ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কার হচ্ছে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম

প্রকাশিত: ১৯:১০, ২৫ জানুয়ারি ২০২১

সংস্কার হচ্ছে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অনেক দেরিতে হলেও অবশেষে সংস্কার হতে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম। এই স্থাপনাটির খসড়া নকশা শতভাগ প্রস্তুত হয়েছে। টেন্ডার কার্যক্রম প্রায় শেষ পর্যায়ে। এ মাসেই ওয়ার্ক অর্ডার পেতে যাচ্ছে ১৯৫৪-৫৫ সালে স্থাপিত হওয়া স্টেডিয়ামটি। এমনটাই জানিয়েছেন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব মাসুদ করিম। এ সময় বাংলাদেশ গেমসসহ অন্য ফেডারেশনের ব্যস্তসূচি থাকলেও কয়েক ধাপে স্টেডিয়ামের সংস্কার কাজ সম্পন্ন করা হবে বলেও জানান তিনি। ঢাকার ব্যস্ততম এলাকা গুলিস্তানে সমৃদ্ধ ঐতিহ্য নিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম। ফুটবল, ক্রিকেটের পাশাপাশি হকি, আরচারি, এ্যাথলেটিক্স, বক্সিং, আয়োজনের উদাহরণ আছে এই স্টেডিয়ামে। মোহাম্মদ আলী, লিওনেল মেসি-জিনেদিন জিদানের মতো তারকারাও মাতিয়ে গেছেন এই মাঠ। পাশাপাশি জাতীয় দিবস আর রাষ্ট্রীয় আয়োজনের গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চও এই স্টেডিয়াম। এবার স্টেডিয়ামের মূল অবকাঠামো ঠিক রেখেই সাজানো হয়েছে নতুন ডিজাইন। যার খসড়া নকশাও চূড়ান্ত। যদিও করোনায় বছরখানেক পিছিয়েছে সংস্কার কার্যক্রম। এলএডি ফ্লাডলাইট, টার্ফ, মাঠ উন্নয়ন এগুলো ভিন্ন ভিন্ন প্যাকেজে হবে। সেভাবেই এর টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। এখন এটা মুল্যায়নের পর্যায়ে। অগাামী এক সপ্তাহ অথবা ১০ দিনের মধ্যে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর সম্মতি পেলেই এর কার্যাদেশ দিয়ে দেয়া হবে। শুরুতেই প্রেসিডেন্ট বক্স ও ভিআইপি জোন দিয়ে শুরু হবে স্টেডিয়ামের সংস্কার কাজ। এলএডি ফ্লাডলাইট, শেড, জায়ান্ট স্ক্রিনসহ আমদানি নির্ভর স্থাপনার কাজ হবে দ্বিতীয় পর্বে। সবার শেষে মূল মাঠ ও এ্যাথলেটিক্স ট্র্যাকের কাজ করা হবে। যেখানে ভিআইপি প্রবেশপথে হল অব ফেমের ফলক নির্মাণেও আছে পরিকল্পনা। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে ক্রীড়া ইভেন্টগুলোকে গুরুত্ব দিয়েই সংস্কার কাজ করা হবে। বাজেট ছিল। প্রয়োজনীয় অর্থও ছিল। তারপরও শুরু করা যায়নি এই স্টেডিয়ামের সংস্কার কাজ! দেড় বছর আগে এই স্টেডিয়াম সংস্কারের জন্য ৯৮ কোটি টাকার বাজেট একেনেকে পাশ হলেও, কাজের অগ্রগতি আটকে যায় ই-টেন্ডারের মাঝেই। এই ধীরগতির কারণ সম্পর্কে কোন সদুত্তর ছিল না জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কাছে। ২০১৯ সালের জুনে পাশ করা হয় আন্তর্জাতিক এই স্টেডিয়ামটির সংস্কার বাজেট। কিন্ত তখনও তা আলোর মুখ দেখেনি। শুরুতে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পরিকল্পনা ছিল স্পোর্টস স্থাপনা নিয়ে কাজ করে এমন কোন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাছে দায়িত্ব তুলে দেয়ার। এ জন্য খোঁজখবরও লাগিয়েছিল এনএসসি। কিন্তু কেন যে সেখান থেকে সরে গিয়ে ই-টেন্ডারের পথে নীতি নির্ধারকরা, তা তখনও অজানাই ছিল! শুধু দেশের খেলাধুলার নয়। আন্তর্জাতিক মহলে লাল-সবুজের ভাবমূর্তি বহন করে এই স্টেডিয়াম। তাই এর রুগ্ন হালে ভাবমুর্তি নষ্ট হয়। কয়েকমাস আগেই ফিফা হুঁশিয়ারি দিয়েছিল-দ্রুত ও যথাযথভাবে সংস্কার করা না হলে এই স্টেডিয়ামের ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যাটাস কেড়ে নেয়া হবে। সংস্কারের পর হয়তো পুরো স্টেডিয়ামই পাবে নতুন রুপ। কিন্তু বছরের পর বছর বাণিজ্যিক এলাকায় পরিণত হওয়া স্টেডিয়াম পাড়া কি বদলাবে? যেখানে দোকানপাট-ব্যবসা নয়, থাকবে শুধু ক্রীড়াবিদদের পদচারণা।
×