ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

রেলস্টেশনে অবাঞ্ছিত প্রবেশ সম্পূর্ণ বন্ধ করা হবে

প্রকাশিত: ২৩:১১, ১৯ জুলাই ২০২০

রেলস্টেশনে অবাঞ্ছিত প্রবেশ সম্পূর্ণ বন্ধ করা হবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রেলস্টেশনে যাত্রী ব্যতীত টিকেট ছাড়া কোন অবাঞ্ছিত ব্যক্তির প্রবেশ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করা হবে বলে জানিয়েছেন রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। এজন্য সরকার দেশের বৃহত্তম ও গুরুত্বপূর্ণ এমন স্টেশন যেখানে প্রচুর যাত্রী সমাগম রয়েছে সেখানে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী। একই সঙ্গে আসন্ন ঈদ-উল-আজহায় কোন বাড়তি ট্রেন দেয়া হবে না। তাই বর্তমান নিয়মেই ট্রেন চলবে বলে জানিয়েছেন। শনিবার দেশের গুরুত্বপূর্ণ রেলস্টেশন হিসেবে ঢাকা বিমানবন্দর স্টেশন, জয়দেবপুর স্টেশন ও নরসিংদী স্টেশন পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের মন্ত্রী এসব কথা বলেন। এ সময় রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ সেলিম রেজা, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মোঃ শামছুজ্জামান, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) মিয়া জাহান, রেলপথমন্ত্রীর পিএস উপসচিব আতিকুর রহমান, রেলওয়ে পুলিশের সুপারিনটেনডেন্ট (এসপি) মোঃ সাইফুল্লাহ, রেলওয়ের প্রধান প্রকৌশলী (পূর্ব) ইঞ্জিনিয়ার সুবক্তি, রেল মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফুল আলম, ঢাকার বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (ডিসিও) সৈকত জামিল মোহসী, রেলওয়ের কমান্ড্যান্ট মিজানুর রহমানসহ রেলওয়ের উর্ধতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। রেলপথমন্ত্রী বলেন, দেশের প্রতিটি স্টেশনে রেল সংশ্লিষ্ট লোক ছাড়া বাইরের লোকের প্রবেশ বন্ধে আমরা কাজ করছি। পর্যায়ক্রমে দেশের প্রতিটি স্টেশনে বহিরাগত লোকের আসা-যাওয়া সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দেব। তবে প্রাথমিকভাবে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন কমলাপুরের মাধ্যমে এর কাজ শুরু করেছি। কমলাপুরে এখন যে কেউ ইচ্ছে করলেই প্রবেশ ও বের হতে পারে না। তবে সেখানে আরও কাজ চলছে। এছাড়া এয়ারপোর্ট স্টেশন, জয়দেবপুর রেলস্টেশন ও এর বাইরে নরসিংদী রেলস্টেশনের আশপাশের সকল রাস্তা বন্ধ করে একমুখী করা হবে। যেখানে একদিকে প্রবেশ ও একদিকে বের হবেন যাত্রীরা। ফলে রেলপথে ও প্ল্যাটফর্মে অবস্থান করা যাত্রী ব্যতীত কোন লোক দেখা যাবে না। মন্ত্রী বলেন,নানা সমস্যা থাকায় আমরা একযোগে সকল স্টেশনে এই কাজ শুরু করতে পারছি না। তবে যাত্রীর স্বস্তিদায়ক পরিস্থিতি তৈরি করতে আমরা প্রয়োজনীয় সব কিছুই করতে চাই। আমরা মূলত যাত্রীর স্বার্থ সুরক্ষা করে রেলের গতি ফেরাতে কাজ করছি। এরই অংশ হিসেবে আমরা দেশের বৃহত্তম স্টেশন হিসেবে সিলেট, রাজশাহী, খুলনা ও চট্টগ্রাম স্টেশনে বাইরের লোকজনের প্রবেশ বন্ধ করব। মন্ত্রী পরিদর্শনকালে এয়ারপোর্ট স্টেশনের দুপাশের রেললাইনে শক্তিশালী করে লোহার বেষ্টনী দিয়ে রাখার জন্য নির্দেশ দেন ও স্টেশনের সামনের ভবনের সৌন্দর্য বর্ধনের কথা বলেন। এছাড়া যে কোন যাত্রী যাতে বিমানবন্দর থেকে নেমে এয়ারপোর্টে যেতে পারেন ও এয়ারপোর্ট থেকে নেমেই যেন সহজেই বিমানবন্দর স্টেশনে প্রবেশ করতে পারেন সেজন্য দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেন। এছাড়া বিমানবন্দর রেল স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম সংস্কার কাজ ও স্টেশনের সীমানা নির্ধারণের নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করেন। সেখানে প্ল্যাটফর্মের উচ্চতা বৃদ্ধি করে যাত্রীর ওঠার সুবিধার জন্য সমন্বয় করে কাজ করতে প্রধান প্রকৌশলীকে (পূর্ব) নির্দেশ দেন মন্ত্রী। নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, টিকেট ছাড়া যাতে যাত্রীরা স্টেশনে প্রবেশ করতে না পারেন সেজন্য দেশের বড় স্টেশনগুলোতে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য দেয়াল ও লোহার বেষ্টনী দেয়া হবে। সেখান থেকে পরে মন্ত্রী গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর রেলওয়ে স্টেশন পরিদর্শনে যান। সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের মন্ত্রী বলেন, জয়দেবপুর থেকে ঈশ্বরদী ও জামালপুর পর্যন্ত ডবল লাইন হবে। এছাড়া ঢাকা থেকে টঙ্গী পর্যন্ত চতুর্থ লাইন এবং টঙ্গী থেকে জয়দেবপুর পর্যন্ত ডবল লাইনের কাজ চলছে। ডবল লাইনের কাজ শেষ হলে ঢাকার মধ্যে অধিক সংখ্যক ট্রেন চালানো যাবে। তখন কোন ট্রেন আর এসব এলাকায় থামিয়ে রাখতে হবে না। এর পর মন্ত্রী টঙ্গী রেল স্টেশন এবং নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশন পরিদর্শন করেন ও নানা নির্দেশনা প্রদান করেন। মন্ত্রী বলেন, জনগণের বাহন হিসেবে রেলপথকে এগিয়ে নিতে কাজ করছে সরকার। আমরা রেলওয়েতে ভ্রমণে আরও আগ্রহী করে তুলতে যাত্রীদের কল্যাণে সবকিছুই করব। এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, এ বছর ঈদে কোন বাড়তি ট্রেন পরিচালনা করব না। এজন্য বর্তমান নিয়মেই ট্রেন চলবে। তিনি করোনার বিস্তার রোধে এমন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানান। একই সঙ্গে নাগরিকগণকে নিজ এলাকায় ঈদ পালনের আহ্বান জানান।
×