অনলাইন ডেস্ক ॥ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে হিম্মত থাকলে শিক্ষার্থীদের সামনে গিয়ে দাঁড়ানোর চ্যালেঞ্জ দিয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। সোমবার দিল্লিতে সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর বৈঠক থেকে বেরিয়ে এমন চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন তিনি।
মোদি সরকারের বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইন, নাগরিকপঞ্জিসহ একাধিক ইস্যুতে কীভাবে ভারতের বিরোধী দলগুলোর ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের কর্মপন্থা ঠিক করতে এদিন দিল্লিতে বৈঠক ডাকেন কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী। ওই বৈঠক থেকে বেরিয়েই মোদির উদ্দেশে তোপ দাপেন রাহুল।
রাহুল গান্ধী বলেন, প্রধানমন্ত্রী পারলে দেশের যে কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে শিক্ষার্থীদের মুখোমুখি দাঁড়ান। ছাত্রদের বলুন, সরকার অর্থনীতি নিয়ে ঠিক কী করেছে। চ্যালেঞ্জ করছি, সাহস থাকলে দেশের নতুন প্রজন্মের মুখোমুখি হোন।
তিনি বলেন, দেশের ছাত্র-যুবকরা যখন আন্দোলনে নেমেছে, তখন তাদের প্রশ্নের জবাব না দিয়ে দমনপীড়ন চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। সারা দেশে সাংঘাতিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বেকারত্ব, অর্থনৈতিক সংকট নিয়ে মানুষের মধ্যে ক্ষোভ জমছিল। এনআরসি, সিএএ সেই আগুনে ঘৃতাহুতি দিয়েছে। জীবনের শেষ প্রান্তে পৌঁছে যাওয়া মানুষও রাস্তায় নেমেছেন।
বৈঠক শেষে কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী বলেন, দেশের মানুষের মধ্যে বিভেদ তৈরি করতেই বিজেপি সরকার পথ চলছে। সারা দেশের মানুষ আজ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধে, সংবিধান বাঁচাতে লড়াই জারি থাকবে।
বিরোধী শিবিরে ঐক্যে চিড় ধরার ছবি অবশ্য আগেই সামনে এসেছিল। ৮ জানুয়ারি ধর্মঘটের দিন পশ্চিমবঙ্গে বাম-কংগ্রেসের বিরুদ্ধে হিংসা ছড়ানোর অভিযোগ তুলে এই বৈঠকে যাবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা ছাড়াও এদিনের বৈঠকে ছিল না মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টি, ডিএমকে এবং অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি।
এদিন দিল্লিতে যখন বিরোধী দলগুলোর বৈঠক চলছিল তখন ধর্মতলায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ধর্না মঞ্চে ভাষণ দেন মমতা। পর্যবেক্ষকদের মতে, মমতা বোঝাতে চাইছেন, তিনি বৈঠকে না গেলেও আন্দোলনের পথেই আছেন।
সীতারাম ইয়েচুরি, ডি রাজা, শরদ পাওয়ার, হেমন্ত সোরেন—উপস্থিত প্রত্যেক বিরোধী নেতাই বৈঠক শেষে কথা বলেন। তারা জানান, আগামী দিনে নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলন আরও তীব্র করা হবে।
এদিকে রবিবার রাত থেকে দিল্লির শাহিনবাগে সংখ্যালঘু নারীদের লাগাতার অবস্থানে বিরাট জমায়েত শুরু হয়েছে। উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজেও শুরু হয়েছে একই ধাঁচের আন্দোলন। কলকাতার পার্ক সার্কাস ময়দানেও অবস্থান নিয়েছেন সংখ্যালঘু নারীরা। কংগ্রেসসহ বিরোধী দলগুলোর নেতারা বলছেন, গণতান্ত্রিক পথেই এই ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন জারি থাকবে। সূত্র: দ্য ওয়াল।