স্টাফ রিপোর্টার ॥ আজ বুধবার আইন মন্ত্রণালয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, কোনো দেশে প্রধান বিচারপতিরা ‘প্রকাশ্যে এত কথা বলেন না’ । ‘কোনো কষ্ট থাকলে’ তা নির্বাহী বিভাগকে জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী ।
গতকাল প্রধান বিচারপতি বলেছেন, ‘প্রশাসন বিচার বিভাগকে স্বাধীন হতে দিতে চায় না। বিচার বিভাগের সঙ্গে নির্বাহী বিভাগের সঙ্কটটা আসলে কোথায়?’ এই প্রেক্ষিতেই আইনমন্ত্রী এই কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, “আমি আপনাদেরকে সবিনয়ে এবং মাননীয় প্রধান বিচারপতির প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল হয়ে বলব, আপনারা অনেক উন্নয়নশীল ও উন্নত দেশ দেখেছেন, আপনারা প্রতিবেশী দেশও দেখেছেন। কোনো দেশে বিচারকাজ ছাড়া মাননীয় প্রধান বিচারপতিরা এত উষ্মা, এত কথা পাবলিকলি বলেন না।”
আনিসুল হক বলেন, “আমার কথা হচ্ছে, নিশ্চয়ই উনি প্রয়োজনে বলেন, আমি এটা অস্বীকার করি না। কিন্তু উনি এই সব কথাগুলি, উনার যদি কোনো দুঃখ কষ্ট থেকে থাকে, এই সব কথাগুলি যদি উনি পাবলিকলি না বলে আমাদেরকে জানান, তাহলে আমরা হয়ত সেগুলো সুরাহা করার চেষ্টা করতে পারি।”
জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান দিবস উপলক্ষে আইন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন আইনমন্ত্রী। সেখানেই আইনমন্ত্রীর এই মন্তব্য করেন।
মন্ত্রী বলেন, প্রধান বিচারপতিকে তিনি ‘অত্যন্ত সম্মান’ করেন। প্রধান বিচারপতি যদি তার ওই বক্তব্যের কারণটা বলতেন, তাহলে অনেক ‘সুবিধা হত’।
এরপর শেখ হাসিনার সরকারের সময় বিচারকদের বেতন বৃদ্ধিসহ বিচার বিভাগের জন্য নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগের তথ্য সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন আনিসুল হক।
তিনি বলেন, হাই কোর্টের বিচারকদের বেতন ৪৯ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯৫ হাজার টাকা করা হয়েছে। অন্যান্য সুবিধা যোগ করলে এই পরিমাণ এক লাখ ৫০ হাজার টাকার বেশি হবে।
আপিল বিভাগের বিচারকদের বেতন ৫৩ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ লাখ ৫ হাজার টাকা করা হয়েছে। সুবিধাদিসহ মোট আর্থিক পরিমাণ হবে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকার বেশি।
প্রধান বিচারপতির বেতন ৫৬ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা হয়েছে। নিম্ন আদালতের বিচারকদের বেতনও বাড়ানো হয়েছে।
প্রধান বিচারপতির প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশের মধ্যেই নির্বাহী বিভাগের সঙ্গে বিচার বিভাগের দূরত্বের ইঙ্গিত আছে কি না- এমন প্রশ্নে আইনমন্ত্রী বলেন, “আমি কোনো দূরত্ব দেখি না।”
আইন সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হকও এ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।