ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

করোনায় রাজশাহী খুলনা ও ঝিনাইদহে ৩৮ জনের মৃত্যু

প্রকাশিত: ২৩:০৮, ২৪ জুন ২০২১

করোনায় রাজশাহী খুলনা ও ঝিনাইদহে ৩৮ জনের মৃত্যু

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে একদিনে আরও ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে ১১ পুরুষ ও পাঁচ নারী। যাদের আটজনের করোনা পজিটিভ ছিল। বাকিরা উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এছাড়া খুলনার সরকারী ও বেসরকারী হাসপাতালে আরও ১৩ জন, ঝিনাইদহে আটজন, কুষ্টিয়া, বগুড়া ও নওগাঁয় চারজন করে, বাগেরহাট ও চট্টগ্রামে তিনজন করে এবং পাবনায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া শেরপুরে মারা গেছে একজন। তার নাম মনিরুজ্জামান মনির (৪৩)। বুধবার সকালে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। জেলায় নতুন করে আক্রন্ত হয়েছে ৪২ জন। মঙ্গলবার থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত এসব মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। খবর স্টাফ রিপোর্টার ও নিজস্ব সংবাদদাতাদের। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে বুধবার সকাল ৬টার মধ্যে রাজশাহীর আটজন, চাঁপাইনবাগঞ্জের তিনজন, নাটোরের দুইজন, নওগাঁর দুইজন ও ঝিনাইদহের একজন মারা যান এই হাসপাতালে। এদের মধ্যে তিনজন মারা যান আইসিইউতে। মৃতদের মধ্যে আটজনের বয়স ৬১ বছরের ওপরে। বাকিদের ৩১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে। এ নিয়ে চলতি মাসের গত ২৩ দিনে এ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মারা গেলেন ২৪৫ জন। শামীম ইয়াজদানী জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৬০ জন। এর মধ্যে রাজশাহীর ৪৪ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ছয়, নাটোরের দুই, নওগাঁর পাঁচ, পাবনার দুই ও ঝিনাইদহের একজন। সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৪২ জন। তিনি বলেন, করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন ৪১০ জন রোগীর মধ্যে রাজশাহীর ২৭৪ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৬০ জন, নাটোরের ২৬ জন, নওগাঁর ৩৪ জন, পাবনার নয়জন, কুষ্টিয়ার তিনজন এবং চুয়াডাঙ্গার দুইজন রয়েছেন। আইসিইউতে ভর্তি আছেন ২০ জন। এদিকে রাজশাহীতে টানা চারদিন ধরে কমেছে করোনা সংক্রমণ। সর্বশেষ মঙ্গলবার দুটি ল্যাবে রাজশাহীর ৪৫৭ নমুনা পরীক্ষা করে ১৫১ জনের শরীরে করোনা পাওয়া গেছে। রামেক হাসপাতালে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হওয়া ৬০ জনের মধ্যে গ্রামের রোগী ৩৮ জন জানিয়ে ব্রিগেডিয়ার ইয়াজদানী বলেন, এখন ৬০ শতাংশের ওপরে রোগী গ্রাম থেকে আসছে। খুলনায় ১৩ জন ॥ খুলনায় সরকারী ও বেসরকারী তিন করোনা হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আওতায় ডেডিকেটেড ১৩০ শয্যার হাসপাতালে ছয়জন. খুলনা জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে একজন এবং নগরীর বেসরকারী গাজী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ছয়জন মারা গেছেন। খুলনা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, মৃত্যুবরণকারী ১৩ জনের মধ্যে খুলনা মহানগরী ও জেলার আটজন। ঝিনাইদহে আটজন ॥ লকডাউনের মধ্যে বুধবার করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে আটজনের। নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে আরও ১১৭ জন। মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে চারজন, হরিণাকুন্ডুর রহিমপুর গ্রামে একজন, শৈলকুপার বাগুটিয়া গ্রামে একজন, মহেশপুরের আজমপুর গ্রামে একজন ও কোটচাঁদপুরের মায়াধরপুর গ্রামে একজন রয়েছে। এ নিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ৭৯ জনে। এছাড়া সদর হাসপাতালে করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছে দুজন। মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৩ হাজার ৬শ’ ৩৮ জনে। কুষ্টিয়ায় চারজন ॥ গত ২৪ ঘণ্টায় কুষ্টিয়ায় করোনা আক্রান্ত আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় জেলায় নতুন করে আরও ১২২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এদিকে বুধবার থেকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালটিতে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এ হাসপাতালে বর্তমানে ১২২ জন করোনা আক্রান্ত রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বগুড়ায় চারজন ॥ গত ২৪ ঘণ্টায় বগুড়া মেডিক্যাল কলেজ ও মোহাম্মাদ আলী হাসপাতালে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে তিনজনের বাড়ি বগুড়া ও একজনের বাড়ি নওগাঁ জেলায়। বগুড়ার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ৬২ জন। এদিকে জেলার হাসপাতালে করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বুধবার সকাল পর্যন্ত বগুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ ৩টি হাসপাতালে ২৮৯ জন করোনা রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছে। নওগাঁয় চারজন ॥ নওগাঁয় গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে একদিনে সর্বোচ্চ ৪ ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। মৃত এই ৪ ব্যক্তির বাড়ি নওগাঁ সদর উপজেলায়। জেলায় এ পর্যন্ত মোট মৃত্যু হলো ৬৮ ব্যক্তির। মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুর এই ঘটনা ঘটে। বাগেরহাটে ৩ জন ॥ বাগেরহাটে করোনা আক্রান্ত হয়ে আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ৭৩ জন মারা গেলেন। বুধবার বাগেরহাটে ১৩৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় নতুন করে ৬০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। জেলায় করোনা শনাক্তের হার ৪০ থেকে ৫০ শতাংশের মধ্যে ওঠা-নামা করছে। চট্টগ্রামে তিনজন ॥ চট্টগ্রাম জেলায় করোনা শনাক্তের হার উদ্বেগজনক পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার বিচারে সর্বশেষ চব্বিশ ঘণ্টায় শনাক্ত ২২ শতাংশ। মৃত্যু হয়েছে আরও ৩ জনের। এ নিয়ে জেলায় মৃতের সংখ্যা ৬৬৫। পাবনায় দুজন ॥ পাবনা জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ২ রোগীর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার দুপুরে তারা মারা যান। মৃতরা হলেন সদর উপজেলার ভাড়ারা ইউনিয়নের সূর্য সরকারের ছেলে আব্দুর রশিদ সরকার (৫০) ও শহরের আরিফপুরের আব্দুর রাজ্জাকের মেয়ে ইয়াসমিন আক্তার (৩৮)। গাইবান্ধায় নতুন শনাক্ত ১০ ॥ গাইবান্ধায় গত ২৪ ঘণ্টায় বুধবার করোনায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১০ জন। এর মধ্যে সদরে ৪, পলাশবাড়ীতে ১ ও সাদুল্যাপুর উপজেলায় ৫ জন। ঝালকাঠিতে ১১ জন আক্রান্ত ॥ গত ২৪ ঘণ্টায় বুধবার পর্যন্ত করোনায় ১১ জন আক্রান্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় ১৪৭৬ জনের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হলো। যশোরে ৯ জনের মৃত্যু ॥ যশোরে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ১২১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। করোনা ও করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন ৯ জন। উচ্চঝুঁকির কারণে যশোরের পাঁচ পৌরসভা ও ৯ ইউনিয়নে মানুষের চলাচলে কঠোর বিধি নিষেধ চলছে। এদিকে করোনা সংক্রমণের হার উর্ধমুখী হওয়ায় চলমান বিধিনিষেধ বাড়ানো হয়েছে আরও ৭ দিন। সেই সঙ্গে জনগণকেও সচেতন হওয়ার পরামর্শ প্রশাসনের। সাতক্ষীরায় ৮ জনের মৃত্যু ॥ গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে সাতক্ষীরায় ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭জন ও করোনা পজিটিভ ১জনের মৃত্যু হয়েছে । এ নিয়ে জেলায় ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন মোট ৬৩ জন। আর উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন ২৮৯ জন। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ১৭১ জনের নমুনা পরীক্ষা শেষে ৭৭ জনের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৪৫ দশমিক ০২ শতাংশ। চুয়াডাঙ্গায় ৫ জনের মৃত্যু ॥ চুয়াডাঙ্গায় করোনা আক্রান্ত হয়ে আরও ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একজন ও নিজ বাড়িতে হোম আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুজন। এরা তিনজন হলেন-চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার ঝিনাইদহ বাসস্ট্যান্ডপাড়ার খলিল রহমানের স্ত্রী জাহানারা বেগম (৬০), জীবননগর উপজেলার কালা গ্রামের মাঝের পাড়ার মৃত ফকির চাঁদ বিশ্বাসের ছেলে আবুল কাশেম বিশ্বাস (৭০) ও একই উপজেলার বেনিপুর গ্রামের ফকরুদ্দীন বিশ্বাসের মেয়ে ফরিদা খাতুন (৪০)।
×