ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

ভাষা সংগ্রামী রওশন আরা বাচ্চু আর নেই

প্রকাশিত: ০২:৪৬, ৩ ডিসেম্বর ২০১৯

ভাষা সংগ্রামী রওশন আরা বাচ্চু আর নেই

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ভাষা সংগ্রামী রওশন আরা বাচ্চু আর নেই। বার্ধক্যজনীত নানা রোগে দীর্ঘদিন ভোগার পর মঙ্গলবার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি (ইন্না...রাজিউন)। এর আগ পর্যন্ত ঢাকার পশ্চিম মিরপুরের বাসায় নীরবে নীভৃতে কাটান তিনি। বার্ধক্যের কারণে তেমন একটা বের হতেন না। অনেকটা হঠাৎ করেই তাঁর মৃত্যু খবর পাওয়া যায়। বাংলা একাডেমি খবরটি নিশ্চিত করেছে। আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ৩টায় তাঁর মরদেহ একাডেমিতে আনা হবে। একাডেমির কর্মকর্তা কর্মচারীরা ছাড়াও ভাষার জন্য লড়াই করা সহযোদ্ধা সাহিত্যিক বুদ্ধিজীবীরা রওশন আরা বাচ্চুর কফিনে ফুল দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানাবেন। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল নারীদের। রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই স্লোগানে রাজপথে নেমে আসা নারীদের অন্যতম রওশন আরা বাচ্চু। ১৯৫২ সালের বাংলা ভাষা আন্দোলনের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ছিলেন তিনি। দর্শন দ্বিতীয় বর্ষে পড়ার সময় যুক্ত হন ভাষা আন্দোলনের সঙ্গে। ভাষার দাবিতে ছাত্রীদের সংগঠিত করতে ভূমিকা রাখেন তিনি। তিনি ইডেন মহিলা কলেজ এবং বাংলাবাজার বালিকা বিদ্যালয় এর ছাত্রীদের সংগঠিত করে আমতলার সমাবেশ স্থলে নিয়ে আসেন। এখান থেকেই ছাত্রনেতারা ১৪৪ ধারা ভঙ্গের ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নেন। তারা ব্যারিকেড টপকিয়ে মিছিল নিয়ে এগুনোর চেষ্টা করেন। কিন্তু পুলিশের বাধার মুখে ব্যরিকেড টপকানো বেশ কঠিন ছিলো। রওশন আরা বাচ্চু তার দলের সবাইকে নিয়ে পুলিশ ব্যারিকেড ভেঙ্গার দুঃসাহস দেখান। এসময় পুলিশ লাঠিচার্জ করলে অনেকের সঙ্গে তিনিও আহত হন। রওশন আরা বাচ্চু ১৯৩২ সালের ১৭ই ডিসেম্বর সিলেটের কুলাউড়া থানার উছলাপাড়া গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৩ সালে দর্শনে অনার্স করেন তিনি। ১৯৬৫ সালে বি এড, ১৯৭৪ সালে ইতিহাসে এম এ করেন। তিনি সলিমুল্লাহ মুসলিম হল এবং উইম্যান স্টুডেন্টস রেসিডেন্স এর নির্বাচিত সদস্য ছিলেন। গণতান্ত্রিক প্রোগ্রেসিভ ফ্রন্টের সঙ্গে ছাত্র রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করেন। ঢাকার আনন্দময়ী স্কুল, লিটন অ্যাঞ্জেলস, আজিমপুর গার্লস স্কুল (খন্ডকালীন), নজরুল একাডেমি, কাকলি হাই স্কুল এবং পরে আলেমা একাডেমিতে শিক্ষকতা করেন। ২০০০ সালে বিএড কলেজে অধ্যাপক হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন।
×