ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সাবেক হুইপ আশরাফ ও যুবমন্ত্রী আবুল কাশেমের ইন্তেকাল

প্রকাশিত: ২৩:১৭, ১৯ জুলাই ২০২০

সাবেক হুইপ আশরাফ ও যুবমন্ত্রী আবুল কাশেমের ইন্তেকাল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জাতীয় সংসদের সাবেক হইপ, বিএনপির সংস্কারপন্থী নেতা আশরাফ হোসেন আর নেই। শনিবার ভোর সাড়ে চারটায় তিনি রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন ( ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। বাদ জোহর ঢাকার বাসার কাছে নিকুঞ্জ জামে মসজিদে প্রথম ও বিকেলে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার নাল্লা গ্রামে দ্বিতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়। মরহুমের ভাগ্নি সাংবাদিক সুলতানা কাকন জানান, দীর্ঘদিন ডায়াবেটিস ও হৃদরোগসহ বিভিন্ন বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। তিনি দুই পুত্র, এক কন্যা ও নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য ভক্ত ও অনুসারী রেখে গেছেন। তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ছিলেন। তবে ২০০৭ সালে দলের সংস্কার চাওয়ায় মহাসচিব মান্নান ভুইয়ার সঙ্গে তাঁকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়। খুলনা-৩ আসন থেকে আশরাফ হোসেন বিএনপির মনোনয়নে চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। শ্রমবান্ধব রাজনীতিবিদ হিসেবে তিনি খুলনা তথা দক্ষিণ বাংলার শ্রমিকদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয় ছিলেন। খুলনা জুট ওয়ার্কার্স ইনস্টিটিউটের সভাপতিও ছিলেন তিনি। অষ্টম জাতীয় সংসদে (২০০১-২০০৬) আশরাফ হোসেন হুইপ ছিলেন। ইউনাইটেড হাসপাতাল থেকে মরদেহ নিকুঞ্জের বাসায় নেয়া হলে পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে। কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তারা। বাদ জোহর নিকুঞ্জ জামে মসজিদে জানাজা শেষে লাশবাহী ফ্রিজিংকারে কফিন নেয়া হয় কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার নাল্লা গ্রামে। সেখানে বিকেলে দ্বিতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবরের পাশে তাঁকে দাফন করা হয়। সাবেক যুবমন্ত্রী আবুল কাশেম মারা গেছেন ॥ যুবদলের প্রথম সভাপতি ও সাবেক যুবমন্ত্রী আবুল কাশেম মারা গেছেন ( ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। শনিবার ভোর ৪টায় বনানীর বাসায় তাঁর মৃত্যু হয়। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিস ও হৃদরোগসহ বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন। তিনি এক ছেলে ও দুই মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। কুমিল্লা সদর উপজেলার পালপাড়া গ্রামে আছিয়া গনি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবরের পাশে তাঁকে দাফন করা হয়। ১৯৭৮ সালের ২৭ অক্টোবর জিয়াউর রহমান জাতীয়তাবাদী যুবদল গঠনের পর এর আহ্বায়ক করেছিলেন আবুল কাশেমকে। পরে যুবদলের সভাপতির দায়িত্ব পান তিনি। যুব মন্ত্রণালয় গঠনের পর আবুল কাশেমকে ওই মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন জিয়া। পরে তিনি ওই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্বও পান। ১৯৭৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকার তেজগাঁও আসন থেকে ধানের শীষ প্রতীকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আবুল কাশেম। জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর বিচারপতি আব্দুস সাত্তারের নেতৃত্বাধীন সরকারেও যুবমন্ত্রী ছিলেন আবুল কাশেম। তখন কুখ্যাত সন্ত্রাসী ইমদাদুল হক ইমদুকে (পরে মৃত্যুদ- হয়) মন্ত্রী কাশেমের সরকারী বাড়ি থেকে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতারের পর পরই বিএনপির সাত্তার সরকারের পতন ঘটে। ১৯৮২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারির ওই ঘটনার কিছুদিন পরই দুর্নীতি নির্মূলের ঘোষণা দিয়ে তৎকালীন সেনাপ্রধান এইচএম এরশাদ রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেন। মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। এক পর্যায়ে নিজেকে রাজনীতি থেকে গুটিয়ে নেন।
×