ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

পপগুরু আজম খানকে হারানোর এক দশক

প্রকাশিত: ১৫:১০, ৫ জুন ২০২১

পপগুরু আজম খানকে হারানোর এক দশক

অনলাইন ডেস্ক ॥ দেখতে দেখতে একটি দশক পেরিয়ে গেল। দেহ ত্যাগ করেছেন ১০ বছর আগে, কিন্তু এখনো ভক্তদের হৃদয়ে জীবন্ত মুক্তিযোদ্ধা ও পপগুরু আজম খান। আজ শনিবার (৫ জুন) এই কিংবদন্তি সংগীতশিল্পীর চলে যাওয়ার ১০ বছর পূর্ণ হয়েছে। দীর্ঘদিন দুরারোগ্য ব্যাধি ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করে ২০১১ সালের ৫ জুন ঢাকার একটি হাসপাতালে লাখো ভক্তকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে যান আজম খান। ১৯৫০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার আজিমপুরের ১০ নম্বর সরকারী কোয়ার্টারে জন্মগ্রহণ করেন আজম খান। তার বাবা আফতাবউদ্দিন আহমেদ ছিলেন সরকারি চাকরিজীবী এবং মা জোবেদা খাতুন সংগীতশিল্পী। ১৯৫৫ সালে প্রথমে আজিমপুরের ঢাকেশ্বরী স্কুলে শিশুশ্রেণিতে ভর্তি হন আজম খান। ১৯৬৮ সালে সিদ্ধেশ্বরী হাইস্কুল থেকে এসএসসি এবং ১৯৭০ সালে টিঅ্যান্ডটি কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন এই গায়ক। ১৯৬৯ সালের গণ অভ্যুত্থানের সময়ে আজম খান পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। ৭১-এ যুদ্ধ শুরু হলে তিনি পায়ে হেঁটে আগরতলা চলে যান। সেখান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। সে সময় তার বয়স ছিল ২১ বছর। সেকশন কমান্ডার হিসেবে আজম খান ঢাকা ও এর আশেপাশে বেশ কয়েকটি গেরিলা আক্রমণেও অংশ নেন। মুক্তিযুদ্ধের পর ‘উচ্চারণ’ নামের একটি ব্যান্ডদলের মধ্য দিয়ে দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করেন আজম খান। ১৯৭২ সালে বিটিভিতে ‘এতো সুন্দর দুনিয়ায় কিছুই রবে না’ গানটি প্রচারের পর তুমুল জনপ্রিয়তা ও প্রশংসা পান পপগুরু। এরপর থেকেই তার গান ছড়িয়ে পড়ে দেশের প্রতিটি প্রান্তে। গানের ভাষা সহজ ও বাস্তবভিত্তিক হওয়ায় গানগুলো মানুষকে সহজেই স্পর্শ করে ফেলে। আজম খানের পাড়ার বন্ধু ছিলেন পপ সংগীতের আরেক দিকপাল বর্তমানে প্রয়াত ফিরোজ সাঁই। পরবর্তীকালে তারই মাধ্যমে আজম খান পরিচিত হন ফকির আলমগীর, ফেরদৌস ওয়াহিদ, পিলু মমতাজদের সঙ্গে। একসঙ্গে বেশ কিছু তুমুল জনপ্রিয় গান উপহার দেন তারা। ১৯৮২ সালে ‘এক যুগ’ নামে আজম খানের প্রথম অডিও ক্যাসেট বের হয়। এরপর একে একে ১৭টি অডিও ক্যাসেট ও সিডি প্রকাশ করেন তিনি। আজম খানের জনপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে ‘বাংলাদেশ’, ‘আলাল ও দুলাল’, ‘ওরে সালেকা ওরে মালেকা’, ‘অভিমানী’, ‘আমি যারে চাইরে’, ‘হাইকোর্টের মাজারে’, ‘এত সুন্দর দুনিয়ায়’ ইত্যাদি।
×