ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

বিক্রি ১০ গুণ বাড়বে, আশা ব্যবসায়ীদের

পছন্দের পোশাক কিনতে শপিংমলে ভিড়, বেচাকেনা বেড়েছে

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২২:৫১, ২৪ মার্চ ২০২৪

পছন্দের পোশাক কিনতে  শপিংমলে ভিড়,  বেচাকেনা বেড়েছে

ঈদ উপলক্ষে রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটে চলছে নানা অফার। এতে ক্রেতাদের ভিড় আরও বেড়েছে। রবিবার আজিজ সুপার মার্কেট থেকে তোলা

দেখতে দেখতে চলে গেল ১৩ রমজান। বলতে গেলে রোজার প্রায় অর্ধেক সময় শেষ হয়েছে। দিন যতই যাচ্ছে, ততই বাড়ছে ঈদের আমেজ। মানুষের চিন্তায় এখন শুধু ঈদ বাজার ঘরে ফিরতে ছুটির হিসাব-নিকাশ। অনেকে ব্যস্ত প্রিয়জনকে কী দেবেন, মায়ের জন্য কোন্ শাড়িটা কিনবেন সেই উচ্ছ্বাসে। পরিবার-পরিজনকে ঈদ আনন্দে ভাসাতে ধনী-গরিব সবাই মিলে ছুটছেন ঈদ কেনাকাটায়। ক্রেতারা পছন্দের পোশাকটি কিনতে ভিড় করছেন রাজধানীর বিপণি বিতান, ফ্যাশন হাউস, শপিংমল মার্কেটে। এর ফলে স্বাভাবিকের চেয়ে পোশাকের বিক্রি বেড়েছে দ্বিগুণ।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদের বাজার গেল শুক্রবার থেকেই জমে উঠেছে। দিন যত যাচ্ছে, বাড়ছে বিকিকিনি। এই মাসের শেষে এবং এপ্রিলের শুরুতে চাকরিজীবীদের হাতে টাকা আসবে। তখন কেনাবেচা ১০ গুণ বেড়ে যাবে।

মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর উদ্যাপন উপলক্ষে শুক্রবার থেকে ঢাকার শপিংমলগুলোয় সব বয়সের ক্রেতাদের ভিড় দেখা যাচ্ছে। তবে উচ্চ মূল্যস্ফীতি সমস্যায় ফেলেছে সাধারণ মানুষকে। আর তার প্রভাব এসে পড়েছে ঈদ বাজারেও।

রবিবার দুপুরে ফজলে রাব্বী রাজধানীর বসুন্ধরা শপিং সেন্টার থেকে একজোড়া স্যান্ডেল কিনেছেন। যার দাম পড়েছে দুই হাজার টাকা। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পেমেন্টের কারণে ১০০ টাকা ফেরত পেয়েছেন। এরপরও রাব্বী স্যান্ডেলের মান দামের প্রতি সন্তুষ্ট নন। জনকণ্ঠকে তিনি জানান, যেসব স্যান্ডেলের দাম ছিল ১০০০-১২০০ টাকা, এবার তা ১৮০০ থেকে দুই হাজারে উঠেছে। তিনি একটি শার্ট কিনেছেন ১৪০০ একটি পায়জামা কিনেছেন ৮৫০ টাকায়।

ঈদ সমানে রেখে প্রতিটি শোরুম বিপণি বিতানে পোশাকের ব্যাপক সমারোহ দেখা গেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ক্রেতাদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে সব ধরনের কালেকশন তারা রেখেছেন। গরমে সুতি কাপড়ের চাহিদা বেশি থাকায় সুতি কালেকশন বেশি রয়েছে। তবে দাম নিয়ে আপত্তির শেষ নেই ক্রেতাদের। বিশেষ করে নিম্ন  মধ্য আয়ের মানুষরা ঈদবাজারে এসে দর কষাকষি করছেন। সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী বিপণন কর্মীরা দামের বিষয়টি যে একটু বাড়তি তা স্বীকার করেন। তবে এই মূল্য বৃদ্ধিতে বেচাকেনায় তেমন প্রভাব পড়ছে না।

জানা গেছে, সারাদেশে ছোট-বড় মিলে দোকান রয়েছে প্রায় ৩০ লাখ। এর মধ্যে বড় দোকানের সংখ্যা ২০ লাখের বেশি। এর সঙ্গে ফুটপাতসহ ঈদ উপলক্ষে আরও পাঁচ লাখের বেশি ছোট ছোট দোকান বসে ঈদ মৌসুমে। ঈদে অন্য সময়ের চেয়ে প্রায় দশগুণ বেশি লেনদেন হয় এসব দোকানে। বিশেষ করে ঈদের বাজারে সবচেয়ে বড় অংশজুড়েই রয়েছে বস্ত্র খাদ্যসামগ্রী। বস্ত্রের মধ্যে শার্ট, প্যান্ট, পায়জামা, পাঞ্জাবি, সালোয়ার-কামিজ, ফতুয়া, শাড়ি, লুঙ্গি টুপি ইত্যাদি। এরপর রয়েছে জুতা, প্রসাধনী, স্বর্ণালঙ্কার। এসব অধিকাংশ দোকানেই ১০ রমজানের পর থেকে বেচাকেনা বেড়েছে। চলবে চাঁদ রাত পর্যন্ত। এদিকে নিউ মার্কেট ফার্মগেটে ফুটপাতেও বেচাকেনা বেড়েছে। নিম্ন  মধ্য আয়ের হাজারো ক্রেতা সেখানে ভিড় করছেন।

ধানমন্ডির এআর প্লাজায় কাপড় জুতার দোকানের ব্যবস্থাপক আলী রাজ জানান, এখন স্বল্প পরিসরে বিক্রি হচ্ছে। আশা করছি, ঈদের ১০ দিন আগে পুরোদমে বিক্রি শুরু হবে। বসুন্ধরা সিটিররিচম্যান এক শাখার ব্যবস্থাপক জানান, মাসের মাঝামাঝি হওয়ায় চাকরিজীবীরা এখনো বেতন পাননি। রমজানের শেষ ১২ দিনে বিক্রি বাড়বে বলে আশা করছি। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ২০ রোজা থেকে পুরোদমে কেনাকাটা শুরু হবে।

ফুটপাতেও উপচেপড়া ভিড় দেইখ্যা লন, বাইছ্যা লন, এক দাম।রাজধানীর গুলিস্তানের বঙ্গবন্ধু এভিনিউর ফুটপাত ধরে এমন স্লোগান এখন নিত্যদিনের। সারি সারি স্টল সাজিয়ে বাহারি পোশাকের পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। প্রতিটি স্টলেই উপচেপড়া ভিড়। শুধু গুলিস্তান নয়, রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর দক্ষিণ গেট, মতিঝিলের শাপলা চত্বর, আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে, সেগুনবাগিচা, মৌচাক, ফার্মগেট মিরপুরে ১০ গোলচত্বর নম্বর ফুটপাত সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, সর্বত্রই ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। ইফতারির আগে এসব দোকানে কেনাবেচাও হচ্ছে ভালো।

×