ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

আন্দোলনের সাহস ও সক্ষমতা বিএনপির নেই ॥ কাদের

প্রকাশিত: ১০:০৩, ২৮ জুন ২০১৯

 আন্দোলনের সাহস ও সক্ষমতা বিএনপির নেই ॥ কাদের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আন্দোলন করার সাহস ও সক্ষমতা বিএনপির নেই এমন মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, যদি আপনাদের সাহস থাকে তাহলে আন্দোলন করে খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে আসুন। তাতে কোন আপত্তি নেই। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি বিরোধী দলের চলমান রাজনৈতিক অবস্থা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, যোগাযোগ খাত, উন্নয়ন প্রকল্পসহ নানা বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করেন। সরকার হস্তক্ষেপ না করলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কারান্তরীণ খালেদা জিয়ার জামিনে মুক্তির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, এখানে বিচার ব্যবস্থা স্বাধীন। কোন প্রকার বাধা বা হস্তক্ষেপ সরকার আগেও করেনি, এখনও করবে না। যদি তাদের সাহস থাকে, সক্ষমতা থাকে আন্দোলন করে মুক্তি নিয়ে আসুক। আমাদের কোন আপত্তি নেই, যেভাবেই আনতে পারে। খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে রাজনীতি করা ঠিক নয়। কিন্তু খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে কোন আন্দোলন তো বিএনপি আজ পর্যন্ত করতে পারেনি। পাঁচ শ’ মানুষের একটা মিছিলও হয়নি, এটা কি তাদের দুর্বলতা নয়। বিএনপির আন্দোলন করার সাহস ও সক্ষমতা কোনটাই নেই। তারা তাদের বিবেকের আদালতে প্রশ্ন করুক, আসলে তারা একদিকে নির্বাচনে ব্যর্থ, অন্যদিকে আন্দোলনেও ব্যর্থ। দাবি আদায়ে তাদের কোন সফলতা নেই। বাংলাদেশে এরকম ব্যর্থ বিরোধীদল ইতিহাসে আমার জানামতে এর আগে কখনও দেখিনি। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে দেশে তো ৫০০ মানুষের একটা মিছিল হয়নি। কিন্তু মওদুদ সাহেব তো বড় বড় কথা বলেন। নিজেরাই যখন কোন্দলে জর্জরিত, আন্দোলনে ব্যর্থ তখন অন্যের ওপর দোষ চাপিয়ে কি লাভ। নিজেদের দিকে তাকান। স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা। খালেদার মুক্তির বিষয়ে আমরা আগেও হস্তক্ষেপ করিনি। সরকার এখনও তা করবে না। খালেদার অসুস্থতা নিয়ে বিএনপি রাজনীতি করে কিন্তু তার মুক্তি নিয়ে তো বিএনপি কিছুই করতে পারে না। রাজনৈতিক কোন সহিংসতা আমাদের দেশে হচ্ছে না দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, রাজনীতি যারা করে-সংঘাতটা কখন হয়? যারা সরকারে আছে তাদের সঙ্গে। কিন্তু সেরকম কোন পরিস্থিতি বাংলাদেশে ঘটেনি। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় সংসদে বিরোধী দলের নেতা কে হতে পারেন এমন প্রশ্নে কাদের বলেন, এটা জাতীয় পার্টির অভ্যন্তরীণ বিষয়। এরশাদ সাহেব এখনও জীবিত, তার উত্তরাধিকারী কে হবেন সেটা তো আমাদের বিষয় নয়। আওয়ামী লীগ এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার কে। এটা একান্তই জাপার নিজস্ব বিষয়। তারাই সিদ্ধান্ত নেবে সংসদে ও দলে কে নেতৃত্ব দেবেন। বরগুনায় প্রকাশ্য খুনের ঘটনার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে কাদের বলেন, এটা একটা নৃশংস হত্যাকান্ড, মর্মান্তিক ঘটনা। আমি পুলিশ সোর্সে ও গণমাধ্যমে দেখলাম প্রেমঘটিত ইস্যুতে ব্যক্তিগত বিদ্বেষের প্রকাশ ঘটেছে খুব নগ্নভাবে। ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, বাকিদের গ্রেফতারের প্রক্রিয়া চলছে। প্রধানমন্ত্রী যে কোন মূল্যে খুনীদের গ্রেফতার ও বিচারের আওতায় আনার নির্দেশ দিয়েছেন, এ ব্যাপারে পুলিশ কঠোর অবস্থানে। যারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান চলছে। দু’একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনায় সামগ্রিকভাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে তাকি বলা যায়? রূপগঞ্জে আওয়ামী লীগ নেত্রী ও বরগুনা হত্যাকা- দুটিই বিচ্ছিন্ন ঘটনা। তাছাড়া দুটি ঘটনার একটিও রাজনৈতিক নয়। ঘটনাচক্রে রূপগঞ্জে নিহত নারী একজন রাজনৈতিক দলের সদস্য। রাজনৈতিক কারণে আইনশৃঙ্খলার অবনতি দেশের কোথাও ঘটেনি। বিরোধী দল আছে তারা দেশে এমন কোন পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারেনি যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হবে। বরং তারা নিজেরা নিজেদের সঙ্গে সংঘাতে লিপ্ত। তাদের দলীয় লোকজন নিজেদের দলের অফিসে তালা দিচ্ছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিচ্ছিন্ন ঘটনা পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোতেই ঘটে। বাংলাদেশ কোন বিচ্ছিন্ন দ্বীপ নয়। সামাজিক অস্থিরতা উন্নত দেশেও আছে। আমরা সবকিছুর বাইরে নই। আমাদের দেশে কোন কিছু ঘটবে না। তিনি বলেন, বিশ্বজিত হত্যার বিচার হয়েছে। এই হত্যাকা-ে সরকার কাউকে ছাড় দেয়নি। ছাত্রলীগের কর্মীও ছাড় পায়নি। এখন যেসব ঘটনা ঘটছে এর বিচার হবে। বিচার হয়নি তা বলা ঠিক নয়। পদ্মা সেতুর ৭০ ভাগ অগ্রগতির কথা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ১৪তম স্প্যান বসানোর প্রক্রিয়া চলছে। খারাপ আবহাওয়ার জন্য স্প্যানটি বাসানো যায়নি। বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। সেতু নির্মাণকাজে বাধা নেই। সয়েল কন্ডিশন খারাপ থাকায় এক সময় অনিশ্চয়তার মধ্যে ছিলাম। এখন সব বাধা কেটেছে। সেতুর সার্বিক অগ্রগতিতে তিনি সন্তুষ্ট বলেও জানান।
×