ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

আট বছর পর হারিয়ে যাওয়া সুজন মায়ের কোলে

প্রকাশিত: ২২:১৫, ৫ জুলাই ২০২০

আট বছর পর হারিয়ে যাওয়া সুজন মায়ের কোলে

নিজস্ব সংবাদদাতা, আমতলী, বরগুনা, ৪ জুলাই ॥ ৮ বছর পরে মায়ের কোলে ফিরেছে হারানো ছেলে মাইদুল ইসলাম সুজন (১৮)। ছেলেকে ফিরে পেয়ে পরিবারে বইছে আনন্দের বন্যা। ঘটনা ঘটেছে উপজেলার টেপুড়া গ্রামে শুক্রবার রাতে। জানা গেছে, আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের টেপুড়া গ্রামের মুতিন মুন্সির কন্যা বিলকিস বেগমের সঙ্গে ১৯৯৭ সালে কলাপাড়া উপজেলার চম্পাপুর গ্রামের রুহুল আমিন খন্দকারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য স্বামী রুহুল আমিন বিলকিসকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করত। ইতোমধ্যে তাদের কোলে আসে ছেলে মাইদুল ইসলাম সুজন ও মেয়ে তামান্না। কিন্তু ছেলে-মেয়ে বাবা রুহুল আমিন খন্দকারের মন গলাতে পারেনি। বিয়ের সাত বছরের মাথায় বিলকিসের সঙ্গে তার সম্পর্কচ্ছেদ হয়। অসহায় বিলকিস ছেলে মাইদুল ইসলাম সুজন ও মেয়ে তামান্নাকে নিয়ে ঢাকায় চলে যান। ছেলে সুজনকে একটি হাফিজি মাদ্রাসায় ভর্তি করে দেন তিনি। পরে একটি গার্মেন্টসের কাজ নেয় বিলকিস। কষ্টে চলে তাদের দিনকাল। ২০১২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি তুরাগ থানার ভাড়া বাসা থেকে মোবাইলে লোড দিতে গিয়ে পথ হারিয়ে সদরঘাটে আসে সুজন। ওইখানে দেখা হয় পটুয়াখালীর মকবুুল হোসেন মাস্টারের সঙ্গে। তিনি মাইদুলকে তার বাসায় নিয়ে আসেন। মাস্টারের আদর সোহাগে ভুলে যান মা ও পরিবারের কথা। মা বিলকিস ছেলেকে খুঁজে তন্নতন্ন করেও কোন হদিস পায়নি। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে পাগলপ্রায় বিলকিস। পরে ওই বছর ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার তুরাগ থানায় তার মা বিলকিস বেগম সাধারণ ডায়েরি করেন। ছেলেকে হারিয়ে মা বিলকিস মেয়ে তামান্নাকে নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে আসেন। খেয়ে না খেয়ে কোন মতে বাবার বাড়িতে চলে তার জীবনকাল। এদিকে গত চার বছর আগে মকবুল মাস্টারের ছেলে মেহেদী হাসান সুজনকে পটুয়াখালী জজ কোর্টের সামনে তার প্রিয়জন ফটোস্ট্যাটের দোকানে কাজ দেয়। ওই দোকানে সুজন চার বছর ধরে কাজ করছে। এর মধ্যে পটুয়াখালীতে তার বেশ বন্ধু-বান্ধব জুটে যায়। ওই বন্ধুদের মধ্যে হাফেজ মোঃ মোস্তফা ও মাসুদের সঙ্গে বেশ ঘনিষ্ঠতা। তাদের কাছে সুজন সকল কিছু খুলে বলে। ওই দুই বন্ধু মিলে সুজনের পবিরারের সন্ধান করতে থাকে। বন্ধু মোস্তফা তার বড় ভাই অহিদুজ্জামানের সঙ্গে এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে। পরে অহিদুজ্জামান আমতলী উপজেলার কাঁঠালিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ আবু ছালেহ’র সঙ্গে যোগাযোগ করে।
×