ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ দিয়ে এশিয়া কাপ শুরু আজ

প্রকাশিত: ০৪:৩০, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ দিয়ে এশিয়া কাপ শুরু আজ

মিথুন আশরাফ ॥ টি২০তে আচ্ছন্ন এখন ক্রিকেট। এশিয়া কাপও সেই টি২০’র ছোঁয়া থেকে বাঁচতে পারেনি। আজ যে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে এশিয়া কাপ শুরু হচ্ছে, সেটির সব খেলাও হবে টি২০তেই। এশিয়া কাপে এ ফরমেটে প্রথমবারের মতো খেলা হবে। তাই বলা চলে, টি২০ ফরমেটের প্রথম এশিয়া কাপ শুরু হচ্ছে আজ। আর এ টুর্নামেন্টে অংশ নিচ্ছে স্বাগতিক বাংলাদেশসহ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও বাছাইপর্ব উতরে আসা সংযুক্ত আরব আমিরাত। এ টুর্নামেন্টকে আবার টি২০ বিশ্বকাপের প্রস্তুতি হিসেবেই নেয়া হচ্ছে। এ পাঁচ দল একে অপরের বিপক্ষে খেলবে। দুটি দল উঠবে ফাইনালে। যে দুটি দল পয়েন্ট তালিকার সেরা দুইয়ে থাকতে পারবে, ৬ মার্চ টুর্নামেন্টের শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে অংশ নেবে তারা। সেই ফাইনালে ওঠার জন্য আজ থেকেই মাঠে নেমে পড়ছে বাংলাদেশ ও ভারত জাতীয় ক্রিকেট দল। দুই দলেরই লক্ষ্য জয়। বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা যেমন মনে করেন, নিজেদের দিনে যে কোন কিছুই হতে পারে। ইঙ্গিত জয়ের প্রত্যাশা করার দিকেই। ভারতকে সেরা দল বলে মাশরাফি জানান, ‘ভারত বিশ্বের অন্যতম সেরা একটি দল। ওদের হারাতে গেলে আমাদের তিন বিভাগেই আপ টু মার্ক থাকতে হবে। আমরা আত্মবিশ্বাস নিয়ে ম্যাচটি খেলতে পারি। ফল কি হবে সেটা নিয়ে চিন্তা করার থেকে ভাল খেলা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সেটাই চিন্তা করছি। আর নিজেদের দিনে যে কোন কিছুই হতে পারে।’ জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে সিরিজ শেষে খুলনাতেই থেকে গেছে বাংলাদেশ দল। অনুশীলন করেছে। এরপর ঢাকায় এসে আবার চট্টগ্রামে প্রস্তুতি সেরেছে। এ নিয়ে মাশরাফি বলেন, ‘সত্যিকার হচ্ছে খুলনা ও চট্টগ্রামে যে ট্রেনিং ক্যাম্পটি করা হয়েছে, সেটা মূলত অনুর্ধ ১৯ বিশ্বকাপের জন্য। আমরা সবার থেকে দূরে যেতে চেয়েছি সেজন্য না। আমরা মাঠ পাইনি বলে সেখানে করেছি। দ্বিতীয় কথা, আমরা ওখানে ব্যক্তিগত ও বিশেষ কিছু অনুশীলন করেছি। যেটা এখানে হলেও করতাম। যেটা হয়েছে আমাদের মনযোগ পুরোপুরি ছিল। আমি আশা করছি আমরা যে প্রস্তুতি নিয়েছি, সেটা মাঠে রূপ দেয়াটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। সেটা করতে পারলে খুব ভালই হবে।’ টি২০তে বাংলাদেশ দুর্বল দল। ভারতের বিপক্ষে দুটি ম্যাচ খেলে দুটিতেই হেরেছে। এবারও কী সেই রকম ঘটবে? না বদলাবে ফল? মাশরাফি বলেছেন, ‘এ মুহূর্তে আমরা একটা জিনিস নিয়ে ভাবতে পারি, ব্যর্থতা নিয়ে না ভেবে ক্রিকেট খেলা। টি২০ পারিনি এটা সত্যি কথা। পারিনি সব সময় ভেবে খেলতে থাকলে কখনই পারব না।’ সঙ্গে মাশরাফি ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডেতে জয়কে পুঁজি করে এগিয়ে যেতে চান, ‘আমরা যেটা চেষ্টা করছি ব্যর্থতা নিয়ে না ভাবা। যেটা আমরা ওয়ানডেতে করে আসছি। আমরা যদি এটা করতে পারি অবশ্যই আমরা ভাল করব। এটা হতে পারে এখন থেকেই। আবার কিছুদিন পরও হতে পারে। এ মুহূর্তে যেটা দরকার মাঠে কি হবে, ব্যর্থ হলে কি হবে; এগুলো না ভেবে খেলা।’ ভারতের এ মুহূর্তের সেরা তারকা ক্রিকেটার বিরাট কোহলি। তিনি এশিয়া কাপকে টি২০ বিশ্বকাপের সেরা প্রস্তুতি হিসেবেই নিচ্ছেন। বলেছেন, ‘বিশ্বকাপ খেলতে নামার আগে এখানে (বাংলাদেশে) খেলব। একই রকম কন্ডিশন। বিশ্বকাপের আগে এশিয়া কাপ খেলা যে কোন দলের জন্যই ভাল সুযোগ। ব্যালেন্স ঠিক করে নেয়ার জন্য ভাল সুযোগ। দলের শক্তির দিক, দুর্বলতা বের করে নেয়ারও টুর্নামেন্ট এটি। অন্য শক্তিশালী দলগুলোর বিপক্ষে নিজেদের ঝালাইও করে নেয়া যাবে।’ টি২০ ফরমেটে যখন এশিয়া কাপ হচ্ছে এবার ভারতেরই শিরোপা জেতার সুযোগ বেশি দেখা হচ্ছে। দলটি অস্ট্রেলিয়া, শ্রীলঙ্কার মতো দলের বিপক্ষে দুর্দান্ত খেলেছে। এবার খেলবে এশিয়া কাপ। টানা টি২০’র মধ্যেই আছে। জয়ও মিলছে। কোহলি বলেন, ‘এশিয়া কাপ সব সময়ই চ্যালেঞ্জিং টুর্নামেন্ট। উপমহাদেশের দলগুলোর একটি ইভেন্ট। এ টুর্নামেন্টটি উপমহাদেশের দলগুলোর বিপক্ষে নিজেদের প্রমাণ করার সুযোগও। এটি খুবই প্রতিযোগিতামূলক টুর্নামেন্টও। ভিন্ন ভিন্ন দলের বিপক্ষে ভিন্ন ভিন্ন স্কিল দেখাতে হয়। যা কাজে লাগে।’ টি২০ বিশ্বকাপের প্রস্তুতির সঙ্গে এ টুর্নামেন্টটিতে ভারত সর্বোচ্চ পর্যায়েও পৌঁছাতে চায়। কোহলিই যেমন বললেন, ‘সবাই জানে ২০ ওভারের খেলায় কী পরিমাণ উজার করে দিতে হয়। ব্যাটিং, বোলিং অথবা ফিল্ডিং, সব বিভাগেই সঠিক কাজটি করতে হয়। আমাদেরও সে কাজটি করতে হবে। ভাল কিছু আদায় করতে হবে।’ সেই ভাল কিছু আদায় করতে হলে ভারতকে এক এক করে সব দলকেই হারাতে হবে। শুরুটা করতে হবে আজ বাংলাদেশকে দিয়েই। এরপর ২৭ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান, ১ মার্চ শ্রীলঙ্কা ও ৩ মার্চ আরব আমিরাতকে হারিয়ে আগে ফাইনালে উঠতে হবে। এরপর শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে জয় তুলে নিতে হবে। ভারত কী পারবে সেই কাজটি করতে? নাকি আজই বাংলাদেশ বাজিমাত করে নেবে। ভারতকে হারিয়ে দিয়ে। ভারতকে হারাতে পারলে এ বছরটিতেও ভারতের বিপক্ষে জয় মিলে যাবে। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের পর ২৬ ফেব্রুয়ারি আরব আমিরাত, ২৮ ফেব্রুয়ারি শ্রীলঙ্কা, ২ মার্চ পাকিস্তানের বিপক্ষে লড়াই করবে বাংলাদেশ। যদি ২০১২ সালের পর আবার বাংলাদেশ ফাইনালে খেলে ফেলে তাহলে কেমন হয়! মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ আগেই বলেছেন, ‘আমরা অবশ্যই লড়াই করব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য।’ বাংলাদেশ কী সত্যিই তা হতে পারবে? আজ ভারতের বিপক্ষে রাত সাড়ে সাতটায় শুরু হওয়া ম্যাচটি শেষ হতেই বোঝা যাবে বাংলাদেশ কত দূর এগিয়ে যেতে পারবে।
×