ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

করোনা বিবেচনায় স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বাড়ানো উচিত বলে মনে করে সংগঠনটি

উচ্চ প্রবৃদ্ধির বাজেটকে আশাব্যঞ্জক দেখছে ডিসিসিআই

প্রকাশিত: ২২:১৮, ১২ জুন ২০২০

উচ্চ প্রবৃদ্ধির বাজেটকে আশাব্যঞ্জক দেখছে ডিসিসিআই

স্টাফ রিপোর্টার ॥ উচ্চ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ঘোষিত বাজেট আশাব্যঞ্জক হিসেবে দেখছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। তবে বর্তমান প্রেক্ষিতে করোনাভাইরাস বিবেচনায় স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ আরও বৃদ্ধি করা উচিত বলে মনে করছেন সংগঠনটি। তবে বাজেটে বিনিয়োগ বাড়ানো ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে ডিসিসিআই। প্রতিক্রিয়ায় ডিসিসিআই জানায় , স্বাস্থ্য খাতের অবকাঠামো উন্নয়নে ১০ হাজার ৫৪ কোটি টাকা এডিপি বরাদ্দ করা হয়েছে। ডিসিসিআই মনে করে, এ খাতে বরাদ্দ আরও বৃদ্ধি করা উচিত এবং স্বাস্থ্য খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে এডিপি দ্রুত বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন। এছাড়া পদ্মা সেতু, এমআরটি, মাতারবাড়ি এলএনজি টার্মিনাল ও বে-টার্মিনালসহ ১০টি ফার্স্ট ট্র্যাক প্রকল্পের মধ্যে যা অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও জনসাধারণের জীবনযাত্রার সঙ্গে সরাসরি সংশ্লিষ্ট, সেসব প্রকল্প অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করার অনুরোধ জানায়। পাশাপাশি, অন্য বৃহৎ প্রকল্পগুলো ভবিষ্যতে যেন অল্প সময়ে ও কম খরচে দ্রুত বাস্তবায়ন করা যায় তার জন্য রূপরেখা প্রণয়ন করার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষকে আহ্বান করে। স্বাস্থ্য খাত নিয়ে আরও বলা হয় , করোনার মতো মহামারী রোধি অবকাঠামো নির্মাণ ও প্রয়োজনীয় মানবসম্পদের নিয়োগ প্রদান জরুরী। এছাড়া ভবিষ্যত মহামারী এবং জনস্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতনতা তৈরিতে প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দ রাখা অত্যন্ত জরুরী। তাছাড়া, টেলিমেডিসিনকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়ে সহজে চিকিৎসাসেবা প্রদানকে উৎসাহিত করতে প্রয়োজনীয় নীতি সহায়তা দেয়া প্রয়োজন। এছাড়া, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ধারাবাহিকভাবে স্বাস্থ্যবীমা চালু করা এবং বেসরকারী হাসপাতালের চিকিৎসাসেবাকে যথাযথ মনিটরিং এর আওতায় নিয়ে আসা প্রয়োজন। ডিসিসিআই জানিয়েছে, মোট আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকা। যার মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা যা বিগত বছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ৯.৮২% বেশি। তাই এই অতিরিক্ত রাজস্ব আহরণের জন্য করের আওতায় বাড়ানো, অনাদায়ী কর আদায় ও মফস্বল শহরে রাজস্ব আদায় বাড়াতে রাজস্ব বোর্ডের মাঠপর্যায়ে জনবল বাড়ানো প্রয়োজন। বেসরকারী বিনিয়োগের ধারা অব্যাহত রাখতে বিদ্যমান করদাতাদের ওপর নতুন করে করবোঝা আরোপ না করে রাজস্ব আয় বাড়াতে হবে। এছাড়া, রাজস্ব বোর্ড বহির্ভূত রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা বৃদ্ধি পেলেও বিগত অর্থবছরের তুলনায় করবহির্ভূত রাজস্বের পরিমাণ হ্রাস পেয়েছে ৫.৭২%। নতুন বাজেটে ঘাটতির (অনুদানসহ) পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা যা মোট জিডিপির ৬%। প্রতিবছর ঘাটতি বাজেট ৫% ধরা হলে এর কমই বাস্তবায়ন হয়। তাই অর্থনৈতিক মন্দা মোকাবেলায় এই ঘাটতি সহনশীল ও জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণে ব্যয় হতে পারে। ডিসিসিআই জানায়, সরকার এবারের বাজেটে আমাদের প্রস্তাব অনুযায়ী সর্বনিম্ন কর হার ৫% নির্ধারণ করেছে, যা সত্যি সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য। করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানো এবং সর্বোচ্চ কর হার ২৫% নির্ধারণ করার কারণে করদাতাদের ওপর করবোঝা কিছুটা হলেও লাঘব হবে বলে আশা করি। অর্থনৈতিক কর্মকান্ড পুনরুজ্জীবিত করতে সরকার এ অর্থবছরে কর্পোরেট ট্যাক্স হার হ্রাস করেছে যা প্রশংসার দাবিদার। জরিমানাবিহীন ভ্যাট ও ট্যাক্স প্রদানের সময়সীমা বৃদ্ধি করার জন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানান। ডিসিসিআই জানায়, যেহেতু বাজেটের ঘাটতি ব্যয় মেটাতে আর্থিক খাতের ওপর নির্ভরতা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং অর্থনীতিতে করোনা ঝুঁকি মোকাবেলায় ব্যাংকিং খাত ব্যাপকভাবে জড়িত তাই বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ, গবেষক ও সাবেক বিশিষ্ট ব্যাংকারদের নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সমন্বয়ে একটি শক্তিশালী আর্থিক খাত পরামর্শক কমিটি গঠন করার প্রস্তাব করছি যা করোনা দুর্যোগের সময়ে আর্থিক খাত সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য দিকনির্দেশনা প্রদান করবে। প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় ঋণপ্রদান প্রক্রিয়া সহজীকরণ ও খেলাপী ঋণ আদায়ে উদ্যোগ গ্রহণ করে বেসরকারী খাতে ঋণ প্রবাহ বৃদ্ধির জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার অনুরোধ জানান। পাশাপাশি ব্যাংকিং খাত ব্যতীত বিকল্প অর্থ সংস্থানের জন্য শক্তিশালী পুঁজি বাজার ও বন্ড মার্কেট গঠনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ ও বিদেশী দাতা সংস্থার নিকট থেকে সহজ শর্তে ঋণ নেয়ার আহ্বান জানান।
×