
স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রেমকাহিনী অথবা রোমান্টিক জুটির কথা উঠলে সবার আগে যাদের নাম উচ্চারিত হয় তারা হলেন লাইলি-মজনু। তাদের অমর প্রেমকাহিনী পৃথিবীর মুসলমান জাতির কাছে এক অনুপম সম্পদ, যেন বংশপরম্পরায় ধরে রাখা ঐতিহ্যেরই একটি অংশ।
প্রেমের ইতিহাসে, বিশেষ করে এই উপমহাদেশীয় মুসলিম সমাজে ‘লাইলি ও মজনু’ এই দুটি চরিত্র কালজয়ী হয়ে ওঠে। স্বর্গীয় প্রেমের প্রতীক মানা হয় এই জুটিকে। অধরা প্রেমের এক বিয়োগান্ত গাঁথা এ কাব্যের ইতিহাস সবারই জানা। তারই আদলে নির্মিত হয়েছে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘অমর প্রেম’। অমর প্রেমকাহিনীর এই স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেছেন জনপ্রিয় নাট্য নির্মাতা শ্রাবণী ফেরদৌস। সম্প্রতি পুরান ঢাকার বিভিন্ন লোকেশনে এর দৃশ্যায়ন সম্পন্ন হয়। লাইলি ও মজনুর প্রেমকাহিনীর আদলে ভিন্ন গল্প ভাবনা ও মোড়কে এই অমর জুটি হয়ে এসেছেন নতুন মুখ লরেন ও জাকির। এর আগে বিজ্ঞাপনে কাজ করলেও একেবারেই নতুন মুখ তারা। কাজটি শুরুর আগে অনুশীলনও করেছেন তারা। স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রটির দৈর্ঘ্য হবে ১৫ মিনিটের। এখানে একটি গানও থাকবে।
নির্মাতা শ্রাবণী ফেরদৌস বলেন, আদর্শ প্রেমের উদাহরণ হিসেবে কোন কিছু বলতে গেলে প্রথমেই আসে লাইলি-মজনুর নাম। বাঙালী মুসলমানের জীবনে আজ পর্যন্ত যত গল্প-উপাখ্যান শেকড় গেড়ে আছে তার মধ্যে এই লাইলি-মজনুর প্রেমকাহিনী একটি উল্লেখযোগ্য আখ্যান। বাঙালীর কাছে রাধা-কৃষ্ণ, শিরি-ফরহাদ, ইউসুফ-জোলেখা, চন্ডিদাস-রজকিনীর প্রেমের গল্প যেভাবে পরিচিত লাইলি-মজনুর প্রেমকাহিনীও তেমনি পরিচিত। তিনি আরও বলেন, বিখ্যাত ব্যক্তিদের অমর প্রেমকাহিনীর আদলেই এটি নির্মাণ করেছি। এর নির্মাণ শৈলী ও গল্প ভাবনা সবকিছুই বড় পর্দার মতো। তবে এখানে সেটি স্বল্প পরিসরে দেখানো হবে। সেই গল্পটি এত গভীরভাবে বাঙালী জীবনে আলোড়ন তুলেছে, বাঙালীর আত্মগত ভালবাসার অংশ হয়ে উঠেছে যে কল্পনার এই দুই নর-নারী আপনের চেয়ে আপন আজও বাঙালী জনজীবনে। সেই গল্প ও চরিত্রেই দুজনকে নতুনভাবে দেখা যাবে। মানুষের প্রেমের দৈর্ঘ্য হয়ত ৫ ঘণ্টা বা ৫০ বছর থাকতে পারে, কিন্তু একটি যুগল যখন সেই প্রেমটার জন্য কিছু ত্যাগ করে সেটি মহান হয়ে ওঠে। সেটি কখনও ১ সেকেন্ডেরও হতে পারে কিংবা ৫ মিনিটেরও হতে পারে।
লরেন মেন্ডেস বলেন, আমি এর আগে কিছু বিজ্ঞাপন ও মিউজিক ভিডিওতে কাজ করেছি কিন্তু কখনও অভিনয় করা হয়নি। এই কাজটা করতে গিয়ে আমার মনেই হয়নি যে অভিনয় করছি। টিমের সবার এত সাপোর্ট পেয়েছি যার কারণে কাজটা খুবই সুন্দরভাবে করতে পেরেছি। সত্য ও বাস্তব ঘটনার অবলম্বনেই এটি নির্মিত হয়েছে। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি নিজেদের সেরাটা দিয়ে ফুটিয়ে তুলতে। কাজের আগে ওয়ার্কশপ করেছি। কাজটা করতে গিয়ে কখনও গ্লিসারিন ব্যবহার করিনি। অমর প্রেমকাহিনীর গল্পের সঙ্গে চরিত্রে নিজেকে এতটাই ধারণ করেছিলাম যে, পরিণতিতে চোখ থেকে এমনিতেই পানি চলে আসত। আশা করছি দর্শক কাজটি উপভোগ করবেন। আসছে ঈদকে সামনে রেখেই নির্মিত হয়েছে এই স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রটি। ঈদের আগেই অনলাইন প্লাটফর্মে প্রকাশ করা হবে। তবে ইউটিউব নাকি অন্য প্লাটফর্মে তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি।