ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

কেক কেটে বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা আবাহনীর

প্রকাশিত: ১১:৫৬, ১৮ মার্চ ২০২০

কেক কেটে বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা আবাহনীর

মিথুন আশরাফ ॥ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ছিল মঙ্গলবার। কেক কেটে আবাহনীর কোচ, ক্রিকেটাররা বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগের দ্বিতীয় রাউন্ড স্থগিত হয়েছে। আজ ও বৃহস্পতিবার খেলা হওয়ার কথা ছিল। তা স্থগিত করা হয়েছে। এরপর যদি শুরু হয় এ জন্য ক্রিকেটাররা মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের একাডেমি ভবন মাঠে অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছেন। সেখানেই বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা জানিয়ে আবাহনীর কোচ ও ক্রিকেটাররা কেক কাটেন। আবাহনীর কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন বলেন, ‘এটাকে (আবাহনীকে) শেখ কামালের ক্লাব বলা হয়। তিনিই এই ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা। এর সঙ্গে তার বাবা, বঙ্গবন্ধুর নাম জড়িত। শুধু আবাহনী নয়, পুরো বাংলাদেশের সঙ্গেই জাতির পিতার নাম জড়িত। স্বাধীনতার ক্ষেত্রে তার অবদান কি অপরিসীম এটা তো আমরা সবাই জানি। আজ (মঙ্গলবার) তার শততম জন্মদিন। আমাদের ক্লাবের পক্ষ থেকে তাকে ট্রিবিউট। এটুকুই আমরা করতে চেয়েছিলাম।’ সঙ্গে যুদ্ধের সময় নিজের কিছু স্মৃতিও সামনে তুলে ধরেন আবাহনী কোচ। তিনি বলেন, ‘অনেক ছোট ছিলাম। জানি না। তখন তো থমথম একটা অবস্থা ছিল দেশের। আমার তখন চার বছর বয়স। আমার মনে নেই। আমি বলতে পারব না আসলে। যখন আমি বড় হই তখন রেসকোর্সের যে ভাষণটা সেটা আমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ আমি মনে করি। দেশ স্বাধীন করার জন্য নেমেছো, যা আছে তা নিয়ে নামো-এটা আসলে। তার কথায় আমরা বিনা অস্ত্রে যুদ্ধ করি, দেশ স্বাধীন করি, এর থেকে বড় পাওয়া কিছু হয় না আসলে। এটা সবচাইতে বড় অর্জন। কা-ারি তিনি, রূপকার তিনি। তিনিই সেই স্বাদ দিয়েছেন। তিনিই শ্রেষ্ঠ বাঙালী, জাতির পিতা। ওনার তুলনা, অবদান আমরা কারও সঙ্গে করতে পারি না। সুতরাং উনার সেই সক্ষমতা ছিল। উনি ছিলেন বলেই হয়তো আমরা স্বাধীন হয়েছি। আমি কোন রাজনীতি বুঝি না, আমি বুঝি রেসকোর্স-এর ময়দান থেকে ওনার ডাকটা। জাতির উদ্দেশে যে ভাষণটা। সেটা খুব অনুপ্রেরণামূলক।’ লীগের দ্বিতীয় রাউন্ড স্থগিত হয়েছে। তবে সরকার থেকে নির্দেশ আছে ৩১ মার্চ পর্যন্ত কোন ঘরোয়া খেলা নয়। তাতে করে সরকারের নির্দেশ মানতে হলে সেই সময় পর্যন্ত খেলা বন্ধ রাখতেই হবে। লীগ নিয়ে খালেদ মাহমুদ সুজন বলেন, ‘কাল (আজ) আমাদের খেলা ছিল। সেটা হবে না। আমরা খেলতে চাই। ছেলেদের সঙ্গে আমি কথা বলেছি। সবাই খেলতে চায়। জানি যে করোনার একটা বিপদ আছে। এখানে একাডেমিতে আমরা যতটুকু নিরাপদ, বাইরে ছেলেরা যখন যাবে, ওরা তত নিরাপদ না। আর প্রিমিয়ার লীগ যদি বন্ধ হয়ে যায়, আর যদি শুরু না করা যেতে পারে। স্বাভাবিকভাবেই সামনে রোজার মাস। তখন ঠিকমতো শেষ করতে পারে কিনা এই ব্যাপারও থাকবে। তারপরও এটা যেহেতু সরকারের সিদ্ধান্ত, এটাকে প্রাধান্য দিতেই হবে। যত তাড়াতাড়ি মাঠে যাওয়া যায় ভাল হবে।’ সুজন আরও বলেন, ‘ছেলেরা খেলতে চায়। আমি ছেলেদের এখান থেকে ছাড়তে চাই না। কেননা যখনই ওদের ছাড়ব ওরা ওদের দেশের বাড়িতে যেতে চাইবে। পাবলিক গাড়ি ব্যবহার করবে। সেটা কতটা সুরক্ষিত? আপনি তো সবাইকে চেনেনও না। কেউ যদি আক্রান্ত হয় তাহলে তো খারাপই হবে ওদের জন্য। আমরা চাই ওদের এখানে রাখতে। দেখা যাক, বোর্ড থেকে কি সিদ্ধান্ত আসে। কখন খেলা শুরু হয় দেখতে হবে। আর খেলা শুরু না হলে ওদের প্রতি বার্তা থাকবে পাবলিক গাড়ি ওরা যত এড়িয়ে যাবে ততই ভাল। দেশের বাড়িতে এত লোক বিদেশ থেকে এসেছেন ওদের তো আমরা আর চিনি না। তারা কোথা থেকে এসেছে এটাও জানি না। এখানে যে করোনাভাইরাসের সম্ভাবনা নেই সেটা আমরা বলতে পারি না। এখানে কিন্তু আমরা অনেক নিরাপদ আছি এখন পর্যন্ত। আমরা তো মাঠের মানুষ, আমরা চাই খেলা হোক। এটা খেলার সিজন। পরে তো বৃষ্টি হবে। কষ্ট হবে খেলতে। আশাকরি সব ঠিক হয়ে যাবে। আর করোনাভাইরাসের যে ভয়াবহতা চলছে সেটা থেকে সবাই মুক্তি পাক এটাই আশা করছি। সব স্বাভাবিক হয়ে আসবে, খেলা মাঠে ফিরবে এটাই আশাকরি।’ সুজন খেলা চালু করার পক্ষেই যেন কথা বললেন। তিনি জানান, ‘এরা সবাই পেশাদার, আমি মনে করি। বিশেষ করে আবাহনীর ওরা। ফিটনেসের কাজটা, যেহেতু একাডেমিতেই থাকে, মাঠ হয়তো ব্যবহার করতে পারব। যদিও আগামী দুইদিন আমরা মাঠ ব্যবহার করব না। এছাড়া জিম আছে, মাঠে দৌড়াদৌড়ির ব্যবস্থা আছে, আমাদের সবই আছে। আমাদের চাপ দিতে হবে না। ওরাই জানে ওদের ফিটনেসের লেভেলটা নিয়ে। যেহেতু সামনে ম্যাচ আছে, ফিট থাকতে হবে। ওরা রান করতে চাইবে। সেক্ষেত্রে আমি বলব ওরা অবশ্যই ফিট থাকবে। করোনা বা সবকিছু মিলিয়েই বলছি, আমাদের তো একদম বসে থাকলে হবে না। মাঠে তো দেখলেন আমরা কয়টা লোক থাকি। কোট-কাচারি তো এখনও বন্ধ হয়নি। ওখানে তো লক্ষ্য লক্ষ্য মানুষ থাকে। এখানে যদি ভয়াবহতা না হয়, আর ক্রিকেট তো টাচিং গেম না। বর্তমান প্রিমিয়ার লীগে মানুষও হয় না। গুটি কয়েক মানুষ আসে, এক শ’ দেড় শ’ মানুষ আসে। ওরা অনেক দূরে গ্যালারিতে, প্লেয়ারদের কাছে তো আর আসতে পারে না। সেরকমভাবে আমরা যদি ব্যবস্থা করি বা সরকার থেকে অনুমতি পাই তাহলে শুরু করা উচিত বলে আমি মনে করি।’
×