ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

টঙ্গীতে ২১ মামলার শীর্ষ মাদক কারবারীর আত্মসমর্পণ

প্রকাশিত: ১৮:২৬, ২১ জানুয়ারি ২০২১

টঙ্গীতে ২১ মামলার শীর্ষ মাদক কারবারীর আত্মসমর্পণ

নিজস্ব সংবাদদাতা, টঙ্গী ॥ টঙ্গীর শীর্ষ মাদক কারবারী ২১ মামলার আসামী স্বপন (৩৫) স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে বৃহস্পতিবার পুলিশের কাছে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করেছে। এ সময় পুলিশ তাকে ফুল দিয়ে বরন করে নেয় এবং পরে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠায়। টঙ্গী পশ্চিম থানা কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিক আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের টঙ্গী জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার আশরাফুল ইসলাম, টঙ্গী পশ্চিম থানার (ওসি) শাহ আলম, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জাহিদুল ইসলাম, স্বপনের মা রাশিদা বেগম এবং টঙ্গীর শীর্ষ মাদক স্পট হিসেবে পরিচিত হাজী মাজার বস্তির বিপুল সংখ্যক নারী-পুরুষ। আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে স্বপন, পুলিশ এলাকাবাসী ও জনপ্রতিনিধিদের সামনে সাংবাদিকের বলেন, জীবনে আর কখনো সে মাদক কারবারে জড়াবে না। স্বপন জনকণ্ঠকে জানান, বর্তমানে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ২১ মামলার ফেরারি আসামী সে। ইতিপূর্বে সে ৪ বার জেলও খেটেছে। স্বপনের মা রাশিদা বেগম জানান, তাদের বাড়ি জামালপুর জেলার ইসলামপুর থানার ফুলগারচর গ্রামে হলেও জন্মের পর থেকে স্বপন টঙ্গী বাজার হাজী মাজার বস্তিতে বড় হয়েছে। তার ১৩ বছরের এক পুত্র সন্তান রয়েছে। স্বপন আরো জানায়, প্রথমে ২/৩ বছর সে প্রচন্ডভাবে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে মাদকের টাকা জোগাড় করতে মাদক কারবারে জড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে সে টঙ্গীর শীর্ষ মাদক কারবারীতে পরিনত হয়। পরে সে ক্রসফায়ারে নিহত মাদক কারবারী বাচ্চুর সেকেন্ড ইন-কমান্ড হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে থাকে। বাচ্চু র‌্যাবের ক্রস ফায়ারে মারা যাওয়ার পর স্বপন গা ঢাকা দেয়। পরে স্বপন পালিয়ে থেকে মাদক বেচা-কেনা শুরু করে। সম্প্রতি গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের পুলিশ কমিশনার খন্দকার লুৎফুল কবিরের মাদক নিয়ন্ত্রণে জিরো টলারেন্স শুরু করা হলে সে কোনঠাসা হয়ে পড়ে। পরিবার-পরিজন ছেড়ে পালিয়ে থাকা এই জীবনকে তার কাছে অভিশপ্ত জীবনে রুপ নেয়। সে স্বেচ্ছায় পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাবার সিদ্ধান্ত নেয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তার মা ও এলাকার হাজী মাজার বস্তির মুরব্বীদের সাথে নিয়ে স্হানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর গিয়াসউদ্দিন সরকারের সাথে সাক্ষাৎ করে এবং মাদক কারবার ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে কাউন্সিলরের সহযোগিতা চায়। ওয়ার্ড কাউন্সিলর গিয়াস উদ্দিন সরকার স্বপনের আগ্রহ দেখে পুলিশে যোগাযোগ করে তাকে আত্মসমর্পণ করানোর ব্যস্হা করান। কাউন্সিলর গিয়াসউদ্দিন সরকার জনকণ্ঠকে বলেন, আজ আমি একটি ভাল কাজ করেছি। এলাকায় আরো যারা মাদক কারবারি আছে তাদেরকে ও এমনভাবে আত্মসমর্পণে সহযোগিতা করাবো এই অন্ধকার জগত ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার জন্য। আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে টঙ্গী জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার আশরাফুল ইসলাম বলেন, অন্ধকার থেকে আলোর পথে ফিরে আসতে আমরা স্বপনকে সহযোগিতা করছি মাত্র। ওসি শাহ আলম বলেন, আইনগত সহায়তা ছাড়াও স্বপন জামিনে বেরিয়ে আসলে কর্মসংস্হানের ব্যবস্হাসহ তাকে আমরা সব ধরণের সহযোগিতা করবো।
×