ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

সংসদে পরমাণু শক্তি কমিশন বিল-২০১৭ উত্থাপন

প্রকাশিত: ০৩:৪৬, ১৫ নভেম্বর ২০১৭

সংসদে পরমাণু শক্তি কমিশন বিল-২০১৭ উত্থাপন

সংসদ রিপোর্টার ॥ পরমাণু শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার, উন্নয়ন ও প্রসারে আন্তর্জাতিক পরিম-লের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নতুন আইন প্রণয়নের লক্ষ্যে ‘বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন বিল-২০১৭’ জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান বিলটি সংসদে উত্থাপনের পর তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। এছাড়া সংসদে নজরুল ইনস্টিটিউট বিল উত্থাপন করা হয়েছে। স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া সংসদ অধিবেশনে বিলটি পাসের প্রস্তাব উত্থাপনকালে মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান জানান, ১৯৭৩ সালের বাংলাদেশ এ্যাটমিক এনার্জি কমিশন অর্ডার বাতিল করে বাংলায় নতুন আইন প্রণয়নের জন্য বিলটি সংসদে তোলা হয়েছে। গত ১৩ ফেব্রুয়ারী মন্ত্রীসভায় বিলটি অনুমোদিত হয়। এরপর ১১ জুন সংসদে বিলটি উত্থাপনের পর তা অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়। জাতীয় পার্টির কয়েকজন সংসদ সদস্য বিলটির বিরোধীতা করলে যাচাই-বাছাইয়ের প্রস্তাব আনলে তা কন্ঠভোটে নাকচ করে দেন। বিরোধী দলের আশঙ্কার জবাব দিতে গিয়ে মন্ত্রী জানান, বর্জ্য অবশ্যই রাশিয়া ফেরত নেবে। চূক্তির প্রথম শর্তেই রয়েছে এটি। কিছু দিনের মধ্যেই নিউক্লিয়ার ক্লাবে প্রবেশ করবে। সারাবিশ্বে আবারও নতুন করে মাথা তুলে দাঁড়াবে। তাই এটি নিয়ে আশঙ্কা বা ভয়ের কোন কারণ নেই। বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের কাজের বর্ধিত পরিধি, দেশের বর্তমান বাস্তবতা এবং আন্তর্জাতিক বিধি-বিধানের আলোকে পরমাণু শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার, পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন ও পরিচালনা এবং পারমাণবিক অবকাঠামোগুলোর সুষ্ঠু পরিচালনার লক্ষ্যে বিদ্যমান আইন বাতিল ও সংহত করে নতুন আইন করা দরকার। নতুন আইন হলে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ কর্মকা- ত্বরান্বিত হবে বলেও সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে। বিলে বলা হয়েছে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন একজন চেয়ারম্যান ও চারজন সদস্যের সমন্বয়ে একটি কমিশন গঠিত হবে। সরকার নির্ধারিত শর্তে তারা নিযুক্ত হবেন, চেয়ারম্যান হবেন সংস্থার প্রধান। এই কমিশন খাদ্য, কৃষি, স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, পরিবেশ ও শিল্পের ক্ষেত্রে পরমাণু শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের প্রসার, ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতির নকশা ও প্রযুক্তি এবং ব্যবহারিক সামগ্রীর উন্নয়ন করবে। এছাড়া বিলে কমিশনের সহায়তার জন্য বিশেষজ্ঞ কমিটির সুযোগ রাখা হয়েছে। নজরুল ইনস্টিটিউট বিল উত্থাপন ॥ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সাহিত্য-সংস্কৃতিমূলক সৃষ্টিকর্ম সংগ্রহ, সংরক্ষণ, প্রকাশ ও প্রচারের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত নজরুল ইনস্টিটিউট আইন সংশোধন, সংযোজন, পরিমার্জন ও পুনর্গঠনের জন্য জাতীয় সংসদে একটি বিল উত্থাপন করা হয়েছে। বুধবার রাতে ‘নজরুল ইনস্টিটিউট আইন-২০১৭’ নামের এই বিলটি উত্থাপন করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া সংসদ অধিবেশনে বিলটি উত্থাপনের পর তা অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়েছে। কমিটিকে আগামী এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমাম বিলটি উত্থাপনের বিরোধীতা করলে তা কন্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। গত ৭ আগষ্ট মন্ত্রীসভার বৈঠকে বিলটি অনুমোদন দেওয়া হয়। এতোদিন নজরুল ইনস্টিটিউট ১৯৯৪ সালের একটি অধ্যাদেশ দ্বারা পরিচালিত হয়ে আসছিলো। আদালতের নির্দেশ ও ওই অধ্যাদেশটাকে একটি পূর্ণাঙ্গ আইনে রুপান্তরের লক্ষ্যে নতুন বিলটি আনা হয়েছে। প্রস্তাবিত ওই আইনে বাছাই কমিটির সুপারিশ ও বোর্ডের অনুমোদন সাপেক্ষে প্রতিবছর ব্যক্তি অথবা প্রতিষ্ঠানকে নজরুল পুরস্কার প্রদানের বিধান রাখা হয়েছে। নজরুল সংগীত, সাহিত্য ও অন্যান্য ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ এ পুরস্কার প্রদান করা হবে। এছাড়া নজরুল গবেষণাকে উৎসাহিত করতে পদক্ষেপ গ্রহণের প্রস্তাব করা হয়েছে। বিলে নজরুল ইনস্টিটিউট পরিচালনা বোর্ড সাত সদস্যের পরিবর্তে নয় সদস্যের করার বিধান রাখা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, সেখানে সরকার মনোনীত একজন নজরুল বিশেষজ্ঞ তিন বছরের জন্য চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন। আর সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের একজন করে প্রতিনিধি এবং নরুজল সৃষ্টি কর্মে নিয়োজিত চারজন ব্যক্তি এই বোর্ডের সদস্য থাকবেন। এছাড়া ইনস্টিটিউটের একজন নির্বাহী পরিচালক থাকবেন।
×