স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বিদায়টা সুখকর ছিল না। অনেক ধরনের সমালোচনা, আচরণগত সমস্যা এবং
দলের ব্যর্থতার ভার মিলিয়ে সাকিব আল হাসানকে সরিয়ে দেয়া হয়েছিল নেতৃত্ব থেকে। ২০০৯ থেকে ২০১১ পর্যন্ত তিনি ছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের তিন ফরমেটেই অধিনায়ক। তার জায়গায় নেতৃত্বে এসেছিলেন মুশফিকুর রহীম। গত ৬ বছর ধরে টেস্ট অধিনায়ক মুশফিককে ২০১৪ সালেই ওয়ানডে ও টি২০ নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছিল। এই ৬ বছরে বাংলাদেশ ক্রিকেটে পটপরিবর্তন ঘটেছে অনেক। সেই ধারাবাহিকতায় আবার মুশফিককে সরিয়ে টেস্ট দলের অধিনায়ক হলেন সাকিব। রবিবার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভা শেষে তাকে টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে ঘোষণা করেন সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। টেস্টে সাকিবের সহঅধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। তিনি ২০১১ সালেও মুশফিকের সহকারী ছিলেন। আবারও সহঅধিনায়ক হলেন তিনি। টেস্ট দলে ৬ বছর পর নেতৃত্বে পরিবর্তন আসলো এবং দেশের ক্রিকেটের পটপরিবর্তন ঘটতে যাচ্ছে সেটার সূচনাও হলো এর মাধ্যমে। কারণ আসন্ন শ্রীলঙ্কা সফরে সাকিব-মাহমুদুল্লাহর নেতৃত্বে নতুন কোচের অধীনে খেলবে বাংলাদেশ দল।
২০০৯ সালে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যায়। সেটিই ছিল অধিনায়ক হিসেবে মাশরাফি বিন মর্তুজার প্রথম মিশন। কিন্তু প্রথম টেস্টের প্রথমদিনেই ইনজুরিতে পড়ে সিরিজ থেকে ছিটকে যান। তখন দায়িত্ব দেয়া হয় সাকিবকে। বিদ্রোহের কারণে ভঙ্গুর দলে পরিণত হওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে সুবর্ণ সুযোগটা কাজে লাগিয়েছিলেন তিনি, দলকে জিতিয়েছিলেন টেস্ট। এরপর স্থায়ী অধিনায়ক হয়ে যান সাকিব তিন ফরমেটের। সবমিলিয়ে ৯ টেস্টে দলকে নেতৃত্ব দিয়ে শুরুর সেই জয়টাই শেষ, এরপর বাকি ৮ টেস্টেই দলের পরাজয় দেখেছিলেন তিনি। তবে সবচেয়ে আলোচিত পরাজয়টি ছিল ২০১১ সালে জিম্বাবুইয়ে সফরে একমাত্র টেস্টে। সেটি ছিল সংগ্রামে পড়া জিম্বাবুইয়ের টেস্টে প্রত্যাবর্তনের ম্যাচ। ৬ বছর তারা স্বেচ্ছা নির্বাসনে ছিল টেস্ট ক্রিকেট থেকে। কিন্তু ফেরার ম্যাচেই তারা উন্নতির পথে থাকা বাংলাদেশ দলকে হারিয়ে দেয়। ওয়ানডে সিরিজেও খুব বাজেভাবে নাস্তানাবুদ হতে হয়েছিল, জিম্বাবুইয়ে সিরিজ জিতে যায় ৪-১ ব্যবধানে। সে বছর ঘরের মাটিতে প্রথমবার ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পাওয়া বাংলাদেশ দল খুব বাজে নৈপুণ্য দেখিয়েছিল। বিশেষ করে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মাত্র ৫৮ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। তখন দর্শকরা হতাশায় বাংলাদেশ দলকে দুয়োধ্বনি দিতে থাকলে সাকিব অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করে ব্যাপক সমালোচিত হয়েছিলেন। ফলশ্রুতিতে জিম্বাবুইয়ে সফরের পরই নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছিল সাকিবকে। যদিও ওই সময় পর্যন্ত দলকে ৫০ ওয়ানডেতে নেতৃত্ব দিয়ে ২৩ ম্যাচ জিতিয়েছিলেন তিনি এবং হার দেখেছিলেন ২৬ ম্যাচে। তবে সে সময় ৪ টি২০ ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়ে সবগুলোতেই পরাজয় দেখেছিলেন।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: