ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আজ বিশ্ব পর্যটন দিবস

পর্যটক আকর্ষণে ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করার উদ্যোগ

প্রকাশিত: ২১:২৮, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১

পর্যটক আকর্ষণে ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করার উদ্যোগ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিদেশী পর্যটক আকর্ষণে ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মোঃ মাহবুব আলী। বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে রবিবার সচিবালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী এ কথা জানান। করোনার পর পর্যটন আকর্ষণে বিভিন্ন দেশ অন-এ্যারাইলভাল ভিসা চালুসহ ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশের পদক্ষেপ আছে কিনা- জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলেছি কীভাবে ভিসা পদ্ধতি সহজ করা যায়? তারা (বিদেশী পর্যটক) যাতে আসতে পারে, আমাদের দেশের নান্দনিক সৌন্দর্য যাতে উপভোগ করতে পারে। তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে প্রধানমন্ত্রী কক্সবাজার বিমানবন্দর উদ্বোধনকালে বক্তব্যে বলেছেন, বিদেশীদের জন্য একটি এক্সক্লুসিভ জোন করা। সেই লক্ষ্যেও আমরা অগ্রসর হচ্ছি। সংবাদ সম্মেলনে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান, বিটিবির চেয়ারম্যান জাবেদ আহমেদ, বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান মোঃ হান্নান মিয়াসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ মোকাম্মেল হোসেন বলেন, আমরাও অন-এ্যারাইভাল ভিসা সহজীকরণের জন্য উদ্যোগ নিয়েছি। সুরক্ষা সেবা বিভাগে এ বিষয়ে লিখেছি। অন-এ্যারাইভাল ভিসা দেয়ার ক্ষেত্রে আমাদের কিছু দেশীয় আইন-কানুন রয়েছে। সেই অনুযায়ী বিবেচনা করা হচ্ছে। যাতে সহজ করা যায়, বিদেশী পর্যটকদের আকৃষ্ট করার জন্য যা যা করা দরকার সেই বিষয়ে আমরা উদ্যোগ গ্রহণ করেছি, লিখেছি। আশা করছি ভিসা সহজীকরণ খুব তাড়াতাড়ি হয়ে যাবে। করোনার আগে পর্যটন নিয়ে মাস্টার প্ল্যানের কাজ চলছিল, সেটির কী অবস্থা। জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেন, কোভিড শুরু হওয়ার আগে আমরা একটা আন্তর্জাতিক সংস্থাকে কার্যাদেশ দিয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক ইচ্ছা- পর্যটনকে নিয়ে একটা প্ল্যানড ওয়েতে অগ্রসর হওয়া। মাস্টার প্ল্যান শেষ হওয়ার পরই আমরা আমাদের কাজে হাত দেব। কিন্তু করোনার কারণে তাদের কাজ বন্ধ ছিল, তাদের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। তারা শীঘ্রই আসবেন এবং ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে মাস্টার প্ল্যানের কাজ শেষ হবে বলে আশা করি। করোনায় পর্যটন খাতে ক্ষতিগ্রস্তদের ঋণ পেতে জটিলতা হচ্ছে- এ বিষয়ে বিমান ও পর্যটন সচিব বলেন-প্রধানমন্ত্রী এই শিল্পের জন্য দেড় হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন। সেই অনুযায়ী আমরা বিভিন্ন খাত, উপখাতে ভাগ করেছি। আমরা তা বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠিয়ে ছিলাম ব্যাংক অর্থ মন্ত্রণালয়ের পাঠাতে বলেছিল। পরবর্তী সময়ে আমরা অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলেছি। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। বাংলাদেশ ব্যাংক পজিটিভলি এটা দ্রুত দেয়ার জন্য চেষ্টা করছে। আমরাও এটা নিয়ে পারসিউ করছি। আশা করছি খুব সহসাই এটা সমন্বয় করা হবে এবং প্রদান করা হবে। যারা করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তারা যাতে ঋণটি সহজে পেতে পারেন, সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। আজ সোমবার বিশ্ব পর্যটন দিবস। জাতিসংঘের বিশ্ব পর্যটন সংস্থা ১৯৮০ সাল থেকে প্রতিবছর ২৭ সেপ্টেম্বর বিশ্ব পর্যটন দিবস পালন করছে। এর লক্ষ্য হচ্ছে, বিশ্ববাসীকে পর্যটনের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন করা এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও জাতীয় অর্থনীতিতে পর্যটনের অবদান সম্পর্কে অবহিত করা। সোমবার বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে বিশ্ব পর্যটন দিবস পালিত হতে যাচ্ছে। এবারের বিশ্ব পর্যটন দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে- ‘টুরিজম ফর ইনক্লুসিভ গ্রোথ অর্থাৎ অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধিতে পর্যটন। সারা বিশ্বের পর্যটন শিল্প কোভিড-১৯ মহামারীর এই সময়ে একটি বিশেষ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। কোভিড-১৯ এর কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পগুলোর একটি পর্যটন শিল্প। বাংলাদেশও বৈশ্বিক এই পরিস্থিতির বাইরে নয়। এই মহামারীর কারণে দীর্ঘদিন আমাদের পর্যটন স্পট ও এই শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসমূহ বন্ধ করে রাখতে হয়েছিল। বর্তমানে দেশে কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ কমার কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যটন স্পটগুলো খুলে দেয়া হয়েছে। অভ্যন্তরীণ পর্যটকরা আগ্রহের সঙ্গে বিভিন্ন পর্যটন স্পটে ভ্রমণ করার কারণে আস্তে আস্তে দেশের পর্যটন শিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসমূহ ঘুরে দাঁড়াচ্ছে, গতি ফিরছে দেশের পর্যটন শিল্পে। তাই এ বছরের বিশ্ব পর্যটন দিবস উদযাপন পর্যটনকে দেশী-বিদেশী পর্যটকের সামনে তুলে ধরা ও তাদের এ সম্পর্কে জানানোর একটি বিশেষ সুযোগ।
×