১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশের সাহিত্যের অন্যান্য শাখার মতো কবিতার পরিম-লেও অসাধারণ মাইলফলক হয়ে আছে। সেই দিনগুলোর আশ্চর্য অনুভূতি, অজস্র উত্তেজনা, বিপন্ন হৃদয়ের আর্তনাদ ও অগ্নিময় অঙ্গীকারÑ সবই বাক্সময় হয়ে আছে আমাদের কবিতায়। কারণ সেদিন বাংলাদেশের কবিরাও হাতে তুলে নিয়েছিলেন বাংলাদেশের অস্তিত্বের লাল-সবুজ পতাকাকে।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন ও সৌন্দর্য, প্রত্যয় ও শক্তি, রক্তমূল্য এবং অনিবার্যতা বিচিত্র অভিব্যক্তিতে উদ্ভাসিত হয়েছে প্রতিনিধিত্বশীল কবিসহ নবীন-প্রবীণ প্রায় সব কবির কবিতাতেই।
আবহমান বাংলার লোকজীবনের মুগ্ধতায় যে কবি ছিলেন নিমগ্ন সেই জসীমউদ্দীন সহসা চমকে উঠেছেন ঘাতক জল্লাদের নিষ্ঠুর বর্বরতায়। শহীদের লহুতে জ্বালানো হিম্মত নিয়ে মুক্তিসেনাদের সঙ্গে গভীর একাত্মতায় তিনি অঙ্গীকার করেছেন আমৃত্যু সংগ্রামেরÑ
এ সোনার দেশে যতদিন রবে একটিও খান সেনা
ততদিন তব-মোদের যাত্রা মুহূর্তে থামিবে না।
(মুক্তিযোদ্ধা)
বেগম সুফিয়া কামালের কবিতায় স্বাধীনতা সংগ্রাম হয়েছে আমাদের পরিচয়ের অভিজ্ঞান :
আপনারে মুক্ত করি যে সংগ্রামী বীর
দাঁড়ালে উন্নত হয়ে পশ্চাতে সে
আর হটিল না।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ছিল এক ধারাবাহিক আন্দোলনের চরম পর্যায়। এই আন্দোলনের প্রবল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করেছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণ। মুক্তিযুদ্ধের মহানায়কের সেই ঐতিহাসিক ভাষণ দানের ঘটনাকে কাব্যিক মহিমায় ফুটিয়ে তুলেছেন নির্মলেন্দু গুণ :
হৃদয়ে লাগিল দোলা,
জনসমুদ্রে জাগিলো জোয়ার সকল দুয়ার খোলা।
কে রোধে তাহার বজ্রকণ্ঠ বাণী?
গণসূর্যের মঞ্চ কাঁপিয়ে কবি শোনালেন তাঁর
অমর কবিতাখানি :
‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম,
এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’
সেই থেকে স্বাধীনতা শব্দটি আমাদের।
(স্বাধীনতা এই শব্দটি আমাদের কিভাবে হলো, চাষাভুষার কাব্য)
মুক্তিযুদ্ধের প্রাক্কালেই পাকিস্তানী পতাকাকে প্রত্যাখ্যান করে উত্তলিত হয়েছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রতীক লাল-সবুজ পতাকা। মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানের কবিতায় সেই লাল-সবুজ পতাকা হয়ে ওঠে মুক্তিযুদ্ধের রক্তাক্ত ইতিহাস ও স্বপ্নিল সোনার বাংলার প্রতীক :
আবার বুকের রক্তে বাংলার শ্যামল প্লাবিত,
যেন কোন সবুজাভা নেই আর, সকল সবুজে
ছোপ ছোপ লাল রক্ত, আর সেই
সবুজের বক্ষদীর্ণ রক্তের গোলকে
সোনার বাংলার ছবি
মুহূর্তে পতাকা হয়ে দোদুল বাতাসে।
(জার্নাল ১ : তেইশে মার্চ ১৯৭১)
পঁচিশে মার্চের কালো রাত সত্ত্বেও ছাব্বিশে মার্চ থেকেই শুরু হয়েছিল প্রতিরোধ আন্দোলন। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী যাতে এগিয়ে যেতে না পারে সেজন্যে পথে পথে তৈরি হয়েছিল ব্যারিকেড। রাজনৈতিক কর্মী ও ছাত্র-যুবা থেকে শুরু করে সাধারণ বালকও যুক্ত হয়েছিল সেই প্রতিরোধ সংগ্রামে। শহীদ কাদরীর কবিতায় তা পেয়েছে প্রতীকী ব্যঞ্জনা :
মধ্য দুপুরে ধ্বংসস্তূপের মধ্যে একটা
তন্ময় বালক
কাঁচ, লোহা, টুকরো ইট, বিদীর্ণ কড়ি-কাঠ,
এক ফালি টিন,
ছেঁড়া চট, জংধরা পেরেক জড়ো করলো এক নিপুণ
ঐন্দ্রজালিকের মতো যতেœ
এবং অসতর্ক হাতে কারফিউ শুরু হবার আগেই
প্রায় অন্যমনস্কভাবে তৈরি করলো কয়েকটা অক্ষর : ‘স্বা-ধী-ন-তা’।
(‘নিষিদ্ধ জার্নাল থেকে’, শহীদ কাদরীর কবিতা)
মুক্তিযুদ্ধের শুরুতেই পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর মধ্যযুগীয় বর্বরতা কবিকে করেছে যন্ত্রণাদায়ক। বিষণœ বেদনায় কবি এঁকেছেন আক্রান্ত স্বদেশের ছবি। এমনি ছবি চোখে পড়ে ফজল শাহাবুদ্দিনের কবিতায় :
পোড়া গ্রাম মসজিদ শহীদ মিনার...
