ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সাতাশের বন্ধুত্ব...

প্রকাশিত: ১২:২৪, ১৩ অক্টোবর ২০১৯

সাতাশের বন্ধুত্ব...

স্কুল-কলেজের ছোট্ট গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্পণ। পাড়ার প্রাণের বন্ধু-বান্ধব রেখে নতুন ক্যাম্পাসে নতুন পরিবেশে নিজেদের মানিয়ে নেয়া সহজ বিষয় নয়। সে সময়টা অনেক বিরক্তিকর ও ভাল না লাগার গল্প। সেই বিরক্তিকর গল্পের মাঝে নতুন আলো জ্বেলে আবির্ভাব ঘটেছিল একটি পরিবারের। বলছিলাম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২৭তম ব্যাচের বন্ধুত্বের কথা। দিনটি ছিল ২০১৮ সালের ২১ জানুয়ারি রবিবার। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রথম দিনটি সবার জন্যই বহুল আকাক্সিক্ষত ও আনন্দময় বটে! কেননা একটি যুদ্ধে জয়ের পর জয়ীদের যে উল্লাস তারই প্রতিফলন এই দিনটি! সবাই ভিন্ন-ভিন্ন জেলা থেকে মিলিত হয়েছিলাম এই বিভাগে। নবীনদের বরণ করে নেয়ার জন্য বিভাগের রুমগুলো রঙ্গে রঙ্গীন করে তুলেছিল, কেউ বা নতুন ড্রেসে আবার কেউ বা নতুন শাড়িতে নিজেকে রাঙ্গিয়েছে নতুন সাজে। কেউ কারও পরিচিত নই কিন্তু কিভাবে যেন সেদিনই সবাই সবার সঙ্গে মিলিত হয়ে গেলাম। এই দিনটি থেকেই শুরু আমাদের পথচলা। সময়ের পরিক্রমায় সব অপরিচিত মুখগুলো ধীরে-ধীরে পরিচিত হয়ে উঠল। নতুন বন্ধু-বান্ধবীদের সঙ্গে ক্লাসে, আড্ডায় কখন যে সবার চিরচেনা হয়ে গেছি সেই ভাবনার অবকাশ নেই। ক্যাম্পাস মানেই বন্ধুত্ব আর বন্ধুত্ব মানেই ক্যাম্পাস। আড্ডা, গান আর খুনসুটি মেতে থাকা হয় প্রতি মুহূর্ত। সেমিনার লাইব্রেরি, কখনও শহীদ মিনার, কখনও বুদ্ধিজীবী, আবার টুকিটাকি চত্বরে বসে চায়ের কাপে জমে উঠে আমাদের প্রাণবন্ত আড্ডা। ক্লাস-পরীক্ষার ফাঁকে সময় সুযোগ পেলেই বন্ধুদের নিয়ে দূরে কোথাও ঘুরতে যাওয়া। শুধু তাই নয় পড়াশোনা মাঝে চলে তুমুলযুদ্ধ। বিভাগে কার থেকে কে ভাল ফলাফল করবে এ নিয়েও চলে প্রতিযোগিতা। দুঃসময় কিংবা সুসময় বন্ধুদের ছুটে চলা একসঙ্গে। এ যেন পরিবার বাহিরের আরও একটি পরিবারের আত্মার বন্ধন। সুখে-দুঃখে মেতে উঠি একসঙ্গে। দেখতে দেখতে ক্যাম্পাস জীবনের কেটে গেল প্রায় ২২টি মাস। বন্ধুত্বের বন্ধনকে আরও দৃঢ করতে আয়োজন করা হয়েছিল ক্লাস পার্টি। বিভাগের সভাপতি ও শিক্ষকরা কেক কেটে ব্যাচের ক্লাস পার্টির শুভ সূচনা করেন। গান-বাজনার তালে নৃত্য মেতে উঠেছিল সবাই একসঙ্গে। দিনব্যাপী আনন্দ-উল্লাসে ও রঙ্গীন আয়োজনের মধ্যে দিয়ে ক্লাস পার্টি শেষ হয়। কেনও জানি মনে হয় আনন্দময় ক্যাম্পাস জীবনের সময় খুব দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে। প্রবাদের ছন্দে আমাদেরও বলতে হয় সময় ও স্রোত কারও জন্য অপেক্ষা করে না। হয়ত প্রকৃতির সরল নিয়মেই দিনগুলো এগিয়ে যাচ্ছে। সময়ের পরিক্রমায় আমাদেরও ক্যাম্পাস ছেড়ে যেতে হবে আগামীর পথে। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ব্যাচ টুয়েন্টি সেভেনের সদস্যরা এগিয়ে যাব দুর্বার গতিতে এই তো মোদের অঙ্গীকার।
×