ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

বিএনপি অংশ নিলে মহাজোটে নির্বাচন

৩শ’ আসনে জাপার ৯শ’ প্রার্থীর তালিকা এরশাদের হাতে

প্রকাশিত: ০৫:১০, ৭ জুলাই ২০১৮

     ৩শ’ আসনে জাপার ৯শ’ প্রার্থীর তালিকা এরশাদের হাতে

রাজন ভট্টাচার্য ॥ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ৩০০ আসনে জাতীয় পার্টির ৯০০ প্রার্থীর তালিকা দলের চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের হাতে রয়েছে। এক হাজার ২০০ প্রার্থীর তালিকা তৃণমূল থেকে কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছিল। যাচাই বাছাই শেষে আসনপ্রতি তিনজন করে প্রার্থী ঠিক করে এই তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩০০ সম্ভাব্য প্রার্থীকে মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরুর প্রাথমিক নির্দেশ দিয়েছেন এরশাদ। নির্বাচন করার ক্ষেত্রে কোন প্রার্থীর বাধ্যবাধকতা থাকলে প্রতি আসনে পরবর্তী জনপ্রিয় ব্যক্তি মনোনয়ন পাবেন বলে জানিয়েছেন দলের নীতি নির্ধারকরা। ভোটারদের কাছে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিকে মনোনয়ন দিয়ে বেশি আসনে জয়ী হওয়ার কৌশল নির্ধারণ করছে বিরোধী দল। তবে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলে আবারও এরশাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের মহাজোট গঠনের বেশি সম্ভাবনা রয়েছে। মহাজোট গঠন হলে এক শ’ আসন চায় জাতীয় পার্টি। এবারের চেয়ে মন্ত্রীও বেশি চায় দলটি। যদিও দলের জনপ্রিয়তা খুব একটা না থাকলেও দেশে এখন তৃতীয় জনপ্রিয় দল হিসেবে জাপাকে বিবেচনা করা হয়। দলের নীতি নির্ধারকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এককভাবে নির্বাচনে অংশ নিলে ৩০০ প্রার্থী দেবে জাতীয় পার্টি। দলের নেতারা জানিয়েছেন, আগামী সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে রাজনৈতিক নানা বিষয়ে সমঝোতা প্রক্রিয়া চলমান। জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগ জোটগতভাবেই আগামীতে নির্বাচন করবে। এ ক্ষেত্রে জাতীয় পার্টি ১০০ জন এমপি এবং ১০ জন মন্ত্রী চাইবে। পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, আমাদের একটাই লক্ষ্য আগামী নির্বাচনের মধ্যদিয়ে জাতীয় পার্টিকে ক্ষমতায় নেয়া। প্রায় প্রতিটি আসনেই তিন থেকে চারজন প্রার্থী রয়েছে। আমরা তৃণমূলের পক্ষ থেকে যোগ্য প্রার্থীদের নাম সংগ্রহ করে তালিকা প্রস্তুত করেছি। নির্বাচনে আবারও আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট হবে কী না জানতে চাইলে বলেন, ইতোমধ্যে এইচ এম এরশাদের নেতৃত্বে ৫৯টি রাজনৈতিক দলের সম্মিলিত জাতীয় জোট করেছি। জাতীয় নির্বাচনের আগে চূড়ান্ত বিবেচনায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা পার্টির চেয়ারম্যানকে দিয়েছে দলের সর্বোচ্চ পর্ষদ। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আমরা সম্ভাব্য প্রার্থীদের এলাকায় কাজ করার নির্দেশ দিয়েছি। তারা মানুষের সঙ্গে কাজ করছেন। আশা করি জাতীয় নির্বাচনে এর সুফল আমরা পাব। জানা গেছে, সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দুই রকম প্রস্তুতি নিচ্ছে জাতীয় পার্টি। প্রথমত, আওয়ামী লীগের সঙ্গে আবারও জোট গঠন করে নির্বাচনে অংশ নেয়া। যদি ১০০ আসন জাপাকে ছাড় দেয় আওয়ামী লীগ তাহলে এখান থেকে জাতীয় পার্টির নেতৃত্বাধীন শরিক দলগুলোকে চারটি আসন দেয়া হবে। দ্বিতীয়ত, বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নিলে জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতা করে ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেবে। বর্তমানে জাতীয় পার্টি ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেয়ার প্রস্তুতি নিয়ে দল গোছাচ্ছে। নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে এলে তখন তারা মহাজোটে থেকে, নাকি এককভাবে নির্বাচন করবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। আগামী মাসের মধ্যে সম্ভাব্য প্রার্থীর আরেকটি খসড়া তালিকা তৈরি করা হবে। জাতীয় পার্টি সূত্র জানায়, এরশাদ আশা করেন ন্যূনতম ৭০টি আসন আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টিকে ছাড় দেবে। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টিকে ৭০টি আসনে ছাড় দিতে চেয়েছিল। কিন্তু নির্বাচনের আগ মুহূর্তে এসে এরশাদ আকস্মিক সরে যাওয়ায় জাতীয় পার্টি এটি অর্জন করতে পারেনি। অনেকেই দলীয় প্রধানের নির্দেশ অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেন। শেষ পর্যন্ত ৩৪টি আসন পায় জাপা। সংরক্ষিত আসন মিলিয়ে এখন জাপা ৪০ এমপি নিয়ে সংসদের বিরোধী দল। দলের নির্ভরযোগ্য অনেক নেতাই জানিয়েছেন, প্রার্থীদের তালিকা দেখে এরশাদ নিজেও বিভিন্ন আসনে খোঁজ খবর নিচ্ছেন। যাচাই বাছাই করছেন তৃণমূল থেকে পাঠানো প্রার্থীদের জনপ্রিয়তা। তারা বলছেন, নির্বাচনের আগে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে স্থানীয় ভাবে জনপ্রিয় অনেক নেতাই জাতীয় পার্টিতে যোগ দিতে পারেন। এ ক্ষেত্রে শেষ পর্যন্ত আবারও প্রার্থী তালিকায় বেশ পরিবর্তন আসতে পারে।
×