চোখ বাঁধা, হাতে রজ্জু, ট্রাকে বাসে জিপে
দেখি অসহায় বাংলাদেশ প্রতিদিন কেঁপে ওঠে...
ভেসে যায় বুড়িগঙ্গায় তিতাসে
ধানের ক্ষেতের পাশে কাশবনে শকুন কুকুর
আর চিলদের বিশুদ্ধ উৎসবে।
আলাউদ্দিন আল আজাদ পরিসংখ্যান ব্যবহার করে মুক্তিযুদ্ধের মৃত্যুর বিভীষিকাকে ধারণ করেছেন কবিতায় :
তিরিশ লাখ হত্যা
সাড়ে তিন লাখ ধর্ষণ
পঞ্চাশ হাজার অগ্নিসংযোগ
এবং লুট
অগণিত
কিন্তু ঘাতক
মাত্র ১৯৫ জন;
(ঘাতক ১৯৫)
হত্যা ও ধ্বংসলীলা, মৃত্যুতাড়িত গৃহহারা মানুষের উদ্বাস্তু জীবন, উজাড় হয়ে যাওয়া গ্রাম-গ্রামান্তরের শূন্যতা ও হাহাকার সেদিন কবির অন্তরে জন্ম দিয়েছিল ক্ষোভ ও ঘৃণার বারুদের। সেই ক্ষোভেরই তীব্র বহিঃর্প্রকাশ ঘটেছে সিকান্দার আবু জাফরের ‘বাংলা ছাড়ো’ কবিতায়। ঐ কবিতায় দখলদার পাকিস্তানী বাহিনীর বিরুদ্ধে তাঁর দ্ব্যর্থহীন উচ্চারণÑ
তুমি আমার জলস্থলের
মাদুর থেকে নামো
তুমি বাংলা ছাড়ো।
পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর হাতে অবরুদ্ধ স্বদেশে আত্মগোপনরত জীবনে শামসুর রাহমান দেখেছেন দখলদার বাহিনীর নির্মম বর্বরতা; দেখেছেন হত্যা ও ধ্বংসের মুখে বিপন্ন মানুষের অসহায় আকুতি। উজাড় হওয়া গ্রাম-গ্রামান্তরের ভয়াবহ শূন্যতার হাহাকার কবিহৃদয়কে করেছে ক্ষতাক্ত। সেই দুঃসময়ের অনুভূতিগুলো আভাসিত হয়েছে তাঁর বন্দী শিবির থেকে কাব্যগ্রন্থে। কিন্তু কবি জানেন, স্বাধীনতা আমাদের জীবনে এক অনিবার্য ঘটনা। এই অনিবার্যতাকে কবি উচ্চারণ করেন দৃপ্ত প্রত্যয়ে।
পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে জ্বলন্ত
ঘোষণার ধ্বনি-প্রতিধ্বনি তুলে
নতুন নিশান উড়িয়ে, দামামা বাজিয়ে দিগি¦দিক
এই বাংলায়
তোমাকে আসতেই হবে হে স্বাধীনতা।
(তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা)
অসীম আত্মত্যাগ ও মৃত্যুঞ্জয়ী সংগ্রামের বিনিময়ে অর্জিত যে স্বাধীনতা তা তাঁর কাছে কেবল নিছক যুদ্ধ বিজয় নয়। স্বাধীনতাকে তিনি দেখেছেন আবহমানকালের বাংলার ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, স্বপ্ন আর সংগ্রামের প্রেক্ষাপটে। তা কেবল বাংলার প্রকৃতির হৃদয়গ্রাহী সৌন্দর্যের মোহাঞ্জন মাখানো আলপনা নয়, এই স্বাধীনতা শিশু-কিশোর, যুবা-বৃদ্ধ, ছাত্র-শ্রমিক, জেলে-চাষীÑ সবার সোনালি স্বপ্নের ফসল :
স্বাধীনতা তুমি
রবিঠাকুরের অজর কবিতা, অবিনাশী গান।
স্বাধীনতা তুমি
কাজী নজরুল ঝাঁকড়া চুলের বাবরি দোলানো
মহান পুরুষ সৃষ্টি সুখের উল্লাসে কাঁপা-
স্বাধীনতা তুমি
শহীদ মিনারে অমর, একুশে ফেব্রুয়ারির উজ্জ্বল সভা।
স্বাধীনতা তুমি
পতাকা-শোভিত সেøাগান-মুখর ঝাঁঝালো মিছিল।...
