ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

কাল জাতীয় যন্ত্রসঙ্গীত উৎসব শুরু হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭

কাল জাতীয় যন্ত্রসঙ্গীত উৎসব শুরু হচ্ছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে আগামীকাল সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে ‘জাতীয় যন্ত্রসঙ্গীত উৎসব ২০১৮’। নতুন বছরের শুরুতে এই প্রথমবারের মতো এ উৎসবের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। এ উপলক্ষে একাডেমির সেমিনার কক্ষে শনিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলন হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, সচিব জাহাঙ্গীর হোসেন চৌধুরী, চারুকলা বিভাগের পরিচালক শিল্পী মনিরুজ্জামান প্রমুখ। এতে জানানো হয়, একাডেমি প্রাঙ্গণের নন্দন মঞ্চে বিকেলে দশ দিনব্যাপী এ উৎসবের উদ্বোধন করবেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি থাকবেন স্বনামধন্য গিটার বাদক এনামুল কবির। সভাপতিত্ব করবেন একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। স্বাগত বক্তব্য রাখবেন সরকারী সঙ্গীত কলেজের শিক্ষক ও উৎসবের কো-অর্ডিনেটর কমল খালিদ। লিয়াকত আলী লাকী বলেন, বাঙ্গালীর যাপিত জীবনের সঙ্গে প্রায় ছয়শত রকমের বাদ্যযন্ত্র ব্যবহারের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস আছে। কিন্তু বর্তমান সঙ্গীতে পাশ্চাত্য যন্ত্রের অতিমাত্রিক ব্যবহার, অপর দিকে দেশীয় যন্ত্রের প্রতি উদাসীনতার ফলে হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের ঐতিহ্যবাহী বাদ্যযন্ত্র। এর সঙ্গে সংযুক্ত যন্ত্রশিল্পীবৃন্দ দীর্ঘদিন চর্চা করেও বাদ্যযন্ত্র পরিবেশনার সুযোগের অভাবে চর্চার আগ্রহ হারাচ্ছে। অন্যদিকে ক্রেতাও সঠিকমূল্য না পাওয়ায় বাদ্যযন্ত্রের প্রস্তুতকারক ও মেরামতকারীরা পেশা পরিবর্তন করতে বাধ্য হচ্ছে। বাংলার বাদ্যযন্ত্র ও যন্ত্রসঙ্গীতকে রক্ষা ও মানসম্মত চর্চাসহ নতুন প্রজন্মকে আমাদের দেশীয় বাদ্যযন্ত্রে আগ্রহী করে তোলা এই উৎসবের মূল লক্ষ্য। প্রতিদিন ৪ থেকে ৭ টি জেলার যন্ত্রশিল্পীবৃন্দের অংশগ্রহণ ও বাদ্যযন্ত্র পরিবেশনাসহ জাতীয় শিল্পীদের পরিবেশনা থাকবে। উৎসবের ৬ষ্ঠ দিন ৬ জানুয়ারি বেলা ১১টায় জাতীয় নাট্যশালার সেমিনার কক্ষে ‘বাংলা ও বাঙ্গালীরবাদ্যযন্ত্র’ শীর্ষক সেমিনার হবে। কথামালায় আবদুল আলীম স্মরণ ॥ কথামালায় সঙ্গীতশিল্পী আবদুল আলীমকে স্মরণ করা হয় জাতীয় জাদুঘরে শনিবার বিকেলে। বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন গীতিকবি মোহাম্মদ রফিকুজ্জামান। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন দৈনিক ইত্তেফাকের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক তাসমিমা হোসেন ও লোকশিল্পী আজগর আলীম। সভাপতিত্ব করেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক। প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোহাম্মদ রফিকুজ্জামান বলেন, বাংলা লোক সঙ্গীতের এই অমর শিল্পী লোক সঙ্গীতকে অবিশ্বাস্য এক উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন, যেখানে জীবন জগত এবং ভাববাদী চিন্তা একাকার হয়ে গিয়েছিল। বাল্যকাল থেকেই আব্দুল আলীম সঙ্গীতের প্রবল অনুরাগী। অর্থনৈতিক অনটনের কারণে কোনো শিক্ষকের কাছে গান শেখার সৌভাগ্য তার হয়নি। তিনি অন্যের গাওয়া গান শুনে গান শিখতেন; আর বিভিন্ন পালা পার্বণে সেগুলো গাইতেন। এভাবে পালা পার্বণে গান গেয়ে তিনি বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেন। তাসমিমা হোসেন বলেন, অল্প বয়স হতেই বাংলার লোকসঙ্গীতের এই অমর শিল্পী গান গেয়ে নাম করেছিলেন। মাত্র তেরো বছর বয়সে ১৯৪৩ সালে তার গানের প্রথম রেকর্ড হয়। এত অল্প বয়সে গান রেকর্ড হওয়া সত্যিই বিস্ময়কর। পরে তা আর বিস্ময় হয়ে থাকেনি, তিনি হয়ে উঠেছিলেন বাংলার লোক সঙ্গীতের এক অবিসংবাদিত-কিংবদন্তি। আজগর আলীম বলেন, দেশভাগের পর আবদুল আলীম ঢাকা এসে বেতার-শিল্পীর মর্যাদা লাভ করেন। তিনি দেশ বিদেশে বাংলা লোকসঙ্গীতের পরিচয় তুলে ধরেন। তিনি মারফতি-মুর্শিদি গানে ছিলেন অদ্বিতীয়। তার দরদভরা কণ্ঠে মরমিধারার এ গান অতি চমৎকারভাবে ফুটে উঠত। অনুষ্ঠানে সভাপতির ভাষণে মফিদুল হক বলেন, আব্দুল আলীমের কণ্ঠোপযোগী গান রচনা করেছেন পল্লীকবি জসীমউদ্দীন, কবি আজিজুর রহমান, আবদুল লতিফ, খান আতাউর রহমান, ওস্তাদ মোমতাজ আলী খান, কানাই লাল শীল, সিরাজুল ইসলাম, শমশের আলীসহ অনেকে। নিজস্ব গায়কী ও সুর-মাধুর্যে গুণে আব্দুল আলীম ছিলেন একজন অনন্যসাধারণ শিল্পী। শিল্পকলায় ‘একশ বস্তা’ চাল মঞ্চস্থ ॥ রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার প্রধান মিলনায়তনে শনিবার সন্ধ্যায় মঞ্চস্থ হয় নাটক ‘একশ বস্তা চাল’। জাপানি নাট্যকার ইওজো ইয়া মামতো’র লেখা নাটকটি বাংলায় অনুবাদ করেছেন অধ্যাপক আব্দুস সেলিম। নির্দেশনা দিয়েছেন গোলাম সারোয়ার। জাপান দূতাবাসের সহায়তায় নাট?কটির প্রযোজনা করেছে শিল্পকলা একাডেমি। নাটকের সময়টা আজ থেকে ১৪০ বছরেরও আগের, ওই সময়ে জাপানের প্রেক্ষাপটে সামুরাই সম্প্রদায়ের বিলুপ্তির সময়টিতে জাপানবাসীর জীবনের যে পালাবদল ও নবজাগরণ, তা নিয়েই নাটক ‘একশ বস্তা চাল’। নাটকের কাহিনীতে দেখা যায়-নাগাওকা শহরের একটি সামুরাই পরিবারের পিতা ইতো কি হেইতা দিগ্ভ্রান্ত। চাল তো দূরের কথা, এতটুকু খুদও নেই। নিজের পেট খালি, কিন্তু ছেলে সিয়েতারোকে না খাইয়ে রাখেন কীভাবে! চোখের জলে চোখ ভিজিয়ে পিতা ইটো কি হেইটা ঠিক করেন ছেলেকে বৌদ্ধ আশ্রমে ভিক্ষু করে পাঠাবেন। পিতা-ছেলের এমনি নাটকীয় দ্বন্দ্বে আবর্তিত এ নাটক। আসাফো’র মাসব্যাপী কর্মসূচীর সমাপনী অনুষ্ঠান ॥ মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আওয়ামী সাংস্কৃতিক ফোরামের (আসাফো) মাসব্যাপী কর্মসূচীর সমাপনী সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শনিবার বিকেলে ধানমণ্ডি বত্রিশ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়েছে। আসাফো’র সভাপতি সাইদুর রহমান সজলের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও আওয়ামী সাংস্কৃতিক ফোরামের (আসাফো) প্রধান উপদেষ্টা লে. কর্নেল (অব) মুহাম্মদ ফারুক খান এমপি। বক্তব্য দেন আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি বাবু নির্মল রঞ্জনগুহ, আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা উপকমিটির সদস্য সৈয়দ আব্দুল আউয়াল শামীম, লালবাগ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান জামাল, আওয়ামী যুবলীগের শিক্ষা প্রশিক্ষণ ও পাঠাগার বিষয়ক সম্পাদক মিজানুল ইসলাম মিজু, ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক তাসভীরুল হক অনু, আসাফোর সাধারণ সম্পাদক মাহ্মুদা মুস্তাকিমা রুবী প্রমুখ। বক্তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বাঙালী সংস্কৃতিকে উর্ধে তুলে ধরে দেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। সভা পরিচালনা করেন সংগঠনটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান মুরাদ।
×