
চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার ৯১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩টি ক্লাস্টারে ২ সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা, ১ উচ্চমান সহকারি, ১ অফিস সহকারি, ১ অফিস সহায়কের পদ দীর্ঘদিন ধরে খালি রয়েছে। পাশাপাশি ৪৩ প্রধান শিক্ষক ও ২১ জন সহকারি শিক্ষকের পদ খালি থাকায় চন্দনাইশে প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। চলতি বছর ১ম প্রান্তিক পরীক্ষার প্রশ্ন পত্রে ভুলে ভরা, অভিভাবকদের মাঝে অসন্তোষ চরমে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, চন্দনাইশে ৯১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৩৪টি বেসরকারি কিন্ডার গার্ডেন স্কুল রয়েছে। ৯১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২৫ হাজার ১৯৭ জন শিক্ষার্থীর জন্য ৭১৮ জন শিক্ষক থাকার কথা থাকলেও প্রধান শিক্ষক পদে ৪৩, সহকারি শিক্ষক পদে ২১ টি পদ খালি রয়েছে। এদের মধ্যে প্রধান শিক্ষক পদে ২৪ জন ভারপ্রাপ্ত, ১৯ জন চলতি দায়িত্ব পালন করছেন। পাশাপাশি ৩টি ক্লাস্টারে ১ জন মাত্র সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা দিয়ে জোড়াতালি দিয়ে যেনতেনভাবে চলছে প্রশাসনিক কার্যক্রম। চলতি বছর ৭ জানুয়ারি সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা কানাই লাল সরকার, ৭ এপ্রিল তপন কুমার পোর্দ্দার বদলি হওয়ার পর থেকে পদ ২টি খালি রয়েছে। এদিকে ১ জন উচ্চমান সহকারি, ১ যুগেরও বেশি সময় ধরে অফিস সহকারি, ২০ বছরের অধিককাল অফিস সহায়কের পদ খালি রয়েছে। বর্তমান শিক্ষা কর্মকর্তা কবির হোসেন গত বছর ১৬ জুলাই যোগদান করেন। জনবল সংকটের অজুহাতে চন্দনাইশ পৌরসভার ২ জন ও বরকল এলাকার ১ জন প্রধান শিক্ষক অধিকাংশ সময় শিক্ষা অফিসে সময় দিতে দেখা যায়। এ ব্যাপারে শিক্ষা কর্মকর্তা কবির হোসেন বলেছেন, অফিসে জনবল সংকটের কারণে কয়েকজন শিক্ষককে মাঝে মধ্যে অফিসের কাজে আসতে হয়। শিক্ষকদের অভিযোগ, এ সকল শিক্ষকেরা অফিসের আশেপাশে থেকে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নেয়ার পাশাপাশি আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। বিদ্যালয়ে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। সদ্য যোগদানপ্রাপ্ত ৪০ জন সহকারি শিক্ষকদের নিকট থেকে জনপ্রতি ৮’শ টাকা করে আদায় করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। একইসাথে শিক্ষা কর্মকর্তা বিভিন্ন বিদ্যালয় পরিদর্শনে গিয়ে শিক্ষকদের দোষত্রæটি তুলে ধরে শোকজ করেন। পরবর্তীতে ঐ সকল প্রধান শিক্ষকদের মাধ্যমে অর্থের বিনিময়ে শোকজের চিঠি ছিড়ে ফেলা হয় বলে শিক্ষকেরা অভিযোগ করেন। তাছাড়া তারা কোন রকম ছুটি ব্যতিরেখে বিদ্যালয় ত্যাগ করা আইন পরিপন্থি। এ সকল শিক্ষকেরা অধিকাংশ সময় বিদ্যালয় চলাকালীন সময় অফিসে থাকার বিষয়টি অফিসিয়াল সিসি ক্যামেরায় ধারণ রয়েছে বলে জানান। তবে এ সকল অভিযোগ শিক্ষা কর্মকর্তা অস্বীকার করেন। তিনি বলেছেন, যোগদানের পর থেকে শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছ্নে। শিক্ষকেরা বিদ্যালয় মূখী হয়েছেন। কোন কাজের জন্য অপেক্ষা করতে হয়না। ২০১০ সাল থেকে শিক্ষকদের গ্রেড পরিবর্তন হয়নি। ৭১৩ জন শিক্ষকের সার্ভিস বুক, পদোন্নতি কারণে কাজ অসম্পূর্ণ থাকায় আইনী জটিলতা দেখা দিয়েছে। এদিকে চলতি বছর ১ম প্রান্তিক পরীক্ষার ১ম শ্রেণি থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত ইংরেজি, গণিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে ভূলে ভরা, মানবণ্টনে এলোমেলো। ফলে অভিভাবকেরা প্রশ্ন প্রণয়নকারীদের অবহেলার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের গাফেলতির কথা বলেছেন। এ ব্যাপারে আগামীতে প্রশ্ন পত্র প্রণয়নের ব্যাপারে সঠিক ব্যক্তিদের দায়িত্ব দেয়ার আহবান জানান।
Jahan