কক্সবাজারে শিশু ধর্ষণ মামলার বাদী খুন

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার ॥ রামুর গর্জনিয়ায় তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রীকে ধর্ষণ মামলার বাদী মুহাম্মদ ইউনুছকে হত্যা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। ইউনুছ গর্জনিয়ার গলাছিরা দোছরির মরহুম কালাম বকসুর পুত্র এবং নির্যাতিতা শিশুটির (ভিকটিম) পিতা। শুক্রবার বাদীপক্ষের আইনজীবী আমান উল্লাহ আমানু বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, নিহতের লাশ চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে। সেখানেই লাশের ময়নাতদন্ত হবে। এ্যাডভোকেট আমান উল্লাহ আমানু জানান, বুধবার রাত নয়টায় মুহাম্মদ ইউনুছকে জরুরী কাজের জন্য ডেকে তার বাড়ির উঠানেই পেটে খুন্তা ঢুকিয়ে মারাত্মক আহত করে ধর্ষণ মামলায় কারান্তরীণ আসামি জয়নাল আবেদিনের বড় ভাই মোহাম্মদ ইলিয়াছ (৩৫)। গুরুতর আহত অবস্থায় ইউনুছকে প্রথমে কক্সবাজার সদর হাসপাতাল নেয়া হয়। সেখান থেকে তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। ২০১৮ সালের ১৩ আগস্ট দুপুর ১২টায় দুই বান্ধবী স্কুল থেকে ফেরার পথে দোছরি গলাছিরা কবিরার পাহাড় এলাকায় পৌঁছলে মোহাম্মদ শাহীন ও জয়নাল আবেদীন (কারান্তরীণ) ফুসলিয়ে পার্শ্ববর্তী জঙ্গলে নিয়ে ধর্ষণ করে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণীর ওই দুই ছাত্রীকে। স্থানীয়রা দুই বান্ধবীকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে। তাদের কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি করে। সেখানেই তাদের চিকিৎসা চলে। এ ঘটনায় তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ুয়া শিশু ভিকটিমের পিতা মুহাম্মদ ইউনুছ ২৬ আগস্ট কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন। মামলার একমাত্র আসামি গর্জনিয়ার গলাছিরা দোছরি এলাকার নুরুল ইসলামের পুত্র জয়নাল আবেদীন (২২) বর্তমানে কারাবন্দী। আদালতের নির্দেশে মামলাটি তদন্ত করে চট্টগ্রাম বিভাগীয় সিআইডি। তদন্তে ঘটনার সত্যতা মেলে। আদালতে প্রতিবেদনও জমা করেছেন সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তা। গত ১৩ জানুয়ারি আদালতে বাদীপক্ষের সাক্ষীর জবানবন্দী গ্রহণ শুরু হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে বাদীকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভিকটিমের পরিবারের সদস্যরা। দুই শিশুকে ধর্ষণ ঘটনায় কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। একটি মামলার বাদী মোহাম্মদ ইউনুছ। তার ভিকটিম মেয়ে স্থানীয় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণীতে অধ্যয়নরত। আরেকটি শিশু ধর্ষণ মামলার বাদী বুলবুল আকতার। দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ুয়া তার মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে মুহাম্মদ শাহীন নামের এক বখাটেকে এ মামলায় আসামি করা হয়েছে।