ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কলাপাড়ায় ১৯ আয়রন ব্রিজ ঝুঁকিপূর্ণ

প্রকাশিত: ০১:৩৩, ৯ জুলাই ২০২০

কলাপাড়ায় ১৯ আয়রন ব্রিজ ঝুঁকিপূর্ণ

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, ৮ জুলাই ॥ কলাপাড়ায় ১৯টি আয়রন ব্রিজের চরম বেহাল অবস্থা। এর মধ্যে অন্তত তিনটি বিধ্বস্ত হয়েছে। হাজারো সাধারণ মানুষ এ কারণে চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন। অধিকাংশ ব্রিজের আয়রন স্ট্রাকচার থেকে শুরু সিমেন্টের স্লাব ভেঙ্গে গেছে। গাছ, তক্তা দিয়ে জোড়াতালি দিয়ে মানুষ চরম ঝুঁকি নিয়ে আয়রন ব্রিজগুলো এখনও ব্যবহার করছে। ফলে বড় ধরনের দুর্ঘটনার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। গ্রামীণ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে কলাপাড়ায় ১৯৯০ সাল থেকে আয়রন ব্রিজ নির্মাণ করা শুরু হয়। এরপর থেকে এসব ব্রিজগুলো স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করে আসছে। কিন্তু সড়কের ব্যাপক উন্নয়ন করায় এ ব্রিজগুলো দিয়ে বিভিন্ন ধরনের যাবাহন চলাচল শুরু হয়। ভেঙ্গে যেতে থাকে ব্রিজের স্লাবগুলো। এছাড়া নদী কিংবা খালের পানি লোনা থাকায় আয়রন স্ট্রাকচারগুলো জং ধরে নষ্ট হয়ে যায়। ব্রিজগুলো নাজুক হয়ে যায়। চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়ে। তারপরও কখনও উপজেলা পরিষদ, কখনও ইউনিয়ন পরিষদ স্লাবের বদলে কাঠের তক্তা কিংবা খেজুর গাছ পর্যন্ত দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এই ব্রিজগুলোতে চলাচল সচল রাখেন। তবে অবস্থা এমন হয় যে সবশেষ মধুখালী খালের ওপর আয়রন ব্রিজটি বিধ্বস্ত হয়ে একজন নিহত হন। আহত হয় আরও তিনজন। এরপরও ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজগুলো দিয়ে মানুষ চলাচল করছে। এলজিইডি কলাপাড়া সূত্রে জানা গেছে, কলাপাড়ায় মোট ৩২ ব্রিজের মধ্যে ১৯টি এখন খুব ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। মিঠাগঞ্জ-ডালবুগঞ্জ বাজার ব্রিজ, ধানখালীর কালু মিয়ার হাট আয়রন ব্রিজ, ধুলাসার ইউনিয়ন পরিষদ ভায়া মুসল্লিয়াবাদ নতুনপাড়া ব্রিজ, পক্ষিয়াপাড়া হাট ভায়া মিঠাগঞ্জ বাজার, চাপলী বাজার ভায়া নতুনপাড়া, গোড়াআমখোলাপাড়া ভায়া মম্বীপাড়া, পাটুয়া ফজলু হাওলাদারের বাড়ির সামনের ব্রিজ, ছোট বালিয়াতলী ভায়া বাংলাবাজার ব্রিজ, কালাচাঁনপাড়া ভায়া খাজুরা রোড ব্রিজ, মম্বিপাড়া রোড ব্রিজ, শনিবারিয়ার ব্রিজ, শরীফ বাড়ির ব্রিজ, কোডেক অফিস সংলগ্ন ব্রিজ, উত্তর-পূর্ব চালিতাবুনিয়া ব্রিজ, সলিমপুর-কুমিরমারা ব্রিজ, বানাতিবাজার ভায়া রহিমউদ্দিন ব্রিজ, চান্দুপাড়া বিশ^াস বাড়ির ব্রিজ, তুলাতলী পক্ষিয়াপাড়া ব্রিজ, বাইনবুনিয়া ব্রিজের চরম বেহাল দশা। এই ১৯টি আয়রন ব্রিজ এখন মানুষের যোগাযোগের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকির কারণ হয়ে গেছে। তবে এলজিইডির উপসহকারী প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন জানান, বর্তমানে পুরনো আয়রন ব্রিজের স্থলে সিসি গার্ডার ব্রিজ করা হচ্ছে। যা টেকসই। ইতোমধ্যে লালুয়ার বানাতিবাজার, আমতলী খালের ওপর, অনন্তপাড়া, কাটাভাড়ানি খালের ওপর গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া পাটুয়া হাটসহ বিভিন্ন স্পটে মোট নয়টি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণাধীন রয়েছে। যার কাজ শীঘ্রই শেষ হবে। আরও চারটি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণের জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। গ্রামীণ যোগাযোগের সকল ভোগান্তি লাঘবে পর্যায়ক্রমে সকল আয়রন ব্রিজের স্থলে গার্ডার ব্রিজ করা হচ্ছে। এমনকি নতুন নতুন যেসব জায়গায় ব্রিজ দরকার রয়েছে তাও গার্ডার ব্রিজ করা হচ্ছে।
×