ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আওয়ামী লীগের ওয়েবিনার

’৭৫ পরবর্তী দেশকে পাকিস্তান বানাতে চেয়েছিলেন জিয়া

প্রকাশিত: ২৩:০৩, ১৬ আগস্ট ২০২০

’৭৫ পরবর্তী দেশকে পাকিস্তান বানাতে চেয়েছিলেন জিয়া

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগ আয়োজিত ওয়েবিনারে বক্তারা বলেছেন, ’৭৫পরবর্তী বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানাতে চেয়েছিলেন জেনারেল জিয়াউর রহমান। বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচারের পথ রুদ্ধ করে, খুনীদের দেশে-বিদেশে পুরস্কৃত করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকেই ধ্বংস করতে চেয়েছিল। ’৭৫ পরবর্তী বাংলাদেশ ছিল অন্ধকার, যার পুরোটা পাকিস্তানের আদলে সাজাতে চেয়েছিল জেনারেল জিয়া। আর বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে যদি দেশে ফিরে না আসতেন তাহলে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসত না। আর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না এলে কোনদিন ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের বিচার হতো না। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মাধ্যমে জাতি কলঙ্কমুক্ত হতো না। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে শুক্রবার রাতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে আয়োজিত ’৭৫ পরবর্তী বাংলাদেশ ও কিছু অজানা কথা’ শীর্ষক বিশেষ ওয়েবিনারে অংশ নিয়ে বক্তারা এসব কথা বলেন। ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট, স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে নৃশংস ইতিহাস লেখা হয়েছিল। ঘাতকদের হাতে নিহত হয়েছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের প্রায় সকল সদস্য, আত্মীয়- স্বজন এবং বাসায় কর্মরত কর্মচারী ও নিরাপত্তাকর্মীরা। এই নির্মম ঘটনার পর কেমন ছিল বাংলাদেশ? ’৭৫ পরবর্তী বাংলাদেশের কথা তুলে ধরতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজন করেছিল এই ওয়েবিনারের। এতে অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও প্রবীণ রাজনীতিক তোফায়েল আহমেদ বলেন, আমরা প্রতিবছর এই দিনটি শ্রদ্ধা-ভালবাসায় পালন করতাম। যেভাবে আমরা দিনটি পালন করতাম এবার এই কোভিড-১৯ এর সময়ে তা হচ্ছে না। কিন্তু যার জš§ না হলে বাংলাদেশের জš§ হতো না, তাঁকে (বঙ্গবন্ধু) শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি। তিনি বলেন, দেশের স্বাধীনতার জন্য জাতির পিতা জীবনের ১২ বছর কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে কাটিয়েছেন। তাঁর ত্যাগের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি স্বাধীন বাংলাদেশ। তিনি বলেন, জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনার হাতে ঐক্যের প্রতীক হিসেবে আওয়ামী লীগের পতাকা তুলে দিয়েছিলাম। দীর্ঘ ২১ বছর পরে সেই পতাকা ক্ষমতায় এলো। এর পর দেশের সর্বোচ্চ আদালত ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিল করলে জাতির পিতা হত্যাকা-ের বিচারকার্য শুরু করা হয়। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা দিয়েছেন; এর পর তাঁর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে সততার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন তাঁরই কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধু ঘোষিত ছয় দফাকে আমরা সমর্থন দিয়েছিলাম। এর পর বঙ্গবন্ধু যখন স্বাধীনতার ডাক দিলেন তখন আমরা মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়লাম। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু রাতের আলোতে রাজনীতি করতেন না, যা করতেন দিনের আলোতে । মানুষকে সঙ্গে নিয়ে করতেন। এক/দু’জন মানুষ না, তিনি লাখ লাখ মানুষ নিয়ে রাজনীতি করতেন। খুনীদের নেতা জিয়াউর রহমান এদেশ থেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস করে পাকিস্তানী ভাবধারায় ফিরিয়ে নিতে উঠেপড়ে লেগেছিলেন। ভিডিও বার্তায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, সবাইকে নিজ নিজ অবস্থানে থেকে দেশবাসীকে সঙ্গে নিয়ে জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে হবে এবং তাঁর আদর্শে দেশ গড়ার মহান ব্রতে অঙ্গীকারাবদ্ধ হয়ে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস পালন করতে হবে। তিনি বলেন, কোন ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর স্বার্থসিদ্ধির জন্য যেন জাতীয় শোক দিবসের পরিবেশ বিনষ্ট না হয় এবং আওয়ামী লীগের চিরায়ত ঐতিহ্য ও মূল্যবোধ যাতে ক্ষুণœ না হয় সেদিকে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতিম-লীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে যদি দেশে ফিরে না আসতেন তাহলে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসত না। তাহলে কোনদিন ১৫ আগস্ট হত্যাকা-ের বিচার হতো না। বঙ্গবন্ধুকে পাঁচবার হত্যাচেষ্টার ঘটনাবলী উল্লেখ করে নূহ-উল-আলম লেনিন বলেন, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলাসহ নানাভাবে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা চেষ্টা করা হয়। এর পর পাকিস্তানী দুই নাগরিক দিয়ে হত্যাচেষ্টা চালানো হয়। সবশেষ দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রে তাঁকে হত্যা করে পাকিস্তানী ভাবধারায় দেশকে ফিরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করা হয়, যার মাস্টারমাইন্ড ছিলেন জিয়াউর রহমান। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সিনিয়র সাংবাদিক অজয় দাশ গুপ্ত। এছাড়াও আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য আব্দুর রহমান, আওয়ামী লীগের মুখপত্র ‘উত্তরণ’-এর সম্পাদক নূহ-উল-আলম লেনিন এবং শিক্ষামন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডাঃ দীপু মনি বক্তব্য রাখেন।
×