ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৪ মে ২০২৪, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

সেতু আছে সংযোগ সড়ক নেই

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঘিওর, মানিকগঞ্জ

প্রকাশিত: ২২:২১, ৪ মে ২০২৪

সেতু আছে সংযোগ সড়ক নেই

মানিকগঞ্জের ঘিওরে নির্মাণ কাজ শেষ হলেও ভূমি অধিগ্রহণের জটিলতায় আটকে আছে সংযোগ সড়ক

মানিকগঞ্জের ঘিওরে ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতায় সেতু নির্মাণের দুই বছর পেরিয়ে গেলেও  নির্মাণ হয়নি সংযোগ সড়ক (অ্যাপ্রোচ)।  প্রায়  ৩৫ কোটি টাকার অধিক ব্যয়ে নির্মিত সেতুটি জনগণের যাতায়াতে কোনো কাজে আসছে না। নদীর  দু’ পাশের বোরো ধানের ফসলি জমির ওপরে মুখ থুবরে পড়ে আছে সেতুটি। প্রকল্প বাস্তবায়ন সময়সীমা এবং অর্থ বরাদ্দ বাড়ানো হলেও ভূমি অধিগ্রহণ আর স্থাপনার ক্ষতিপূরণের টাকা দুই বছরের বুঝে পাননি ক্ষতিগ্রস্তরা।

ক্ষতিপূরণের টাকা বুঝে না পাওয়ায় জমি ছাড়ছেন না তারা। জমি ও স্থাপনার মালিকরা বলছেন, প্রায় দুই বছর ধরে ক্ষতিপূরণের টাকা পাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বারবার ধরণা দিয়েও কাজ হচ্ছে না। ফলে ঘিওর- দৌলতপুর এ দুটি  উপজেলার ৩০/৩২টি গ্রামের হাজার হাজার লোকজনের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। 
 উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে দরপত্র আহ্বান করে ঢাকার অরিয়েন্ট ট্রেডিং অ্যান্ড বিল্ডারস এবং মেসার্স কহিনুর এন্টারপ্রাইজ (জেভি) নামের প্রতিষ্ঠানকে সেতুসহ এপ্রোজ সড়ক নির্মাণের কার্যাদেশ দেওয়া হয়। উপজেলার সিংজুরী ইউনিয়নের বৈকুণ্ঠপুর কালিগংগা নদীর ওপর ‘গ্রামীণ সড়কে গুরুত্বপূর্ণ সেতু (সিআইবিআরআর)‘ প্রকল্পের আওতায় সেতুটি নির্মাণ করা হয়।

দরপত্র অনুযায়ী ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। দুই দফা সময় বাড়ানো হয়েছে। সর্বশেষ ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে কাজ শেষ হওয়ার নির্দেশনা ছিল। এ সময়ের মধ্যেও কাজটি শেষ হয়নি। ৩৬৫ মিটার দৈর্ঘের এ সেতুটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৪ কেটি ৬০ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। ৬৩০ মিটার সংযোগ সডক নির্মাণে ৪.৯৬ শতাংশ ভূমি অধিগ্রহণ করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

তবে সেতুর অবকাঠামো নির্মাণকাজ শতভাগ শেষ হলেও ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতায় সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। এ অবস্থায় ঝুঁকি নিয়েই ঘিওর-দৌলতপুর উপজেলার ৩০/৩২  গ্রামের হাজারো লোকজনের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বর্ষা মৌসুমে খেয়া নৌকায় করে অতিকষ্টে পার হয় এলাকার লোকজন।  
সেতু নির্মাণ কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার মাসুদ মিয়া জানান, ভূমির মালিকরা ক্ষতিপূরণের টাকা না পাওয়ায় জমি ছাড়ছেন না। আর এলজিইডি বিভাগ জমি বুঝিয়ে দিচ্ছে না। কাজ শুরু করতে গেলে ভূমির মালিকরা বারবার বাধা দিচ্ছেন। এমন জটিলতায় বাধ্য হয়ে কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে অধিগ্রহণ হয়ে গেলে কাজ শেষ করতে ৪ থেকে ৫ মাস সময় লাগবে।  
উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, দুই বছর আগে সেতু নির্মাণ সম্পূর্ণ হয়েছে। কিন্তু ভূমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত জটিলতার কারণে ঠিকাদার দুই পাশের সংযোগ সড়ক করতে পারছে না। তবে অধিকরণের বিষয়টি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকদের মাঝে চেক বিতরণ সম্পন্ন হলেই। ঠিকাদার দ্রুত  কাজ শুরু করে দেবে।

ভূমি অধিগ্রহণে ধীরগতির কারণ জানতে চাইলে জেলার রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর (আরডিসি) এল এ শাখার সিনিয়ার সরকারি কমিশনার মামুনুর রশিদ জানান, ভূমি অধিগ্রহণ বিষয়টি একটি চলমান প্রক্রিয়া। জমির মালিকদের ইতোমধ্যে ৭ ধারা নোটিস করা হয়েেেছ। জেলা প্রশাসক মহোদয় খুব দ্রুত জমির মালিকদের ক্ষতিপূরণের চেক বিতরণ করবেন।

×