করেছি। জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মনোনয়ন দিয়ে গফরগাঁওবাসীর সেবা করার সুযোগ দিবেন বলে আমি মনে প্রাণে বিশ^াস করি।
গফরগাঁওয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে উঠে আসা আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী ওবায়দুল্লাহ আনোয়ার বুলবুল জনকন্ঠকে জানান, গফরগাঁওয়ের ইতিহাস হচ্ছে নৌকা যার বিজয় তার। গত ৩০ বছর ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত আছি। বিগত ২০০১ সালের নির্বাচনে এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আলতাফ হোসেন গোলন্দাজ এমপি নির্বাচিত হওয়ার পরও বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের অত্যাচার নির্যাতন মামলা হামলায় এলাকা ছাড়া নেতাকর্মী ও সমর্থকদের ঢাকায় আমার নিজ বাসায়  ও অর্ফিসে আশ্রয় দিয়ে আগলে রাখি। সাধ্যমত আইনী সহায়তা দিয়েছি। আওয়ামী লীগের দুর্দিনে নেতা কর্মীদের পাশে থেকেছি। দুঃসময়ে সক্রিয় থেকেছি। 
মনোনয়ন প্রত্যাশী গফরগাঁও পৌরসভার সাবেক মেয়র অ্যাডভোকেট কায়সার আহমেদ জনকন্ঠকে জানান, গতবারও আমি মনোনয়ন চেয়েছিলাম। আগামীতেও চাইব। তিনি বলেন, সপ্তাহে ৩ দিন এলাকায় থাকি। এ সময় দলের নেতা কর্মী ও সমর্থকদের সঙ্গে কুশল বিনিময় হয়। পরিবেশ নেই বলে গণসংযোগ করছি না। তবে এলাকাবাসীর আস্থায় আছি আমি।
এদিকে, বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হচ্ছেন- গফরগাঁও উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলহাজ এবি সিদ্দিকুর রহমান, ছাত্রদলের সাবেক নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ডা. মাফাকখারুল ইসলাম রানা ও প্রয়াত সাবেক এমপি ফজলুর রহমান সুলতানের পুত্র গফরগাঁও উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মুশফিকুর রহমান। তবে মনোনয়ন নিয়ে এই তিন নেতাকে এলাকায় মাঠে নামতে নামতে দেখেননি কেউ। সরকারবিরোধী কোনো আন্দোলন কর্মসূচি নিয়েও তাদের মাঠে নামতে দেখা যায় না। তবে গফরগঁাঁও আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী প্রভাবশালী নেতা এবি সিদ্দিকুর রহমানের রয়েছে বিশেষ গ্রহণযোগ্যতা ও ভোট ব্যাংক। 
এবি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, গফরগাঁওয়ে বিএনপি রাজনীতিতে বসন্তের কোকিলের জায়গা নেই। পোড় খাওয়া ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতা এবি সিদ্দিকুর রহমান মনোনয়ন পেলে এবং আগামীতে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগের জন্য চ্যালেঞ্জ হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই। 
ছাত্রদলের রাজনীতি থেকে উঠে আসা নতুন প্রজন্মের তরুণ প্রার্থী অধ্যাপক ডা. মোফাখখারুল ইসলাম রানা আগামী নির্বাচনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন চান এই আসনে। বিগত ওয়ান ইলেভেন পরবর্তী সময় থেকে এখন পর্যন্ত তিনি বিএনপির নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের কাছে অন্যতম ত্রাতা হিসেবে আস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছেন। সব সময় আগলে রেখেছেন এলাকা ছাড়া দলের নেতা কর্মীদের। এসব নানা কারনে বিএনপির নির্যাতিত নেতাকর্মী ও সমর্থকরা আছে অধ্যাপক ডা. রানার সঙ্গে। 
অধ্যাপক ডা. মোফাখখারুল ইসলাম রানা বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকা গফরগাঁওয়ের নির্যাতিত, নিপীড়িত মানুষের জন্য আমার যা কিছু করা প্রয়োজন আমি তাই করব। দুঃসময়ে এলাকার জনগণের সঙ্গে ছিলাম, আগামীতেও জনগণের সঙ্গে থাকতে চাই। দলের ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতা হিসেবে আগামী নির্বাচনে দল আমাকে মনোনয়ন দেয়ার ব্যাপারে অবশ্যই আমার কর্মকা-ের মূল্যায়ন করবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস। এলাকার মানুষ আমাকে পছন্দ করে এবং ভালোবাসে। 
বিএনপির গ্রুপিং ও কোন্দল প্রসঙ্গে জানান, গফরগাঁওয়ে বিএনপি দুই ধারায় বিভক্ত।

তবে দলের বেশিরভাগ নেতা কর্মীই আমার সঙ্গে আছেন। বিএনপি নেতা এবি সিদ্দিকুর রহমান বয়সের ভারে অনেকটাই ন্যুব্জ। তার বয়স এখন ৮৬। চলতে ফিরতেও কষ্ট হয় তার। বয়সজনিত কারণে গতবারও তিনি মনোনয়ন পাননি। তখন জোট থেকে এলডিপিকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছিল। দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকসহ অতিষ্ঠ এলাকাবাসী আগামীতে নতুন প্রজন্মের তরুণ নতুন মুখের প্রার্থীকে দেখতে চায়।
জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ ক্বারি হাবিবুল্লাহ বেলালী বছরের পর বছর এলাকাবাসীর সঙ্গে কোন যোগাযোগ না থাকলেও জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে এলাকায় মাঝে মধ্যে গনসংযোগ করেন। পুরনো সম্পর্ক ঝালাই করেন। এলাকার মানুষের সঙ্গে নানাভাবে যোগাযোগ করেন এবং তাদের খোঁজ-খবর নেন। তবে মনোনয়নের প্রত্যাশায় এই নেতাকে প্রকাশ্য গণসংযোগ করতে দেখেননি কোনো এলাকাবাসী। 
তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি থেকে আমাকে মনোনয়ন দিলে আমি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব। মানুষ আমাকে ভালোবাসে ও পছন্দ করে। গফরগাঁওয়ের মানুষও জাতীয় পার্টিকে পছন্দ ও সমর্থন করে। জোটগত নির্বাচন হলে জাতীয় পার্টি যদি এই আসন পায় এবং আমি যদি মনোনয়ন পাই তাহলে এই আসনে আমার বিজয় নিশ্চিত।

×