
ছবি: সংগৃহীত
ইতালির ভেরোনায় অবস্থিত পালাজ্জো মাফেই জাদুঘর এক দম্পতির দৃষ্টান্তহীন কাণ্ডে হতবাক। স্বরোভস্কি স্ফটিকে ঢাকা একটি শিল্পচেয়ার—যা বিখ্যাত শিল্পী ভ্যান গঘকে উৎসর্গ করে বানানো হয়েছিল—তা ছবির ভঙ্গিতে বসতে গিয়ে ভেঙে ফেলেছেন তারা। এই ঘটনার পর জাদুঘর কর্তৃপক্ষ শিল্পের প্রতি সম্মান জানানোর আহ্বান জানিয়েছে।
জাদুঘরের প্রকাশিত সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, এক পুরুষ ও এক নারী একে অপরের ছবি তুলছেন। তারা চেয়ারটিতে বসার অভিনয় করছিলেন, যা দেখে মনে হয় তারা জানতেন এটি আসল বসার চেয়ার নয়। তবে এক পর্যায়ে পুরুষটি পা পিছলে পড়ে যান এবং চেয়ারটির ওপর পড়ে গিয়ে চেয়ারের দুটি পা ও মূল বসার অংশ সম্পূর্ণ ভেঙে ফেলেন।
সবচেয়ে বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, ঘটনার পর এই দম্পতি কাউকে কিছু না বলেই জাদুঘর ত্যাগ করেন।
চেয়ারটি তৈরি করেছিলেন ইতালির শিল্পী নিকোলা বোল্লা। এটি তৈরি হয়েছে স্বরোভস্কি স্ফটিক দিয়ে, যার প্রতিটি স্ফটিক অত্যন্ত উচ্চমানের পালিশ করা কাচ। এই চেয়ারটির নামকরণ করা হয়েছিল ভিনসেন্ট ভ্যান গঘের এক বিখ্যাত সাধারণ কাঠের চেয়ার চিত্রের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ‘ভ্যান গঘ চেয়ার।’
যদিও চেয়ারটির মূল্য প্রকাশ করেনি জাদুঘর কর্তৃপক্ষ, তবে এটিকে ‘অমূল্য’ বলে বর্ণনা করা হয়েছে।
জাদুঘরের পরিচালক ভানেসা কারলন বলেন, “ছবি তুলতে গিয়ে আমরা কখনো কখনো সবকিছু ভুলে যাই। কিন্তু এমনকি যদি এটি দুর্ঘটনাও হয়, তবু জাদুঘরের কাউকে কিছু না বলে পালিয়ে যাওয়া মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। শিল্প অত্যন্ত ভঙ্গুর, এবং তার প্রতি শ্রদ্ধা থাকা জরুরি।”
চেয়ারটির ফ্রেমটি ফাঁপা ও পাতলা ফয়েল দ্বারা তৈরি, বলে জানান আরেক কিউরেটর কার্লোত্তা মেনেগাজ্জো। তিনি বলেন, “চেয়ারটির সামনে স্পষ্টভাবে লেখা ছিল ‘স্পর্শ করবেন না’ এবং এটি একটি উঁচু পেডেস্টালের ওপর স্থাপন করা ছিল—যার মাধ্যমে বোঝা যায় এটি শুধু প্রদর্শনীর জন্য। আসল চেয়ারের মতো বসার জন্য নয়।”
ঘটনাটি মূলত এপ্রিলে ঘটলেও ১২ জুন সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করে জাদুঘর। ইতোমধ্যে চেয়ারটির মেরামত শেষ হয়েছে এবং এটি আবার প্রদর্শনীতে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
পালাজ্জো মাফেই জাদুঘর ২০২০ সালে চালু হয় এবং এখানে ৬৫০টিরও বেশি শিল্পকর্ম রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে পিকাসোর চিত্রকর্ম থেকে শুরু করে প্রাচীন মিশরের নিদর্শন পর্যন্ত।
মুমু ২