ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

অতিষ্ঠ জনজীবন

জুবাইল আকন্দ

প্রকাশিত: ২০:৫৪, ২৭ মার্চ ২০২৪

অতিষ্ঠ জনজীবন

অতিষ্ঠ জনজীবন

শহরে প্রতিদিনই মাইকিং, পটকা-বাজি, মিছিল-মিটিং এর স্লোগান, বিয়েবাড়িতে উচ্চশব্দের গান এবং অতিরিক্ত মাত্রায় পরিবহনের হর্ন বাজানো হচ্ছে। এতে দিন দিন শ্রবণশক্তি হারাচ্ছে অনেকে। বিশেষ করে স্কুল-কলেজে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ শব্দদূষণের কবলে পড়েছে। শিশু বয়স্কদের পাশাপাশি রোগীদের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব প্রকট হয়ে উঠেছে। এমনি কি শব্দদূষণের ভয়াবহতা থেকে রক্ষা পাচ্ছেন না ট্রাফিক পুলিশ ও।

শুধু মানুষই নয় জীব বৈচিত্র্যের ক্ষেত্রেও শব্দদূষণ মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। শব্দদূষণে এত খারাপ দিক থাকা সত্ত্বেও এর প্রতিকারের জন্য অদ্যাবধি ব্যাপক কোনো কর্মসূচি সরকারিভাবে গ্রহণ করা হয়নি। অবাধে এ দূষণের মাত্র বেড়ে যাওয়া দেখে মনে হচ্ছে দেশে এ বিষয়টা দেখার কেউ নেই। শব্দদূষণের ব্যাপারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যথেষ্ট সোচ্চার। সংস্থাটি এ ব্যাপারে সতর্কবাণী প্রেরণ করছেন বিশ্বের সমগ্র দেশে।

শব্দদূষণের ক্ষতির দিক চিহ্নিত করতে ইউনিসেফ এবং বিশ্বব্যাংক একাধিকবার গবেষণায় জড়িত হয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, ৩০টি জটিল রোগের অন্যতম কারণ পরিবেশ দূষণ। তার মধ্যে শব্দদূষণ অন্যতম। শব্দদূষণ রোধে মানুষের সচেতনতা বেশি জরুরি। প্রয়োজনের বাইরে হর্ন বাজানো যাবে না, পাশাপাশি অপ্রয়োজনীয় মাইক ও উচ্চ আওয়াজ থেকে বিরত থাকতে হবে। 
শব্দদূষণ বিধিমালা -২০০৬ অনুযায়ী আবাসিক এলাকায় রাত ৯টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত শব্দের মাত্রা ৪৫ ডেসিবেল এবং দিনে ৫৫ ডেসিবেল অতিক্রম করতে পারবে না। বাণিজ্যিক এলাকায় তা যথাক্রমে ৬০ ও ৭০ ডেসিবেল। হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অফিস, আদালতের আশপাশের ১০০ মিটার পর্যন্ত নীরব এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা রয়েছে। সেখানে রাতে ৪০ ও দিনে ৫০ ডেসিবেল শব্দ মাত্রা নির্ধারণ করে দেওয়া আছে।

এই আইনের শাস্তি হিসেবে বলা আছে, আইন অমান্য করলে প্রথমবার অপরাধের জন্য এক মাস কারাদণ্ড বা ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড কিংবা উভয়দণ্ডে এবং পরবর্তী অপরাধের জন্য ৬ মাসের কারাদণ্ড বা ১০ হাজার টাকা অর্থদ- কিংবা উভয়দ-ে দ-িত হওয়ার বিধান থাকলেও বাস্তবে এ আইনের তেমন প্রয়োগ নেই। তাই শব্দদূষণ আইনের সংস্কার প্রয়োজন।

তাই শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক পুলিশকে দায়িত্ব দেওয়া হোক। কারণ তারা সড়কে দায়িত্ব পালন করে। যেহেতু শব্দদূষণের ৬০ শতাংশ যানবাহনের অহেতুক হর্ন বাজানোর কারণে হয়। ট্রাফিক পুলিশ নিয়মিত জরিমানা ও শাস্তি প্রদান করতে পারবে। এতে কিছুটা হলেও মানুষ সচেতন হবে, শব্দদূষণ ও কমবে।
কুয়ালালামপুর, মালয়েশিয়া থেকে

×