সংসদ রিপোর্টার ॥ দেওয়ানি মামলা বিচারের ক্ষেত্রে নিম্ন আদালতের বিচারকদের আর্থিক বিচারিক এখতিয়ার বাড়িয়ে জাতীয় সংসদে ‘দ্য সিভিল কোর্টস (সংশোধন)-২০২১’ বিল পাস হয়েছে। সংশোধিত আইনে আর্থিক বিচারিক এখতিয়ার ক্ষেত্র ভেদে বিদ্যমান আইনের ছয় থেকে সাত গুণ বাড়ানো হয়েছে।
তবে বিলটি পাসের আগে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনসহ দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে বিএনপির দু’জন সংসদ সদস্যের নানা অভিযোগের কড়া জবাব দিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী এ্যাডভোকেট আনিসুল হক। একইসঙ্গে বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরাও বিএনপির অভিযোগকে অসত্য উল্লেখ করে তাদের নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান হওয়ার বিষয়টি সংসদে তুলে ধরেন। এ নিয়ে সংসদে কিছুটা উত্তাপ ছড়ায়।
বুধবার স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া অধিবেশনে বিলটি পাসের প্রস্তাব করেন আইন বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক। পরে বিলটি কণ্ঠভোটে পাস হয়। এর আগে বিলের ওপর দেয়া জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলোর নিষ্পত্তি করেন স্পীকার।
জনমত যাচাই-বাছাই ও সংশোধনী প্রস্তাবের ওপর বক্তব্যে রাখতে গিয়ে বরাবরের মতো বর্তমান সরকারের আমলে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেন বিএনপির সংসদ সদস্যরা। বিল পাসের প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়ে বিএনপির সংসদীয় দলের নেতা মোঃ হারুনুর রশীদ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে নির্বাচনেরা নামে তামাশা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, সংবিধানে বলা আছে সব পর্যায়ে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা প্রশাসন চালাবেন। কিন্তু আজ কী হচ্ছে? নির্বাচনের নামে তামাশা হচ্ছে। প্রহসন হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচন চলছে। সেখানে বহু কেন্দ্র থেকে এজেন্ট বের করে দেয়া হয়েছে। গণমাধ্যামকর্মীদের পাস দেয়া হচ্ছে না। চাইলে এখনই ফোনে দেখাতে পারি।
পাসকৃত বিলে যা রয়েছে ॥ পাস হওয়া বিলের আইনের নতুন বিধান অনুযায়ী একজন সহকারী জজ ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত মূল্যমানের (সম্পত্তি বা অর্থে যে অঙ্কের টাকা নিয়ে বিরোধ) মামলা নিষ্পত্তি করতে পারবেন। আগে এই এখতিয়ার ছিল দুই লাখ টাকা। একইভাবে জ্যেষ্ঠ সহকারী জজের বিচারিক এখতিয়ার চার লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৫ লাখ টাকা এবং আপীল শুনানির ক্ষেত্রে জেলা জজের এখতিয়ার পাঁচ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে পাঁচ কোটি টাকা করা হয়েছে।
পাস হওয়া বিলে পাঁচ কোটি টাকার কম মূল্যমানের কোন মামলায় যুগ্ম জেলা জজ আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে কোন আপীল বা কার্যক্রম হাইকোর্ট বিভাগে বিচারাধীন থাকলে তা জেলা জজ আদালতে স্থানান্তরের বিধান রাখা হয়েছে। আগে পাঁচ কোটি টাকার কোন আপীল হলে হাইকোর্টে যাওয়া লাগলেও আইন সংশোধনের ফলে জেলা জজ সেই আপীল শুনানি করতে পারবেন।