ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

মওদুদ, রিজভী যত কথা বলবেন বিএনপির ভোট তত কমবে ॥ কাদের

প্রকাশিত: ০৫:১৭, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

মওদুদ, রিজভী যত কথা বলবেন বিএনপির ভোট তত কমবে ॥ কাদের

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ব্যারিস্টার মওদুদ ও রিজভী আহমদ যত বেশি কথা বলবেন বিএনপির ভোট তত বেশি কমবে। এ জন্য আমরা বলি- এরা অন্যায় করুক, অপরাধ করুক, যত বেশি বাজে কথা বলুক; এদের গ্রেফতার করার দরকার নেই। এরা বাইরে থাক। এরা বাইরে থাকলে আওয়ামী লীগের জন্য ভাল। এদের বাজে বাজে কথাগুলো জনগণ থেকে বিএনপিকে সরিয়ে দিচ্ছে। আর বিএনপির বড় বড় কথার জবাব দেব জনগণের শক্তি দিয়ে। শুক্রবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। ‘বেগম জিয়া জেলে থাকলে বিএনপির ১০ লাখ ভোট বাড়ে, আওয়ামী লীগের ১০ লাখ ভোট কমবে’ বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের এমন বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনা জনপ্রিয়তার তুঙ্গে পৌঁছেছেন, তার ধারে-কাছে যাওয়ার ক্ষমতা বিএনপির নেই। আর দুর্নীতিবাজদের পক্ষে বাংলাদেশের জনগণ যাবে না। শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তার জন্য আওয়ামী লীগের প্রতিদিন দশ লাখ করে ভোট বাড়ছে, আর দুর্নীতির জন্য বিএনপির দশ লাখ ভোট কমছে। দুর্নীতিবাজদের পক্ষে দেশের লোক থাকে না। এ প্রসঙ্গে আওয়ালী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপিতে দুই-তিনটা প্যাথোলজিক্যাল লায়ার আছে। এরা ঘরে থাকে, ঘরে বসে ভাঙ্গা রেকর্ড বাজাচ্ছে। তারা বলে দেশে গণতন্ত্র নেই। গণতন্ত্রের স্বাধীনতা যদি না থাকত, মিডিয়ার স্বাধীনতা যদি না থাকত তবে মির্জা ফখরুল, মওদুদ, রিজভীরা আজকে সেসব গালিগালাজ করছে আদালতের বিচারককে প্রতারক বলে- এর পরও তারা ঘরে আছে। তাদের কেউ কিছু বলছে না। আওয়ামী লীগ সঙ্কট মুক্ত নয় মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ওয়ান-ইলেভেনের সময় আওয়ামী লীগ আপোস করেনি বলেই আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনাকে তৎকালীন সরকার বাধ্য হয়েছিল জেল থেকে মুক্তি দিতে। সুসময় আমাদের জীবনে খুব বেশি সময়ের জন্য আসেনি। ক্ষমতায় থেকেও আমরা যে সুসময়ে আছি এ কথা বলা যাবে না। এখনও মাঝে মাঝে দুঃস্বপ্ন দেখি। এখনও আমরা যে সঙ্কটমুক্ত সে কথা দাবি করা যাবে না। এখনও ষড়যন্ত্র হচ্ছে। কিন্তু আমাদের শক্তি হচ্ছে দেশের সবচাইতে জনপ্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনা। তার সময়ে উন্নয়ন ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে দেশের জনগণ এতটাই খুশী যে, বাংলাদেশের জনগণ এখন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ। সঙ্কটের কারণ ব্যাখ্যা করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, যে কারণে আজকে জঙ্গীবাদী শক্তি অনেকটাই নিষ্ক্রিয়। তাদের যে সক্রিয় উত্থান সেটা আমাদের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, আমাদের পুলিশ, র‌্যাবসহ নিরাপত্তা বাহিনীর বীরোচিত বলিষ্ঠ ভূমিকার কারণে জঙ্গীবাদী গোষ্ঠী অনেকটাই আগের চেয়ে দুর্বল। কিন্তু তারা যে একেবারেই তাদের পথ থেকে সরে গেছে এই কথাটা মনে করার কারণ নেই। তিনি বলেন, আজকে এই শক্তি এই মুহূর্তে মনে হচ্ছে তারা একবারে নিষ্ক্রিয়, কিন্তু বাস্তবে আমার কাছে প্রতিমুহূর্তে মনে হয় এই জঙ্গীবাদী গোষ্ঠী তলে তলে আরও ভয়াবহ কোন আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে কি না, আজকে সেটাও আমাদের ভাবতে হবে। বিএনপিই জঙ্গীবাদী এই অপশক্তির পৃষ্ঠপোষক উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, আজকে খোলামেলা রাজনীতিতে যারা বিরোধিতা করছে এই অপশক্তি তাদেরই (বিএনপি) বন্ধু। এই অপশক্তি তাদেরই দোসর। এই অপশক্তিকে পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে বাংলাদেশে যে দলটি আজ আদালতে রায়ের বিরুদ্ধে তারা বিদ্রোহ ঘোষণা করেছে। যে দেশে বিচার বিভাগ স্বাধীন সে দেশে একটি রায়কে কেন্দ্র করে তা-ব চালানো, যুক্তরাজ্যের দূতাবাসে হামলার মতো ঘটনা ইতিহাসে নজিরবিহীন। সেই কাজগুলোই বিএনপি করছে। যে কোন ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় আওয়ামী লীগ সতর্ক রয়েছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা (আওয়ামী লীগ) আগের চেয়ে সতর্ক এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাও আগের চেয়ে তৎপর। এ কারণেই অপশক্তিরা দেশকে অস্থিতিশীল করার সাহস পাচ্ছে না, হাইকোর্টের সামনে ন্যাক্কারজনক হামলার মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তির সাহস তাদের নেই। এই জন্য কৌশল নিয়েছে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন। কিন্তু বাস্তবে তারা কি শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছে? রাজনৈতিকভাবে বহুরূপী নেতা মওদুদ আহমদরা শান্তিপূর্ণ নাকি অশান্তির ক্ষেত্র সৃষ্টি করছেন? অশান্তির পথে যাবেন এটাই তাদের চরিত্র। আর মুখে শান্তির ললিত বাণী শুনিয়ে জনগণের সহানুভূতি পেতে চাচ্ছেন। কিন্তু দেশের জনগণ বিএনপিকে ভাল করেই চেনে। মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী আবুল হাসনাতের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী রীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, দফতর সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ ও দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ।
×