ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

জন্মনিবন্ধন জালিয়াতি করে সরকারি স্কুলে ভর্তির একাধিক আবেদন

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী 

প্রকাশিত: ১৪:২৫, ১৬ ডিসেম্বর ২০২২

জন্মনিবন্ধন জালিয়াতি করে সরকারি স্কুলে ভর্তির একাধিক আবেদন

ফাইল ফটো

রাজশাহীতে সরকারি মাধ্যমিক স্কুলে শিশুদের লটারির মাধ্যমে ভর্তির জন্য জন্মনিবন্ধন জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। নাম-ঠিকানা এক থাকলেও জন্মনিবন্ধন নম্বর জালিয়াতি করে অভিভাবকরা একাধিক আবেদন করেছেন সন্তানের জন্য। 

একই শিক্ষার্থীর একাধিক স্কুলে লটারিতে নাম ওঠার পর বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে এসেছে। ভর্তি সংক্রান্ত কমিটির সভায় এই শিক্ষার্থীদের ভর্তি বাতিল করা হয়েছে। তারা অন্য কোনো সরকারি স্কুলে ভর্তির সুযোগ পাবে না।

রাজশাহী জেলা প্রশাসনের একটি সূত্র জানায়, সরকারি বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তির জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) লটারি করে। এতে কারিগরি সহায়তা দেয় টেলিটক। গত ৬ ডিসেম্বর অনলাইনে লটারিতে ভর্তির আবেদনের শেষ তারিখ ছিল। ১২ ডিসেম্বর লটারিতে ফল ঘোষণা করা হয়।

রাজশাহীর সাতটি সরকারি বিদ্যালয়ের মধ্যে চারটির ফলে দেখা যায়, একজন শিক্ষার্থীর নাম একাধিকবার এসেছে। কোনো শিক্ষার্থীর প্রভাতি শাখাতেও আছে আবার দিবা শাখাতেও আছে। ভর্তি সংক্রান্ত কমিটি বিষয়টি অনুসন্ধান করতে গিয়ে দেখতে পায়, যে শিক্ষার্থীদের নাম একাধিকবার এসেছে তাদের নাম, বাবা ও মায়ের নাম এক থাকলেও জন্মনিবন্ধন নম্বরের কয়েকটি ডিজিট আলাদা। 

কমিটির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এ ধরনের শিক্ষার্থীরা একাধিক নিবন্ধন নম্বর ব্যবহার করে একাধিকবার আবেদন করেছে। এ কারণে তাদের নাম লটারিতে একাধিকবার এসেছে।

সর্বশেষ বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসনের সভায় সেসব শিক্ষার্থীর বাবা-মায়ের নাম এবং জন্ম নিবন্ধন নম্বর প্রকাশ করা হয়। এর মধ্যে রাজশাহী প্রমথ নাথ (পিএন) সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে একটি শিশুর নাম প্রভাতি এবং দিবা দুই শাখাতেই এসেছে। 

একবার তার জন্মনিবন্ধন নম্বর দেখানো হয়েছে  ২৭০১৩৫২। বাবার নাম মিলন ভট্টাচার্য, মায়ের নাম রাখী রানী ভট্টাচার্য। আরেকবার বাবা-মায়ের নাম ঠিক থাকলেও জন্ম নিবন্ধন নম্বর দেখানো হয়েছে  ৮১০১৩৫২। অর্থাৎ দুটি জন্ম নিবন্ধন নম্বরের শেষে চারটি ডিজিট একই, শুধু চার ডিজিটের আগের তিনটি ডিজিট পাল্টে দেওয়া হয়েছে।

যোগাযোগ করা হলে এক অভিভাবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বাচ্চার ভর্তি নিশ্চিত করার জন্য একাধিকবার তিনি আবেদন করেছেন। এর আগে এই পদ্ধতি অবলম্বন করে আরো অনেকে ভর্তি হয়েছে। তাই তিনিও জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে আবেদন করেছেন।

ভর্তি কমিটির সভাপতি ও রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল বলেন, জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে এই শিক্ষার্থীর অভিভাবকেরা একাধিক জন্মনিবন্ধন নম্বর ব্যবহার করে একাধিকবার আবেদন করেছিলেন। ভর্তি সংক্রান্ত কমিটির সভায় তাদের ভর্তি বাতিল করা হয়েছে। তারা কোনো সরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারবে না। 

এছাড়া লটারিতে যারা ভর্তির জন্য মনোনীত হয়েছে তাদের সবার নিবন্ধন নম্বর যাচাই করা হবে। জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের ভর্তিও বাতিল করা হবে

এসআর

×