চবি সংবাদদাতা ॥ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নির্বাচন আগামী ২৮ মার্চ। সোমবার অগ্রিম ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে। এতে অংশগ্রহণ করেনি বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত সাদা দল। গত ৩৩ বছরে প্রথমবারের মতো এমন ঘটনা ঘটল। তবে গতবছর বিএনপিপন্থ’ী একদল শিক্ষক সাদা দল থেকে বেরিয়ে গিয়ে ‘জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম’ এর ব্যানারে নির্বাচন করেছিলেন। সেই বেরিয়ে যাওয়া দলটিই এবার আওয়ামী লীগ সমর্থিত হলুদ দলের বিপক্ষে পূর্ণ প্যানেলে নির্বাচন করছে। তবে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবেও নেই জামায়াতের অংশগ্রহণ। ফলে ৩৩ বছর পর জামায়াত ছাড়াই শিক্ষক সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে চবিতে। অথচ জামায়াত একসময় এখানে শক্তিশালী অবস্থানে ছিল। সাদা দলের প্যানেলে জামায়াতপন্থী শিক্ষকরা যথেষ্ট প্রভাবশালী ছিলেন।
এদিকে সাদা দলের অংশগ্রহণ না থাকার কারণে শিক্ষকদের বিরাট একটি অংশ নির্বাচন থেকে বিরত থাকছেন। গত নির্বাচনে সাদা দল থেকে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোঃ আতিয়ার রহমান। কী কারণে সাদা দল এবারের নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দেশে সামগ্রিকভাবে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নেই। তাই দলের সিদ্ধান্ত হচ্ছে নির্বাচন না করা।’ তবে চবিতে গত ৬টি নির্বাচনে টানা পরাজয় বরণ করে আসছে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত সাদা দল। এবার সাদা দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করায় সপ্তমবারের মতো নিশ্চিত বিজয়ের অপেক্ষায় রয়েছে হলুদ দল।
উল্লেখ্য, শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদের ১১টি পদের বিপরীতে এবারের নির্বাচনে ২৪ জন প্রার্থী মননোয়নপত্র দাখিল করেছেন।
ফলে হলুদ দলের ১১ জন এবং জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের ১১ জন প্রার্থী রয়েছেন। এর বাইরে ২ জন স্বতন্ত্র প্রার্থীও রয়েছেন। হলুদ দল মনোনীত প্রার্থীরা হলেন সভাপতি পদে আইন বিভাগের অধ্যাপক মোঃ জাকির হোসেন, সাধারণ সম্পাদক পদে জামাল নজরুল ইসলাম গণিত ও ভৌত বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রের অধ্যাপক ড. অঞ্জন কুমার চৌধুরী, সহ-সভাপতি পদে যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সহিদ উল্লাহ, যুগ্ম সম্পাদক পদে প্রাণ রসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম এবং কোষাধ্যক্ষ পদে এ্যাকাউন্টিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মুহাম্মদ আলী আরশাদ চৌধুরী। এছাড়া ছয়টি সদস্য পদে এ্যাকাউন্টিং বিভাগের অধ্যাপক ড. রনজিত কুমার চৌধুরী, অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবুল হোসাইন, ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক বকুল চন্দ্র চাকমা, কম্পিউটার সায়েন্স এ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. ইকবাল আহমেদ, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সুলতানা সুকন্যা বাশার এবং মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাজহারুল ইসলাম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম মনোনীত প্রার্থীরা হলেন সভাপতি পদে মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তৈয়ব চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক পদে উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন, সহ-সভাপতি পদে সমুদ্রবিদ্যা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মোঃ শাহাদত হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক পদে সমুদ্রবিদ্যা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান চৌধুরী এবং কোষাধ্যক্ষ পদে নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন। এছাড়া ছয়টি সদস্য পদে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আবু নছর মুহাম্মদ আব্দুল মাবুদ, ফিশারিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ আশরাফুল আজম খান, রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এজিএম নিয়াজ উদ্দিন, উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী মোঃ মেজবাউল আলম, রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. জয়নাল আবেদীন সিদ্দিকী, সমুদ্রবিদ্যা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মোঃ শফিকুল ইসলাম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে সাধারণ সম্পাদক পদে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোঃ শাহ আলম এবং সদস্য পদে নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোক্তার আহমেদ চৌধুরী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। শাহ আলম সাদা দলের ও মোক্তার আহমেদ হলুদ দলের সমর্থক হিসেবে পরিচিত।