ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

অর্থনীতি বাঁচাতে গাঁজা চাষে ঝুঁকছে পাকিস্তান

প্রকাশিত: ১৮:৩৬, ৯ মে ২০২৪

অর্থনীতি বাঁচাতে গাঁজা চাষে ঝুঁকছে পাকিস্তান

খাইবার পাখতুনখোয়া অঞ্চলে গাঁজার চাষ। ছবি: আল জাজিরা

গাঁজা বাণিজ্যের বৈধ ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করছে পাকিস্তান। প্রায় চার বছর আগে দেশটি শিল্পখাতে গাঁজা ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছিল। বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ বাড়াতে এই উদ্যোগ নিয়েছে দেশটি।

ফেব্রুয়ারিতে একটি প্রেসিডেন্সিয়াল আদেশের মাধ্যমে পাকিস্তানের প্রথম গাঁজা নিয়ন্ত্রণ ও নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ২০২০ সালে শিল্পখাতে গাঁজা ব্যবহারের অনুমোদন সরকার দিলেও অভ্যন্তরীণ জটিলতায় নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ গঠনের উদ্যোগ থেমে ছিল।পাকিস্তানের উপজাতি এলাকায় দীর্ঘ দিন ধরে গাঁজা চাষ হয়ে আসছে। ছবি: আল জাজিরা

দেশটির স্পেশাল ইনভেস্টমেন্ট ফেসিলিটেশন কাউন্সিলের এক সিনিয়র কর্মকর্তা বলেছেন, এই উদ্যোগ নিয়ে আমরা খুবই সচেষ্ট। খুব দ্রুত গতিতে সব কিছু এগিয়ে যাচ্ছে।

ভারতীয় একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের মতে, বৈশ্বিক গাঁজার বাজারে প্রবেশ এবং উৎপাদনের অনুকূল পরিবেশের সুবিধা নিতে আশাবাদী পাকিস্তান। গাঁজার বৈশ্বিক বাজার ২০২২ সালে ছিল ২৭.২ বিলিয়ন ডলারের। ২০২৭ সালে তা বেড়ে দাঁড়াবে ৮২.৩ বিলিয়ন ডলার। বিদেশি ঋণ পরিশোধ ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)-এর কাছ থেকে ঋণ সহায়তা পেতে পাকিস্তান রপ্তানি বাড়ানো ও কর বৃদ্ধির উদ্যোগ নিচ্ছে।

পাকিস্তানের আফগান সীমান্তে এই ঔষধি গাছটি উন্মুক্তভাবে চাষ ও বিক্রি হয়। তবে গাছটি উত্তর ও পশ্চিম পাকিস্তানেও চাষ করার মতো পরিবেশ রয়েছে। ১৯৭০ দশক পর্যন্ত স্থানীয় গাঁজার দোকানগুলো বেশ জনপ্রিয় ছিল। কিন্তু ১৯৮০-এর দশকে সামরিক শাসক জেনারেল জিয়াউল হক গাঁজার ব্যবহার ও রাখা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন।

২০২২ সালে প্রথম এশীয় দেশ হিসেবে থাইল্যান্ড গাঁজাকে বৈধ করার পর দেশটিতে এর ব্যবহার বেড়েছে। একজন পাকিস্তানি চিকিৎসক বলছেন, শুধু চিকিৎসাপত্রের মাধ্যমে গাঁজা থেকে ওষুধ বিক্রির ব্যবস্থা করলে অপব্যবহার রোধ করা যাবে। 

রাওয়ালপিন্ডিভিত্তিক চিকিৎসক রশিদ ইকবাল বলেন, চিকিৎসাপত্রের মাধ্যমে বিক্রিকে উৎসাহিত করা প্রয়োজন। কর্তৃপক্ষের উচিত তা নিশ্চিত করা। 

কেয়ারগিভার আদনান আমিনও মনে করেন যে, গাঁজার অপব্যবহার হতে পারে। নিম্ন রক্তচাপের রোগীর জন্য জীবন রক্ষাকারী ওষুধ হলো এফেড্রিন। এটিরও তো অপব্যবহার হয়।

পাকিস্তানের সরকারি গবেষণা সংস্থা কাউন্সিল অব সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ-এর চেয়ারম্যান ও সিসিআরএ-এর গভর্নিং বডির সদস্য সৈয়দ হোসাইন আবিদি বলেছেন, পাকিস্তান নিজেদের সুবিধার জন্য এই গাছটির চাষকে কাজে লাগাতে পারে এবং রপ্তানি, বিদেশি বিনিয়োগ ও দেশে বিক্রির মাধ্যমে মূল্যবান বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ বাড়াতে পারবে।

তিনি বলেছেন, এখন পাকিস্তানে গাঁজা চাষ বৈধ। বিধি ও প্রক্রিয়াগুলো তৈরি করার পর্যায়ে রয়েছি আমরা। এছাড়া কর্তৃপক্ষের নিবন্ধনের অপেক্ষাও রয়েছে। পাঁচ বছর মেয়াদে লাইসেন্স দেওয়া হতে পারে। কেন্দ্রীয় সরকার নির্ধারণ করে দেবে কোন কোন অঞ্চলে বৈধভাবে চাষ করা যাবে।

আবিদি বলেছেন, গাঁজা চাষে আমাদের দীর্ঘ ঐতিহ্য আছে। আমাদের এই সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।

সূত্র: আল জাজিরা, নিক্কি এশিয়া

 

এসআর

×