
ছবিঃ সংগৃহীত
অবৈধ অভিবাসী ফেরত পাঠানোর নামে ভারত যে পদ্ধতিতে বাংলাদেশে লোক ঠেলে দিচ্ছে, তা নিয়ে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে। প্রতিদিনই ডজন ডজন মানুষকে বাংলাদেশে পুশ-ইন করছে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ), যা নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকা।
বিষয়টি বাংলাদেশ-ভারতের এক সময়কার সুসম্পর্কে চিড় ধরিয়েছে। এপ্রিল মাসে কাশ্মীরের পেহেলগামে জঙ্গি হামলার পর ভারতের নিরাপত্তা অজুহাতে শুরু হয়েছে বিতাড়নের এই প্রক্রিয়া। যাদের কাছে ভারতীয় নাগরিকত্বের যথাযথ প্রমাণ নেই, তাদের বাংলাদেশ কিংবা পাকিস্তানে ঠেলে দিচ্ছে ভারত সরকার।
গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের মে মাস থেকে এ পর্যন্ত দুই হাজারেরও বেশি কথিত অবৈধ অভিবাসীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। ৪,০৯৬.৭ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্তের মধ্যে ৩২০০ কিলোমিটারের বেশি অংশে কাঁটাতার বসানো সত্ত্বেও অনুপ্রবেশ পুরোপুরি বন্ধ হয়নি।
আগের সরকারগুলোর সময়েও পুশ ইন-এর ঘটনা ঘটলেও সেভাবে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। তবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার এ বিষয়ে কড়া অবস্থান নিয়েছে। নাগরিকত্বের সুনির্দিষ্ট প্রমাণ ছাড়া কাউকেই গ্রহণে রাজি নয় বাংলাদেশ।
সম্প্রতি লালমনিরহাট সীমান্তে বিএসএফ ৫৬ জন অভিবাসীকে ছয়টি পৃথক পয়েন্ট দিয়ে পুশ-ইন করার চেষ্টা করলে বাধা দেয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। বিজিবি পরে পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানালেও বিএসএফ তাতে সাড়া দেয়নি।
৮ মে সীমান্ত দিয়ে কয়েকজনকে ঠেলে দেওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে নয়াদিল্লিতে চিঠি পাঠায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে জানান, বাংলাদেশ শুধু তার স্বীকৃত নাগরিকদেরকেই যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ফেরত নেবে।
এদিকে, ভারতের এই কার্যকলাপ নিয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। সীমান্তে উত্তেজনা এড়াতে দ্রুত আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
এই পুশ-ইন পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারলে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জটিলতার মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।
মুমু