ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কলাপাড়ার খাপড়াভাঙ্গা নদী দখল করে স্থাপনা

প্রকাশিত: ২৩:২৮, ২২ জুন ২০২০

কলাপাড়ার খাপড়াভাঙ্গা নদী দখল করে স্থাপনা

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, ২১ জুন ॥ কাগজপত্রে খাপড়াভাঙ্গা নদী বলা হলেও মানুষ চেনে শিববাড়িয়ার চ্যানেল হিসেবে। কুয়াকাটা সংলগ্ন গভীর সাগরবক্ষে মাছ শিকাররত জেলেদের দুর্যোগকালীন আশ্রয়স্থল। প্রতিনিয়ত সাগরবক্ষে মাছ শিকার শেষে হাজারো ফিশিং বোট এই নদীতে নিরাপদে আশ্রয় নেয়। করে ট্রলারের মাছ আনলোড। এটিকে স্থায়ীভাবে পোতাশ্রয় করার লক্ষে আন্ধার মানিক মোহনা থেকে সাগরের কাউয়ার চর মোহনা পর্যন্ত শিববাড়িয়া চ্যানেল খননের উদ্যোগ নয় বছরেও বাস্তবায়ন হয়নি। ভেস্তে যেতে বসেছে। উল্টো চ্যানেলটি দখল করে বিভিন্ন ধরনের স্থাপনা তোলাসহ ইটভাঁটির দখলে নেয়া হচ্ছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে নিয়ম-কানুনের কোন ভালাই নেই। ফলে একদিকে শিবাড়িয়ার চ্যানেলটি ভরাট ও দখল হয়ে যাচ্ছে। এবার আলীপুর অংশে শেখ রাসেল সেতুর নিচে নদীতীর দখল করে তোলা হচ্ছে পাকা স্থাপনা। ফলে দখল ভরাটের পাশাপাশি জেলেরা দুর্যোগকালীন আশ্রয়স্থল হারাচ্ছে। ২০১০-২০১১ অর্থবছরে শিববাড়িয়ার চ্যানেলটি পুনর্খননের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড কলাপাড়ার নির্বাহী অফিস থেকে একটি পিপি উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়। খাপড়াভাঙ্গা নদীটি কাগজপত্রে ১৭ কিমি দীর্ঘ হলেও আশাখালির অংশ নিয়ে ২৪ কিলোমিটার। চ্যানেলটি ভরাট হয়ে যাওয়ায় পুনরায় নাব্যতা সৃষ্টি, মহিপুর-আলীপুর মৎস্য বন্দরের জেলেদের লোডিং-আনলোডিংয়ের সুবিধাসহ চ্যানেলটির দুই পাড়ে বেড়িবাঁধের ভেতরের সংযোগ খালের স্লুইসখালে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ ঠিক রাখা এবং কৃষিকাজের স্বার্থে সরকারীভাবে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়। চ্যানেলটি খনন হলে দুর্যোগকালীন জেলেরা দ্রুত নিরাপদ আশ্রয় নেয়ার সুযোগ পেত। চ্যানেলটি পুনর্খননের প্রকল্প তৈরি করে প্রায় ৬৭ কোটি ব্যয়-বরাদ্দের প্রস্তাব দেয়া হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ড কলাপাড়া নির্বাহী প্রকৌশল অফিস সূত্রে তৎকালীন সময়ে এসব তথ্য জানা গেছে। প্রয়োজনীয় বরাদ্দ পাওয়া গেলে এই খনন কাজ শুরুর কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু ওই প্রকল্প আর আলোর মুখ দেখেনি। সাগর মোহনার রামনাবাদ পয়েন্ট থেকে কাউয়ারচর আশাখালী পয়েন্ট পর্যন্ত শিববাড়িয়া চ্যানেলটি অবস্থিত। দীর্ঘ এই চ্যানেলটির দুই দিক দিয়ে জেলেরা সাগরে মাছ শিকারে যাওয়া আসা করছে। কিন্তু চ্যানেলটির আন্ধার মানিক এবং আশাখালী প্রবেশদ্বারসহ ৯০ শতাংশ ভরাট হয়ে গেছে। ফলে জোয়ারের সময় জেলেরা কিছুটা নিরাপদে চলাচল করতে পারছে। উত্তাল সাগরে ঝড়-জলোচ্ছ্বাস সৃষ্টি হলে দ্রুত নিরাপদে আশ্রয় নেয়ার জন্য এই চ্যানেলটি ছাড়া আর কোন পথ নেই। কিন্তু দুই দিকের সাগর মোহনা থেকে দীর্ঘ চ্যানেলটি পলিতে ভরাট হয়ে যাওয়ায় ট্রলারসহ বিভিন্ন ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধের আশঙ্কা হয়েছে। চ্যানেলটি দুদিকে লতাচাপলী, মহিপুর, ডালবুগঞ্জ, ধুলাসার ইউনিয়ন অবস্থিত।
×