ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

সুমন্ত গুপ্ত

বিশ্বের শীর্ষ আট ধনী

প্রকাশিত: ০৬:১৭, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

বিশ্বের শীর্ষ  আট ধনী

বিল গেটস, ওয়ারেন বাফেট, মার্ক জাকারবার্গ, এ্যামানসিও ওর্তেগা, মাইকেল বুমবার্গ, কার্লোস সিøম হেলু, জ্যাফ বেজোস ও ল্যারি এ্যালিসন তাদের সবাই কমবেশি চিনেন। তাঁরা বিশ্বের সেরা ধনী। প্রতিবছরই তাঁদের সম্পদের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়; কখনো বা কমে। কিন্তু জেনে অবাক হবেন যে বিশ্বের শীর্ষ আট ধনীর যে সম্পদ আছে, তা বিশ্বের অর্ধেক মানুষের হাতে থাকা সম্পদের সমান। এই আট ধনী চাইলে পৃথিবীর অর্ধেক মানুষের সম্পদ কিনতে পারবেন। সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ওয়াল্ড ইকোনমিক ফোরামের ৪৭তম বার্ষিক সভা শুরুর সময় প্রতিবেদনটি প্রকাশ করল অক্সফাম। বিশ্বের শীর্ষ আট ধনীর মোট সম্পদের পরিমাণ ৪২৬ দশমিক দুই বিলিয়ন ডলার। এই পরিমাণটি বিশ্বের দরিদ্রতম মানুষের মোট সংখ্যার অর্ধেকের (৩৬০ কোটি) যে পরিমাণ সম্পদ আছে তার সমান। প্রতিবেদনটি তুলে ধরা নতুন তথ্যে দেখা গেছে, বিশ্বের দরিদ্রতম জনসংখ্যার অর্ধেকের সম্পদ আগে যা হিসাব করা হয়েছিল তার চেয়েও কম। সম্পদের এই বৈষম্যকে ‘অসঙ্গত’ বলে বর্ণনা করেছে অক্সফাম। অক্সফ্যাম বলছে, ধনী ও দরিদ্রদের মধ্যে বৈষম্য বেড়ে যাওয়ার কারণে জনরোষ বাড়ছে। এর ফলে বড় ধরনের রাজনৈতিক আলোড়নও হতে পারে। অক্সফ্যামের ক্যাটি রাইট বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে ভোটও তার একটি ফল। তিনি বলেন, লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছে। তারা বিকল্প কিছুর দাবি জানাচ্ছে। কারণ কঠোর পরিশ্রমের পরেও তারা পিছিয়েই থাকছে। অক্সফামের প্রতিবেদনে ধনী-গরিবের বৈষম্যের বেশকিছু উদাহরণ দিয়ে বলা হয়েছে, বিশ্বের বিরাজমান বৈষম্য ক্রমান্বয়ে অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে। বৈষম্যের একটি উদাহরণ হলো, লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জের বড় কোম্পানির সূচক হলো এফটিএসই ১০০। এসব বড় কোম্পানির একজন প্রধান নির্বাহী এক বছরে যা আয় করেন, তা বাংলাদেশের পোশাক কারখানার ১০ হাজার শ্রমিকের এক বছরের আয়ের সমান। আবার ভিয়েতনামের একজন গরিব লোকের ১০ বছরের আয়, ওই দেশের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তির এক দিনের আয়ের সমান। ধনী এই আট ব্যক্তির অনেকেই তাদের কিছু কিছু সম্পদ বিলিয়ে দিয়েছেন। বিল গেটস এবং তার স্ত্রী মেলিন্ডা প্রতিষ্ঠা করেছেন একটি দাতব্য ফাউন্ডেশন। মার্ক জাকারবার্গ এবং তার স্ত্রী প্রিসিলা চ্যানও তাদের কিছু সম্পদ বিলিয়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তাছাড়া মার্কিন সাময়িকী ফোর্বসের ২০১৬ সালের ধনীর তালিকা ব্যবহার করে গবেষণা করেছে অক্সফাম। সে অনুযায়ী শীর্ষ ওই আট ধনীর ছয়জনই যুক্তরাষ্ট্রের, একজন স্পেনের ও একজন মেক্সিকোর। তাঁরা হলেন- ১. যুক্তরাষ্ট্রের বিল গেটস, মাইক্রোসফটের একজন সহযোগী প্রতিষ্ঠাতা। তার সম্পদের পরিমাণ ৭৫ বিলিয়ন ডলার। ২. স্পেনের ব্যবসায়ী আমানচিও ওরতেগা। জারার প্রতিষ্ঠাতা এবং ইনটিডেক্সের মালিক। তার সম্পদ ৬৭ বিলিয়ন ডলার। ৩. যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার ব্যবসায়ী ওয়ারেন বাফেট, বার্কশায়ার হাথেওয়ের সবচেয়ে বেশি শেয়ারের মালিক। সম্পদ ৬১ বিলিয়ন ডলার। ৪. মেক্সিকোর ব্যবসায়ী কার্লোস সিøম হেলু। গ্রুপো কারসোর মালিক। সম্পদ ৫০ বিলিয়ন ডলার। ৫. যুক্তরাষ্ট্রের জেফ বেজোস। ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আমাজনের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী। সম্পদের পরিমাণ ৪৫ বিলিয়ন ডলার। ৫. যুক্তরাষ্ট্রের মার্ক জাকারবার্গ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের একজন প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী। সম্পদ ৪৫ বিলিয়ন ডলার। ৭. যুক্তরাষ্ট্রের ল্যারি এলিসন। সফটওয়্যার নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান ওরাকলের একজন প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী। ৪৪ বিলিয়ন ডলার। ৮. যুক্তরাষ্ট্রের মাইকেল বুমবার্গ। বুমবার্গ এলপির মালিক। তার সম্পদের পরিমাণ ৪০ বিলিয়ন ডলার।
×