স্বাধীনতা তুমি
মজুর যুবার রোদে ঝলসিত দক্ষ বাহুর গ্রন্থিল পেশী।
স্বাধীনতা তুমি
অন্ধকারের খাঁ খাঁ সীমান্তে মুক্তিসেনার চোখের ঝিলিক।
হাসান হাফিজুর রহমান প্রতিটি মানুষের মধ্যেই প্রত্যক্ষ করেছেন সংগ্রামী বীর মুক্তিযোদ্ধাকে :
সবুজ মানুষেরা আচম্বিতে আজ প্রত্যেকেই গেরিলা।...
শহরে বন্দরে কে নয় গেরিলা, আমিতো জানি না।
বাংলার আপদে আজ লক্ষ কোটি বীর সেনা
ঘরে ও বাইরে হাঁকে রণধ্বনি, একটি শপথে
আজ হয়ে যায় শৌর্য ও বীরগাথার মহান
সৈনিক, যেন সূর্যসেন, যেন স্পর্টাকাস স্বয়ং সবাই।
(গেরিলা)
স্বাধীন দেশমাতৃকার পতাকা উত্তোলন করে মাতৃভূমি বাংলাদেশের হাজার বছরের দুঃখ-বেদনা মুছিয়ে দেয়ার অঙ্গীকার উচ্চারিত হয় তাঁর কবিতায় :
তুমি ছিলে অমলিন, আজো আছো অমলিন।
শত কোটি লাঞ্ছনার তিক্ত দাগ সারা দেহে সয়ে
আজো তুমি মাতা, ...
প্রেম অবারিত হয়ে বিজয়ের ধারা জলে, রোদ্রে জ্যোৎস্নায়।
শত শতাব্দীর অবগুণ্ঠিত আশা পূর্ণ করে
মোছাব তোমার মুখ তোমারই আপন পতাকায়।
(তোমার আপন পতাকা)
সংকল্প ও সংগ্রামের দৃপ্ততার পাশাপাশি কবিকণ্ঠে ধ্বনিত হয়েছে সুগভীর প্রত্যয় ও বলিষ্ঠ আশাবাদ। কবি আহসান হাবীবের চোখে স্বাধীনতা প্রতীয়মান হয় মুক্তিসেনার বুকের গভীরে লালিত মহত্তম এক অস্ত্র হিসেবে :
বুকের গভীরে
মহত্তম সেই অস্ত্র যার
দানবের স্পর্শযোগ্য অবয়ব নেই কোনো
ধ্বনি যার অহরহ প্রাণে তার বাজায় দুন্দুভি
স্বাধীনতা স্বাধীনতা স্বাধীনতা
আর সেই প্রিয়তম মহত্তম অস্ত্র বুকে
লুকিয়ে সন্তর্পণে ধীর পায়ে
অনন্য কিশোর
সঠিক গন্তব্যে যায় হেঁটে।
(মার্চ)
সৈয়দ শামসুল হক উদাত্ত বাচনে মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন স্মৃতিসত্তায় :
যখন দশ লক্ষ ধর্ষিতার আর্তনাদে নষ্টমান
আমার শ্রুতি,
এখনো তো আমার শ্রুতি;
যখন তিরিশ লক্ষ মানুষের রক্তে প্লবমান
আমার স্মৃতি,
এখনো তো আমার স্মৃতি;
যখন তিন কোটি মানুষের গৃহত্যাগে
বিলীয়মান আমার সভ্যতা,
এখনো তো আমার সভ্যতা।
(ব্রহ্মপুত্রের প্রতি)
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের পর স্বাধীন বাংলাদেশে উচ্ছ্বসিত ফোয়ারার আবেগ উৎসারিত হয়েছে কবিতায়। তাতে ধ্বনি হয়েছে কবিদের অনুভব, স্বপ্ন ও অঙ্গীকার। এসব কবিতায় মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে আমাদের জীবনে ও মরণে সঞ্জীবনী অনির্বাণ শিখা। কখনও এসব কবিতায় মূর্ত হয়েছে বাঙালীর অপরাজেয় প্রাণ-শক্তি; কখনও কবিতা হয়ে উঠেছে আবহমান বাংলার ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও স্বপ্ন-সাধের পতাকা। কখনও কবিতায় মূর্ত হয়েছে একাত্তরের কালো রাতের দুঃস্বপ্ন, কখনও তা হয়ে উঠেছে দুর্নিবার সাহস ও বিক্রমের অনন্য বীরত্বগাথা।
একাত্তরের মার্চে হানাদার বাহিনী যে রক্তের বন্যায় ভাসিয়ে দিয়েছিল দেশকে তাকে শেষ পর্যন্ত ছাপিয়ে উঠেছিল মুক্তিযুদ্ধের বিজয়। এই সত্যই কাব্যিক সুষমা পেয়েছে হুমাযুন আজাদের কবিতায় :
... সারা বাংলা রক্তে গেছে ভিজে। যে-নদীতে ভাসতো রাজহাঁস সেখানে ভাসছে
শুধু নিরীহ বাঙালীর লাশ। সূর্য আর নক্ষত্রের সারাবেলা
মানুষের, সেখানে প্রাগৈতিহাসিক পশুরা সে-মানুষ নিয়ে করে বর্বরতা খেলা
তারপর এলো নতুন বন্যা ... সূর্যসংকাশ
ভেসে গেল জন্তুরা, জন্তুদের সকল আভাস।
(খোকনের সানগ্লাস, অলৌকিক ইস্টিমার)
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ আমাদের কবিতায় এনেছে নতুন শব্দসম্ভার ও নতুন নতুন চিত্রকল্প। হুমায়ুন আজাদের কবিতায়ও তা চোখে পড়ে :
তুমি পা রাখলেই অকস্মাৎ ধ্বংস হয় শত্রুর কংক্রিট বাংকার
তুমি ট্রিগারে আঙুল রাখতেই মায়াবীর মতো জাদুবলে
পতন হয় শত্রুর দুর্ভেদ্য ঘাঁটি ঢাকা নগরীর।
(মুক্তিবাহিনীর জন্যে)
তাঁর প্রেমের কবিতাতেও ব্যবহৃত হয় মুক্তিযুদ্ধের নানা চিত্রকল্প। সেগুলো আমাদের অনুভূতিতে সৃষ্টি করে নবতর অনুরণন :
এবং থরথর করে উঠবে দরজা-জানালা আর তোমার হৃদপি-।
পর মুহূর্তেই তোমার ঝনঝন করে ওঠা এলোমেলো রক্ত
ঠা-া হ’য়ে যাবে যেমন একাত্তরের দরজায় বুটের অদ্ভুত শব্দে
নিথর স্তব্ধ হ’য়ে যেত ঢাকা শহরের জনগণ।
(আমাকে ভালোবাসার পর)
এভাবে বাংলা কবিতায় স্থান করে নেয় মুক্তিযোদ্ধা, বুলেট, বারুদ, মেশিনগান, মর্টার, গ্রেনেড, বাংকার, ট্যাঙ্ক, গেরিলা, বুট ইত্যাদি শব্দ। পাশাপাশি কবিতার ভাববস্তু ও আবেগ যায় বদলে। ক্রোধ ও ঘৃণা, ভালোবাসা ও দেশপ্রেম, আহ্বান ও অঙ্গীকার, রক্তাক্ত আর্তনাদ ও মুক্তিসেনার দৃপ্ত পদধ্বনি কবিতাকে দেয় নতুন মেজাজ ও নতুন ব্যঞ্জনা।
আরও একটি দিক থেকে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশের কবিতায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে। একাত্তরের আগে কবি ছিলেন প্রধানত আত্মমগ্ন, ব্যক্তি অনুভবের বাণীবাহক। কিন্তু একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ কবির আসনকে সরিয়ে এনেছে জনগণের কাতারে, তাঁকে করেছে সমগ্র জনগণের যন্ত্রণা, প্রত্যাশা ও অঙ্গীকারের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এভাবে ব্যক্তির অনুভব ও বোধ একাত্ম হয়েছে সবার অনুভব ও বোধের সঙ্গে। যদিও কবিতায় প্রকাশিত অনুভূতি ব্যক্তি কবির, তবু তা দেশ ও জাতির অনুভবের সঙ্গেই হয়েছে সম্পৃক্ত। বস্তুত, মুক্তিযুদ্ধের কবিতা কেবল সমকালের সঙ্কট ও প্রত্যয়কে তুলে ধরেনি তা বাংলাদেশের কাব্যধারায় নতুন মূল্যবোধকেও সঞ্চারিত করেছে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: