করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সপ্তাহের পর সপ্তাহ লকডাউনে হাঁফিয়ে ওঠা ইউরোপের দেশগুলো নানা প্রক্রিয়ায় নাগরিকদের প্রাত্যহিক জীবনযাত্রা সহজ করার পদক্ষেপ নিচ্ছে। এতে এসব দেশের মানুষ বন্দীদশা থেকে আপাত মুক্তি পেয়ে কিছুটা হাঁফ ছাড়লেও বিধিনিষেধ শিথিলে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকিও চোখ রাঙাচ্ছে। সোমবার নাগাদ করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৪১ লাখ ৪৮ হাজার ছাড়িয়েছে। এর এক-তৃতীয়াংশ সুস্থ হয়ে উঠলেও প্রাণঘাতী এই ভাইরাস নিষ্প্রাণ করেছে ২ লাখ ৪৮ হাজার জনকে। এর মধ্যে ঝুঁকি নিয়েও ভেঙ্গে পড়া অর্থনীতি সচলে যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ইতালি, স্পেনসহ বিভিন্ন দেশ ধীরে ধীরে যেভাবে অবরুদ্ধ অবস্থা শিথিল করছে, তা এখানে তুলে ধরা হলো। -খবর বিবিসি অনলাইনের।
যুক্তরাজ্যে ‘স্টে হোম’ থেকে ‘স্টে এলার্ট’ ॥ কোভিড-১৯ রোগে ৩২ হাজার মানুষ মারা গেছে যুক্তরাজ্যে; তাই সবাইকে বলা হয়েছিল ঘরে থাকতে। কিন্তু পরিস্থিতির উন্নতি দেখে সাত সপ্তাহ পর বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল করে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলছেন, এখন সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ থেকে মুক্ত হয়ে কাজে ফেরা জনসন ব্রিফিংয়ে অর্থনীতি সচল করতে নতুন পরিকল্পনা তুলে ধরেন।
লকডাউন শিথিল হতেই সংক্রমণ বাড়ছে জার্মানিতে ॥ ক্ষুদে শিশুদের স্কুলগুলো খুলেছে, বড় শিক্ষার্থীদের যে সব স্কুলে পরীক্ষা চলছে, তারাও খুলতে পারবে। দুই বাড়ির মানুষ এখন একসঙ্গে মিলিত হতে পারবেন। তবে বড় ধরনের জমায়েত বা উৎসবের নিষেধাজ্ঞা আগামী অগাস্টের আগে উঠছে না।
ফ্রান্সে এখন বের হতে নেই মানা ॥ করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল ফ্রান্স; দেশটিতে পৌনে ২ লাখ আক্রান্তের মধ্যে ২৬ হাজার জন মারা গেছে। নাজুক পরিস্থিতিতে অবরুদ্ধ অবস্থা ব্যাপক কঠোর ছিল ফ্রান্সে; তখন কারও বাইরে বের হতে হলে অনলাইনে আবেদন করতে হতো, তার অনুমোদন মিললে তার প্রিন্ট কপি নিয়ে তবেই কেবল বের হওয়া যেত।
আংশিক স্পেন খুলেছে ॥ ইউরোপের বিপর্যস্ত আরেক দেশ স্পেন মূলত দুই ভাগ হয়ে গেছে বিধি নিষেধ তোলার ফলে। বেশিরভাগ এলাকায় বিধিনিষেধ শিথিল হলেও মাদ্রিদ, বার্সেলোনা, গ্রানাডা, মালাগাসহ উত্তর-পূর্বের কিছু অঞ্চলে কঠোর লকডাউনই থাকছে। এক মাসের বেশি সময় গড়িয়ে শিশুদের বাইরে বের হওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা ওঠার পর ২৬ মে থেকে স্কুলগুলোও আংশিকভাবে খুলছে।
ইতালিতে এখন শবযাত্রা করা যাচ্ছে ॥ করোনাভাইরাসে একের পর এক মৃত্যুতে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৩০ হাজার। মহামারীকালে মারা যাওয়া এই মানুষগুলোকে শেষ বিদায়ও দিতে পারেননি স্বজনরা। পরিস্থিতির উন্নতিতে শবযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা এখন তুলে নেয়া হয়েছে ইতালিতে। তবে এতে ১৫ জনের বেশি থাকতে পারবে না। ইতালির নাগরিকরা এখন ঘর থেকে বের হতে পারছেন। আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে যেতেও পারছেন না। তবে এক অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে যাওয়ায় বিধি-নিষেধ এখনও রয়েছে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: