ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

হাইকোর্টকে রাষ্ট্রপক্ষ, শুনানি মুলতবি

রায়হান হত্যা মামলা আলোর মুখ দেখবে দু’সপ্তাহ পর

প্রকাশিত: ২২:৫৯, ৪ নভেম্বর ২০২০

রায়হান হত্যা মামলা আলোর মুখ দেখবে দু’সপ্তাহ পর

স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট অফিস ॥ কিভাবে চলছে রায়হান হত্যা মামলার তদন্ত কাজ। জড়িত অনেকে এখনও রয়েছে ধরা ছোয়ার বাইরে। আকবরকে সহযোগিতাকারীদের চিহ্নিত করতে গঠিত পুলিশের তদন্ত রিপোর্টে কাদেরকে শনাক্ত করা হয়েছে। আকবরকে পালিয়ে যেতে সহায়তাকারী বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির এসআই হাসানকে এখনও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি। এসব নিয়ে চলছে নানান আলোচনা। দুই সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত কাজ শেষ হলে রায়হান হত্যা মামলা আলোর মুখ দেখবে বলেই মনে করছেন সচেতনমহল। রায়হান নির্যাতনের ঘটনার প্রধান অভিযুক্ত বন্দরবাজার ফাঁড়ির বরখাস্ত এসআই আকবরের সন্ধান এখনও পাওয়া যায়নি। সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাবার খবর সত্য কি না গুজব সেটিও এখনও স্পষ্ট নয়। আকবরকে ভারত পালিয়ে যেতে সহায়তাকারী সীমান্তবর্তী কোম্পানীগঞ্জের বাসিন্দা চোরাকারবারি হেলালকে গত ২২ সেপ্টেম্বর পাথর চুরির মামলায় গ্রেফতার করা হয়। হেলালকে জিজ্ঞাসাবাদে আকবরকে ভারতে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা সম্পর্কে উল্লেখযোগ্য কোন তথ্য তার কাছ থেকে পাওয়া যায়নি। রায়হান আহমেদের মৃত্যুর ঘটনায় করা মামলায় দুই সপ্তাহের মধ্যেই তদন্ত সম্পন্ন হবে বলে হাইকোর্টকে জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। ফলে রায়হানের মৃত্যুর ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে করা রিট আবেদনের ওপর শুনানি দুই সপ্তাহের জন্য মুলতবি করা হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে আদালতকে অবহিত করার পর আদালত এ আদেশ দেন। রায়হান নির্যাতনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত অনেক পুলিশ সদস্য এখনও আদালতে জবানবন্দী দেননি। মামলায় কনস্টেবল হারুনুর রশিদকে ১ নবেম্বর দ্বিতীয় দফায় ৩ দিনের রিমান্ডসহ মোট ৮ দিনের রিমান্ড শেষে তাকে আদালতে হাজির করা হলে সিলেট অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন আদালতের বিচারক (ভারপ্রাপ্ত) জিয়াদুর রহমান তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন। আদালতে স্বীকারোক্তি না দেয়ায় তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। রায়হান আহমদ নিহতের ঘটনায় এ পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই। গ্রেফতার হওয়াদের মধ্যে রয়েছেন এএসআই আশেক এলাহী ও কনস্টেবল হারুনুর রশিদ ও টিটু চন্দ্র দাস। হত্যা মামলায় রিমান্ডে থাকা ওই ফাঁড়ির প্রত্যাহারকৃত এএসআই আশেক এলাহী জিজ্ঞাসাবাদের সময় অসুস্থ হয়ে পড়লে ৩০ অক্টোবর তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাকে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের তৃতীয় তলায় মনোরোগ বিভাগের অধীন ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার পরদিন বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ি ছাড়ার আগে সেখানকার সিসিটিভির হার্ডডিস্কও পরিবর্তন করেন আকবর। ফাঁড়ির টুআইসি এসআই হাসান উদ্দিন ও সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের বুড়িডহর গ্রামের বাসিন্দা সংবাদকর্মী আবদুল্লাহ আল নোমানের সহযোগিতায় ওই কাজটি করেন তিনি। ইতোমধ্যে হাসানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। আকবরকে পালানোতে কারা সহযোগিতা করেছেন তা খোঁজে বের করতে তদন্তে নামে পুলিশ সদর দফতরও। এজন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে গত মঙ্গলবার প্রতিবেদনও দাখিল করা হয়েছে। এসআই হাসান আকবরকে সহযোগিতা করার বিষয়টি তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। কিন্তু এসআই হাসানকে এখন পর্যন্ত গ্রেফতার দেখানো হয়নি। আকবরকে পালানোতে কারা সহযোগিতা করেছেন এই মর্মে তদন্ত কাজ সম্পন্ন হলেও কি রয়েছে রিপোর্টে কিংবা কাদের সম্পৃক্ততা রয়েছে সে বিষয় কিছুই জানা যায়নি।
×