ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছে অশুভ সাম্প্রদায়িক শক্তি ॥ কাদের

প্রকাশিত: ২৩:০৩, ১৭ ডিসেম্বর ২০২০

মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছে অশুভ সাম্প্রদায়িক শক্তি ॥ কাদের

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাম্প্রদায়িক অপশক্তির মূল উপড়ে ফেলা হবে মন্তব্য করে বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছে একটি অশুভ সাম্প্রদায়িক শক্তি। এবার বিজয় দিবসের অঙ্গীকার হচ্ছে- আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সাম্প্রদায়িক শক্তিকে রুখে দেব। আমাদের যে শপথ, আমাদের যে আদর্শ, মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ, স্বাধীনতার আদর্শ- এই প্রশ্নে আমরা কোন আপোস করব না। সেটাও আমরা তাদের জানিয়ে দিতে পারি। ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে বুধবার সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে দলের পক্ষে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের কাছে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে রুখে দেয়াই এবারের বিজয় দিবসের অঙ্গীকার জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা বিজয় দিবস উদ্যাপন করছি, কিন্তু এখনও বাংলাদেশের স্বাধীনতার আদর্শ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছে একটি অশুভ ও সাম্প্রদায়িক শক্তি। এবারকার বিজয় দিবসের অঙ্গীকার হচ্ছে আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এ সাম্প্রদায়িক শক্তিকে রুখব। তিনি আরও বলেন, একদিকে ১৯৪৭-এর চেতনা, অন্যদিকে ’৭১-এর চেতনা, একদিকে সাম্প্রদায়িকতা, আরেক দিকে অসাম্প্রদায়িকতা। আজ আমাদের এ দুটি ধারা চলছে, আমাদের আজকের শপথ হবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা মুক্তিযুদ্ধের সব শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিষবৃক্ষ আর যে ডালপালা বিস্তার করেছে, সেই বিষবৃক্ষ আমরা সমূলে উৎপাটন করব। সেই সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণ করব। এটাই হোক এবারকার বিজয় দিবসের শপথ। হেফাজতসহ ধর্মীয় সংগঠনগুলোর নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধুও পাকিস্তানীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন, তারা কি চেয়েছিল, তা জানতে। তাদের (ধর্মীয় সংগঠন) সঙ্গে বৈঠকটা করা হয়েছে, কারণ আমরা জানতে চাই, তারা কী চায়। আমাদের যে শপথ, আমাদের যে আদর্শ, মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ, স্বাধীনতার আদর্শ, এ প্রশ্নে আমরা কোন আপোস করব না। সেটাও আমরা তাদের জানিয়ে দিতে পারি। তা না হলে বৈঠক কেন? এদিকে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশকে বিনষ্ট করার যে আশা নিয়ে ঘাতকের দল বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল, তাদের সে স্বপ্ন সত্যি হয়নি। যে স্বপ্ন দেখে মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করেছিলেন জাতির পিতার নেতৃত্বে, সে স্বপ্ন নতুন প্রজন্ম তুলে নিয়েছে। তারা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। আমাদের আজকে শপথ হবে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের সকল শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি ও সাম্প্রদায়িকতার যে বিষবৃক্ষ ডালপালা বিস্তার করেছে, সাম্প্রদায়িকতার সেই বিষবৃক্ষকে আমরা সমূলে উৎপাটিত করব। স্বাধীনতাবিরোধীদের নির্মূল করা হবেÑ তথ্যমন্ত্রী ॥ মহান বিজয় দিবসে রাজধানীর ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর সড়কে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের কাছে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তিকে নির্মূল করাই হচ্ছে এবারের বিজয় দিবসের প্রত্যয়। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সার্থকতা সেখানেই, বঙ্গবন্ধু যে উন্নত রাষ্ট্র গড়তে চেয়েছিলেন, স্বাধীনতার পর মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় তাঁকে হত্যা করার কারণে তিনি সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে যেতে না পারলেও আজকে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণের পথে অদম্য গতিতে এগিয়ে চলছে। আজকে অর্থনৈতিক, মানব উন্নয়ন, সামাজিক সকল সূচকে আমরা পাকিস্তানকে অতিক্রম করেছি, অনেক সূচকে আমরা ভারতকেও ছাড়িয়ে গেছিÑ এখানেই বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গবন্ধু কন্যার সার্থকতা। ড. হাছান মাহমুদ বলেন, দেশের বিজয়ের ৪৯ বছর পরও আজ স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি মাঝে মধ্যে আস্ফালন করে। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে, বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন জিয়াউর রহমানের প্রতিষ্ঠিত বিএনপি। তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে যারা পাকিস্তানের পক্ষাবলম্বন করে লড়াই করেছিল, দলগতভাবে সেই জামায়াতে ইসলামীকে বিএনপি তাদের জোটসঙ্গী করেছে।
×