ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

নীলফামারীতে চা চাষ বাড়ছে

প্রকাশিত: ২১:৩৮, ৫ ডিসেম্বর ২০২০

নীলফামারীতে চা চাষ বাড়ছে

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ নীলফামারীর মাটি ও আবহাওয়া চা চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় এ জেলায় চা চাষ বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। বর্তমানে ১৫ একর জমিতে চলছে চা চাষ। এটি বৃদ্ধি পেয়ে ২৫ একরের কার্যক্রম চলছে। জানা যায়, ২০১৪ সালে জেলার কিশোরীগঞ্জ উপজেলায় পরীক্ষামূলকভাবে ৩০ শতক জমিতে দুই হাজার চারা রোপণের মধ্য দিয়ে শুরু হয় চা উৎপাদন। পরে উপজেলা পরিষদের পতিত সাড়ে তিন একর জমিতে চারা রোপণ করা হয়। লাভজনক হওয়ায় দিন দিন চা চাষে জমির পরিমাণ বাড়ছে। ২০১৫ সালে উপজেলা প্রশাসনের পরামর্শ এবং চা বোর্ডের সহযোগিতায় ব্যক্তি মালিকানাধীন একটি প্রতিষ্ঠান প্রথমে দেড় একর জমিতে বাণিজ্যিকভাবে চা চাষ শুরু করে। পরবর্তীতে দুই ধাপে তিন মৌজায় ৩৫ একর জমিতে চা চাষ করছে উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠানটি। আর বর্তমানে সরকারী, বাণিজ্যিক ও ব্যক্তিগত সব মিলিয়ে উপজেলায় প্রায় ৫৩ একর জমিতে চা চাষ হচ্ছে। এছাড়া উপজেলা ভূমি অফিসের পতিত জমি, মাগুরা ভূমি অফিসের পতিত জমি ছাড়াও অপর একটি প্রতিষ্ঠানের চা বাগানে বাণিজ্যিকভাবে চা উৎপাদন শুরু হয়েছে। ক্ষুদ্র চা উৎপাদনকারী হিসাবে কিশোরীগঞ্জ, ডোমার ও নীলফামারী সদর উপজেলার ১৩ কৃষক প্রায় ১৫ একর জমিতে ব্যক্তি উদ্যোগে চা চাষ শুরু করেছেন। এসব চা বাগানে প্রতিদিন শতাধিক নারী-পুরুষ কাজ করছেন। ফলে ওই পরিবারগুলোতে লেগেছে অর্থনৈতিক উন্নয়নের ছোঁয়া। ময়নাকুড়ি নামে একটি চা বাগানে কর্মরত নারী শ্রমিক মমিনা খাতুন বলেন, অন্যান্য জায়গায় কাজ করার চেয়ে চা-বাগানে কাজের মজুরি বেশি। এ টাকা দিয়ে ছেলেমেয়ের লেখাপড়ার খরচের যোগান দেয়ার পাশাপাশি পরিবার নিয়ে সুখে দিন কাটাচ্ছি। বাহাগিলি চা বাগানের ব্যবস্থাপক রিফাত হাসান জানান, উপজেলা প্রশাসনের পরামর্শে আমরা চা চাষ শুরু করেছিলাম স্বল্প পরিসরে। পরবর্তীতে হিসেব করে দেখা গেছে, আলু কিংবা ভুট্টা চাষের চেয়ে চা চাষ বেশি লাভজনক। আমরা এখন ৩৫ একর জমিতে চা চাষ করেছি। প্রথম পর্যায়ের ৭ একর জমির বাগানে এ পর্যন্ত এক লাখ ৭৫ হাজার কেজি পাতা বিক্রি করে পাওয়া গেছে প্রায় ২৩ লাখ টাকা। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোকসানা বেগম জানান, উপজেলা পরিষদে সরকারীভাবে চা নার্সারি তৈরির কাজ চলছে। এছাড়া চলতি বছরের মধ্যে বাংলাদেশ চা বোর্ড নীলফামারী জেলায় ২৫ হেক্টর জমি চা চাষের আওতায় আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কাজ চলছে। বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউটের উর্ধতন খামার সহকারী জায়েদ ঈমাম সিদ্দিকী জানান, চা চাষের জন্য নীলফামারী জেলার মাটি ও আবহাওয়া খুবই উপযোগী। পাহাড়ী অঞ্চলে যেখানে তিন বছরে পাতা উত্তোলন শুরু হয় সেখানে এ এলাকায় দেড় থেকে দুই বছরে পাতা উত্তোলন হচ্ছে। প্রসঙ্গত, প্রথমে ভিক্ষুক পুনর্বাসন প্রকল্পের আওতায় পঞ্চগড় চা বোর্ডের কর্মকর্তাদের সহায়তায় পুনর্বাসিত ভিক্ষুকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে নীলফামারীর কিশোরীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের পতিত জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে চা চাষ শুরু করা হয়েছিল। পরীক্ষামূলক সাফল্যের পর বাণিজ্যিকভাবে চা উৎপাদন বাড়তে থাকে নীলফামারীতে।
×