ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

বড় পতনে দুই মাসে সর্বনিম্ন লেনদেন

প্রকাশিত: ২৩:১২, ২১ অক্টোবর ২০১৮

বড় পতনে দুই মাসে সর্বনিম্ন লেনদেন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) রবিবার মূল্যসূচকের বড় পতন হয়েছে। ক্রেতা-বিক্রেতা কমে যাওয়ায় লেনদেন দুই মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থান করছে। বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সকালে ইতিবাচক প্রবণতা দিয়ে শুরুর পর বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শেয়ার বিক্রির চাপ আসছে। মূলত মুনাফা তুলে নেওয়া এবং বিপরীতে শেয়ারের ক্রয়াদেশ কমে যাওয়ার কারণেই এই পতন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেবে এই আশঙ্কায় প্রাতিষ্ঠানিক ও বড় বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ বাজার থেকে কিছুটা দূরে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অন্যদিকে সূচকের পতন ঠেকাতে রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানসহ অন্যদের বাজারকে সার্পোট দেওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে না, যার কারণে বিক্রির চাপ বেড়েই চলছে। ফলে প্রতিদিনই সূচক কমছে। আগের সপ্তাহের ধারাবাহিকতায় ব্যাংক ও আর্থিক খাতের ওপর ভর করে সূচক বেড়েছিল। কিন্তু ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স এবং সিএসইর সার্বিক মূল্য চক সিএসসিএক্স কমেছে প্রায় এক শতাংশ। মূল্যসূচকের বড় পতনের সঙ্গে দেখা দিয়েছে লেনদেন খরা। ফলে ডিএসইতে প্রায় দুই মাস বা গত ২৬ আগস্টের পর সর্বনিম্ন লেনদেন হয়েছে। পাশাপাশি এদিন কমেছে লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম। ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া মাত্র ৪৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে ২৫৮টি। আর ৩২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৫০ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৩৩১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অপর দুটি মূল্যসূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক ১৩ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২৩০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর ডিএসই-৩০ আগের দিনের তুলনায় ১১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৮৮৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে। বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, এদিন লেনদেনের শুরুতে বাজার ঊর্ধ্বমুখী ছিল। প্রথম ৪০ মিনিটের লেনদেনে ডিএসইএক্স ২০ পয়েন্টের ওপরে বেড়ে যায়। দুপুর ১২টা ১২ মিনিট পর্যন্ত সূচকটি ঊর্ধ্বমুখী থাকে। কিন্তু এরপরই দেখা দেয় পতন। দিনের শেষ পর্যন্ত সেই পতনের ধারা অব্যাহত থাকে। ফলে ঘটে বড় দরপতন। এই দরপতনের প্রভাব গিয়ে পড়ে লেনদেনেও। ফলে প্রায় দুই মাস বা ৩৯ কার্যদিবসের মধ্যে ডিএসইতে সর্বনিম্ন লেনদেন হয়েছে। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৪৩৯ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৪৭৬ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ৩৬ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে কেপিসিএল’র শেয়ার। কোম্পানিটির ২৬ কোটি ৬২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেনে দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইফাদ অটোসের ১২ কোটি ৫২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১২ কোটি ৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সামিট পাওয়ার। লেনদেনে এরপর রয়েছে - ভিএফএস থ্রেড ডাইং, ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, ড্রাগন সোয়েটার, বেক্সিমকো, লিগাসি ফুটওয়্যার এবং বিবিএস কেবলস। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্যসূচক সিএসসিএক্স ৭৮ পয়েন্ট কমে ৯ হাজার ৯৪২ পয়েন্টে অবস্থান করছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১৮ কোটি ৮২ লাখ টাকা। লেনদেন হওয়া ২৪৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫৩টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৬৮টির। আর দাম অপরিবর্তিত রয়েছে ২৮টির।
×