ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

রাজশাহীর সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগের দাবি

এবার কপোতাক্ষ ট্রেনে যুক্ত হচ্ছে লাল-সবুজ বগি

প্রকাশিত: ০৩:৩৫, ২০ মার্চ ২০১৭

এবার কপোতাক্ষ ট্রেনে যুক্ত  হচ্ছে লাল-সবুজ বগি

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ রাজশাহী-খুলনা রুটে চলাচলকারী কপোতাক্ষ এক্সপ্রেসে এবার যুক্ত হচ্ছে লাল-সবুজ বগি। ট্রেনের এ নতুন বগি উদ্বোধন করতে রাজশাহীতে আজ রবিবার আসছেন রেলপথমন্ত্রী মজিবুল হক। ভারত থেকে আমদানি করা এসব বগিগুলোতে ইতোমধ্যে রঙের কাজও শেষ হয়েছে। এসব বগি যুক্ত হলে রাজশাহী-খুলনা রুটে যাত্রী সেবার মান আরও বৃদ্ধি পাবে। এদিকে রাজশাহীতে রেলপথ মন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে নতুন আশা দানা বেধেছে এ অঞ্চলের মানুষের মধ্যে। বিশেষ করে বহুল প্রত্যাশিত রাজশাহী থেকে ডুয়েল মিটারগেজ রেলপথ নির্মাণ করে সারাদেশের সঙ্গে রেল যোগাযোগ স্থাপন ও যাত্রীসেবার মান উন্নয়নের দাবি জানিয়েছে রাজশাহীবাসী। শনিবার রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদ এক বিবৃতিতে রাজশাহী-ঢাকা রুটে কমপক্ষে একটি ‘ননস্টপ’ সরাসরি ট্রেন চালুর দাবি জানানো হয়েছে। বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে রাজশাহীবাসীকে আশ^াস দেয়া হলেও বছরের পর বছর ধরে বঞ্চিত হচ্ছেন এ অঞ্চলের মানুষ। রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান বলেন, রাজশাহীতে পশ্চিমাঞ্চল রেলের সদর দফতর। পশ্চিমাঞ্চলের রেলপথের সংস্কার এবং নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করলে বরেন্দ্র এলাকায় গড়ে উঠতে পারে অর্থনীতির দার ও খুলে যেতে পারে সম্ভাবনাময় শিল্পাঞ্চল। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, রাজশাহী শহরে গড়ে উঠেছে বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা অনুষদের আওতায় প্রায় দেড় লক্ষাধিক শিক্ষার্থী অধ্যায়নরত আছে। তবে সম্ভাবনা সত্ত্বেও অনুন্নত রেল যোগাযোগের কারণে গড়ে উঠেনি এ অঞ্চলে শিল্প প্রতিষ্ঠান। রাজশাহী থেকে সরাসরি মিটার গেজের মাধ্যমে চট্টগ্রামের সঙ্গে রেল যোগাযোগ চালু করলে রাজশাহীতে পোশাক শিল্পের দ্রুত বিকাশ করা সম্ভব। মিটার গেজ রেলপথের মাধ্যমে এখান থেকে কন্টিইনারের মাধ্যমে পণ্য পরিবহনের ব্যবস্থা করা হলে পোশাক শিল্পের উদ্যোক্তারা রাজশাহীতে কারখানা গড়ে তুলতে পারবে। সর্বোপরি রাজশাহীর সঙ্গে রেলপথে সমুদ্র বন্দর চট্টগ্রামের যোগাযোগ করতে পারলে বেকারত্বের প্রকটতা হ্রাস পাবে। দেশের অর্থনীতির গতিময়তা সুষমভাবে প্রবাহিত হবে। জামাত খান বলেন, রাজশাহী বিভাগীয় শহর এবং এখানে একটি আধুনিক মানের স্টেশন আছে। অথচ মাত্র কয়েকটি ট্রেন এখানে চলাচল করে। আব্দুলপুর থেকে রাজশাহী পর্যন্ত মিটার গেজ হলে রাজশাহী স্টেশনে কমপক্ষে আরও দশটি নতুন ট্রেন চলাচল করবে এবং এই স্টেশনের আয় দ্বিগুণের বেশি হতে পারে। এছাড়া রাজশাহী অঞ্চলের চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রহনপুর আন্তঃনগর ট্রেন চালুর দাবি জানানো হয়েছে। ইতোমধ্যে এ নিয়ে এলাকাবাসী বিভিন্ন কর্মসূচীও পালন করছে। এ অঞ্চলের বিশেষ করে ঐতিহ্যবাহী ইলামিত্রের নাচোলে আধুনিক যাত্রীছাউনিসহ স্টেশন ভবন নির্মাণের দাবি জানানো হয়েছে। নাচোল উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আবু তাহের খোকন বলেন, দেশে রেল যোগাযোগ আধুনিকরণ হলেও উত্তরের সীমান্তবর্তী এলাকা ও বরেন্দ্র খ্যাত নাচোল, আমনুরা ও রহনপুর এখনও অনেক পেছনে রয়েছে। এ অঞ্চলের সঙ্গে রেলপথ সম্প্রসারণ করে বাড়তি ট্রেন যুক্ত করলে আর্থ-সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে গতিশীলতা লাভ করবে। এছাড়া পণ্য পরিবহনেও এই অঞ্চল বড় ভূমিকা রাখতে পারবে। এছাড়া আব্দুলপুর হতে রাজশাহী পর্যন্ত ডবল লাইন হলে এ সকল লাইনে বাড়তি ট্রেনের পাসিং সমস্যা থাকবে না। এদিকে বর্তমানে রেলওয়ে জনপ্রিয় হলেও রাজশাহী থেকে ছেড়ে যাওয়া ট্রেনগুলোর যাত্রী সেবার মান খুবই নিম্নমানের। রাজশাহী রেলস্টেশনসহ পশ্চিমাঞ্চলে যাত্রী বিশ্রামাগারগুলোর মান খুবই অনন্নুত। মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের নেতৃবৃন্দ বলেন, রাজশাহীর সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ স্থাপন করা হলে একদিকে রাজস্ব বাড়বে-অন্যদিকে ব্যবসা বাণিজ্য ও অর্থনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ হবে।
×