ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

নওগাঁয় গৃহবধু রশিদা বিচারের আশায় ঘুরছেন দ্বারে দ্বারে

প্রকাশিত: ০১:২১, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৭

নওগাঁয় গৃহবধু রশিদা বিচারের আশায় ঘুরছেন দ্বারে দ্বারে

নিজস্ব সংবাদদাতা, নওগাঁ ॥ নওগাঁ সদর উপজেলার চকরামচন্দ্র মধ্যপাড়া গ্রামের তালাক প্রাপ্ত পাষন্ড স্বামীর অমানুষিক নির্যাতনের শিকার গৃহবধু রশিদা বেগম (৩৮) বিচারের আশায এখন দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। থানায় অভিযোগ করেও কোন ফল পাননি। উল্টো তালাক দেয়া স্বামী মোকছেদ আলী (৪৫) ও তার লোকজনের অব্যাহত হুমকি-ধামকির মুখে ওই গৃহবধু নিজের বসত বাড়ি ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছেন বোনের বাসায়। রবিবার দুপুরে নওগাঁ জেলা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের কাছে তার করুন কাহিনী বর্ণনা করতে গিয়ে হাউ-মাউ করে কেঁদে ফেলেন তিনি। চকরামচন্দ্র মধ্যপাড়া গ্রামের অছিম উদ্দিনের মেয়ে রশিদা বেগম জানান, প্রাপ্ত বয়স্ক না হলেও প্রায় ২২ বছর আগে একই গ্রামের মৃত জালাল সরদারের ছেলে মোকছেদ আলীর সঙ্গে বাবা-মা ধুমধাম করেই তাকে বিয়ে দেয়। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই মোকছেদ আমার ওপর কারনে-অকারনে নানা ভাবে নির্যাতন চালিয়ে আসছিল। এই অবস্থায় আমাদের এক ছেলে ও দুই মেয়ের জন্ম হয়। তাদের মুখের দিকে তাকিয়ে শত নির্যাতন-লাঞ্চনা গঞ্জনা সহ্য করে স্বামীর সংসার করে আসছিলাম। পরে নির্যাতনের হাত থেকে আমাকে রক্ষায় আমার পিতা আমাদের দুই জনের নামে ৩ শতক জমি লিখে দিয়ে সেখানে বাড়ি তৈরী করে দেন। ওই বাড়িতে বসবাস করার সময় মোকছেদ আলী আমার নামে পিতার লিখে দেয়া জমি তার নিজের নামে লিখে দেয়ার জন্য চাপ দিয়ে আসছিল। ওই সম্পতি লিখে না দেয়ার কথা বলার পর থেকে আমার ওপর নির্যাতনের মাত্রা আরো বেড়ে যায়। একপর্যায় তার নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে গত এক বছর আগে মোকছেদকে স্বামী তালাক করি। এতে মোকছেদ আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। গত ২৯ নবেম্বর বিকেল ৫টার দিকে মোকছেদ ও তার লোকজন আমার বসত বাড়িতে হামলা চালিয়ে লোহার রড দিয়ে বেধড়ক মারপিট করে আমার দুই হাত ভেঙ্গে ফেলে। আমার সারা শরীরে ফোলা জখম করে। আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেললে গ্রামবাসী আমাকে উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়। দ্ইুদিন পর জ্ঞান ফিরে পাই। এর কিছুদিন পর গত ৯ ডিসেম্বর মোকছেদ আলীকে আসামী করে থানায় লিখিত একটি অভিযোগ করি। কিন্তু থানা পুলিশ এখন পর্যন্ত তাকে গ্রেফতার করেনি। উল্টো মোকছেদ ও তার লোকজন আমাকে জানে মেরে ফেলার হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছে। নিরুপায় হয়ে আমি আমার বোনের বাসায় আশ্রয় নিয়েছি। ্এব্যাপারে মোকছেদের সঙ্গে কথা হলে, তিনি দম্ভ করে সাংবাদিকদের বলেন, রশিদাকে মেরেছি। পারলে আরো মারবো। আপনারা যা করার করেন। আমার কিছুই হবে না। এদিকে এই মামলার তদন্তকারী অফিসার এসআই সোয়ায়বুর রহমান বলেন, আসামীরা ইতোমধ্যেই আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন। মামলার এমসি পেলেই পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
×